
ফেরি ছাড়া বরগুনা জেলা শহরে প্রবেশের একমাত্র সুগম পথ হলো বাকেরগঞ্জ-বরগুনা আঞ্চলিক মহাসড়ক। বিগত কয়েক বছর ধরে এই রুটে নিয়মিত ঢাকা-বরগুনার বাস চলাচল করে আসছিলো।
বর্তমানে ঢাকার কোন বাস বরগুনায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে বাস মালিক সমিতির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। পুরো মাসব্যাপী চলতে থাকা রূপাতলী-বাকেরগঞ্জ রুটে কোন বাস না চলায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বরগুনার যাত্রীরা।
অভিযোগ রয়েছে, রূপাতলী, বাকেরগঞ্জ, পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতি সিন্ডিকেট করে রুট পারমিটের অজুহাত তুলে বাকেরগঞ্জ-বরগুনা রুটে বাস প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। পুরো আগস্ট মাস ধরে এমনটা চলেছে। এর মধ্যে প্রবেশ করতে গিয়ে লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন বাসচালকরা। সবমিলিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বরগুনার বাসযাত্রীরা।
বরগুনার মানুষের স্বপ্ন ছিল পদ্মা সেতু চালু হলে মাত্র পাঁচ ঘণ্টায় ঢাকা থেকে যাত্রীরা বরগুনা আসবে। কিন্তু সিন্ডিকেটের করনে সে স্বপ্ন গুড়িয়ে দিয়েছে রূপাতলী বাস মালিক সমিতি। এমনটাই জানালেন বাস চালক ও যাত্রীরা।
যাত্রী ও চালকরা আরও জানান, বাকেরগঞ্জ পয়েন্টে লোকজন দিয়ে প্রতিদিন বাস মালিক সমিতি ঢাকা থেকে ছাড়া বরগুনাগামী বাসগুলোকে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। তাই বাধ্য হয়ে যাত্রী নিয়ে পটুয়াখালী- আমতলী রুটে আমতলী ফেরি পাড় হয়ে বরগুনায় প্রবেশ করতে হচ্ছে।
অতিরিক্ত পথ ঘুরে আসায় যাত্রীদের ভাড়া যেমন বেশি গুণতে হচ্ছে তেমনি ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা বেশি সময়ও লেগে যাচ্ছে। এতে করে বিপাকে পড়ছেন যাত্রীরা। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় দুর্ভোগ আরো কয়েকগুণ বেড়ে যায়। সময় কিছুটা বাঁচানোর জন্য ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের কখনো কখনো খেয়ায় উত্তাল পায়রা নদী পাড়ি দিতে হচ্ছে।
ওমর ফারুক নামে এক বাস যাত্রী বলেন, ছোট বাচ্চা নিয়ে ঢাকা থেকে বাসে বরগুনা এসেছি। সড়কপথে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকলেও আমতলী ফেরি পার হয়ে বরগুনা আসতে হয়েছে। এতে সময় লেগেছে দশ ঘণ্টারও বেশি। অথচ কয়েকদিন আগে মাত্র পাঁচ ঘণ্টায় পৌঁছেছি। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর পরও আমাদের দুর্ভোগ কমেনি। আগের মতই আছে।
আরেক যাত্রী আমিনুর রহমান বলেন, যাত্রীবাহী বাসগুলোকে ফেরি পার হয়ে বরগুনা থেকে ঢাকা এবং ঢাকা থেকে বরগুনায় যাওয়া-আসা করতে হচ্ছে। এতে করে দশ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু হলেও এর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছি আমরা। তাই এ থেকে প্রতিকারের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে বরিশাল বাস মালিক শ্রমিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অপর দিকে বরগুনা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ছগির হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না বলে জানান।
তবে এ ব্যাপারে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি বাস মালিক ও বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে সরেজমিনে বিষয়টি তদন্ত করছেন। অচিরেই এই সংকটের সমাধান হবে এবং ঢাকা- বরগুনা রুটে চলাচলের ক্ষেত্রে স্বস্তি ফিরে আসবে বলে আশাবাদী তিনি।