
বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলায় যৌতুকের বকেয়া টাকা না পাওয়ায় মর্জিয়া খাতুন রূপালী (২০) নামে এক গৃহবধূর মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছেন মুর্শেদুল বারী (২৫) নামে এক যুবক। বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার ইউসুবপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে মুর্শেদুল বারীকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, নাটোরের সিংড়া উপজেলার পাঁচপাকিয়া গ্রামের নিজাম উদ্দিনের মেয়ে মার্জিয়া খাতুন রূপালীর সঙ্গে ১০ মাস আগে নন্দীগ্রাম উপজেলার মোশারফ হোসেনের ছেলে মুর্শেদুল বারীর বিয়ে হয়। বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করার সময় মুর্শেদুল বারীকে দুই লাখ টাকা যৌতুক দেয়ার কথা হয়েছিল। পরে বিয়ের সময় দেড় লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। বাকি ৫০ হাজার টাকা বিয়ের পরে দেয়ার কথা ছিল। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে মুর্শেদুল বারী যৌতুকের ওই টাকার জন্য মর্জিয়া খাতুনকে চাপ দিতে থাকেন। মর্জিয়ার বাবা একজন ক্ষুদ্র কৃষক, তাই টাকা দিতে পারছিলেন না। এ নিয়ে বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই ছিল।
এদিকে বুধবার দুপুরে রুপালীর হাত থেকে হরলিক্সের বয়াম পড়ে ভেঙে যায়। রাতে মুর্শেদুল বাড়ি ফিরে এ ঘটনা শুনে বৃহস্পতিবার দুপুরে স্ত্রীকে মারধর করেন এবং বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা আনতে বলেন। এক পর্যায়ে রুপালীর মাথা ন্যাড়া করে দেন। পরে রুপালী মোবাইল ফোনে ঘটনাটি তার বাবা-মাকে জানান। খবর পেয়ে রূপালীর বাবা-মা ছুটে এসে শুক্রবার সকালে স্থানীয়দের সহায়তায় মেয়েকে উদ্ধার করেন। মর্জিয়ার মা মঞ্জুয়ারা বেগম জানান, বিয়ের সময় নগদ দেড় লাখ টাকা যৌতুক দেয়া হয়। এখন তারা আরো দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। তিনি বলেন, আমার মেয়ে রুপালীকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে বলেন। টাকা এনে দিতে না পারায় তাকে স্বামী ও শাশুড়ি মিলে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন।
এ ঘটনায় রুপালীর মা নন্দীগ্রাম থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ গিয়ে মুর্শেদুলকে আটক করেছে।নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শওকত কবীর জানান, মুর্শেদুলকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন নির্যাতিতার মা মঞ্জুয়ারা খাতুন।