বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুলিশের চাকরি পাচ্ছেন ভূমিহীন সেই মীম

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:৪৮:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১
  • ১২৭ Time View

খুলনা প্রতিনিধি: সকল যোগ্যতা থাকার পরও শুধুমাত্র জমি না থাকায় পুলিশে চাকুরি পাননি খুলনার মিম আক্তার। গণমাধ্যমে এ নিয়ে খবর প্রকাশের পর দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। তবে অবশেষে বিষয়টি নিয়ে টনক নড়েছে পুলিশ হেড কোয়ার্টারের।

শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কনস্টেবল পদে প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়ার জন্য মিম আক্তারকে নোটিশপত্র দেওয়া হয়েছে। খুলনা টেক্সটাইল মিল পুলিশ ফাঁড়িতে মিম ও তার বাবার হাতে এ নোটিশপত্র তুলে দেন পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিকাইল।

মিম আক্তার নোটিশপত্র পেয়ে খুবই আপ্লুত হয়েছেন। তিনি জানান, পুলিশের চাকরিটা পেয়ে আমার ভালো লাগছে। গরিবের কষ্টটা কেমন আমি বুঝেছি। পুলিশের দায়িত্ব পালনকালে যদি কখনও অসহায় মানুষ সামনে আসে তবে তাদের প্রতি আমার অবশ্যই সহমর্মিতা থাকবে।

মিমের বাবা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতায় সবার মুখে মুখে আলোচনা হওয়ার পর মিম চাকরিটা পেয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যার পর টেক্সটাইল মিল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মিকাইল আমাকে ও মিমকে ডেকে পুলিশ ট্রেনিংয়ে অংশ নেওয়ার নোটিশ দিয়েছেন। খুলনার জেলা প্রশাসক স্যার ঘর করে দেবেন বলে জানিয়েছেন।

খুলনা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর আহম্মেদ জানান, পুলিশ ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে সাধারণ নারী কোটায় মেধা তালিকায় প্রথম হয় মিম আক্তার। তবে পুলিশ ভেরিফিকেশনে স্থায়ী ঠিকানা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। আমরা ঘটনাটি পুলিশ হেড কোয়ার্টারে জানাই। অবশেষে পুলিশ হেড কোয়ার্টারের নির্দেশনায় মিমের আবেদন আমরা গ্রহণ করি। মিমকে ট্রেনিংয়ের জন্য ডাকা হয়েছে। ট্রেনিং শেষে মিম চূড়ান্ত নিয়োগপত্র পাবেন।

স্থায়ী ঠিকানার সমস্যা সমাধান প্রসঙ্গে তিনি কোনো কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, এটা পুলিশ হেড কোয়ার্টার থেকে জানতে হবে। আমরা কেবলমাত্র নির্দেশনা পালন করেছি।

উল্লেখ্য, ট্রেইনি কনস্টেবল পদে সাধারণ নারী কোটায় মেধা তালিকায় প্রথম হওয়ার পরও ১১ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে খুলনা পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে মিমকে জানিয়ে দেওয়া হয় পুলিশ ভেরিফিকেশনে স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় তাকে চাকুরিটি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমন খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়ে মিমের ভূমিহীন পরিবার।

মিম আক্তার খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার ৩ নম্বর আবাসিক এলাকার ১ নম্বর রোডে ডাক্তার বাবর আলীর বাড়ীর ভাড়াটিয়া বাসিন্দা। বাবা মো. রবিউল ইসলাম খুলনার বয়রা ক্রস রোডে ছোট একটি দোকান ভাড়া নিয়ে লেপতোশকের ব্যবসা করেন। দোকানটির নাম বেডিং হাউজ। মিমের বাবার খুলনা জেলায় স্হায়ী ঠিকানা হিসেবে জমি নেই দেখে পুলিশ কনস্টেবল পদে মিমের চাকরির বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Md Zannatul Ferdoush Jewel

Online News Portal
Popular Post

গাইবান্ধায় বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ইউপি সদস্য খুন

পুলিশের চাকরি পাচ্ছেন ভূমিহীন সেই মীম

Update Time : ০২:৪৮:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১

খুলনা প্রতিনিধি: সকল যোগ্যতা থাকার পরও শুধুমাত্র জমি না থাকায় পুলিশে চাকুরি পাননি খুলনার মিম আক্তার। গণমাধ্যমে এ নিয়ে খবর প্রকাশের পর দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। তবে অবশেষে বিষয়টি নিয়ে টনক নড়েছে পুলিশ হেড কোয়ার্টারের।

শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কনস্টেবল পদে প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়ার জন্য মিম আক্তারকে নোটিশপত্র দেওয়া হয়েছে। খুলনা টেক্সটাইল মিল পুলিশ ফাঁড়িতে মিম ও তার বাবার হাতে এ নোটিশপত্র তুলে দেন পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিকাইল।

মিম আক্তার নোটিশপত্র পেয়ে খুবই আপ্লুত হয়েছেন। তিনি জানান, পুলিশের চাকরিটা পেয়ে আমার ভালো লাগছে। গরিবের কষ্টটা কেমন আমি বুঝেছি। পুলিশের দায়িত্ব পালনকালে যদি কখনও অসহায় মানুষ সামনে আসে তবে তাদের প্রতি আমার অবশ্যই সহমর্মিতা থাকবে।

মিমের বাবা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতায় সবার মুখে মুখে আলোচনা হওয়ার পর মিম চাকরিটা পেয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যার পর টেক্সটাইল মিল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মিকাইল আমাকে ও মিমকে ডেকে পুলিশ ট্রেনিংয়ে অংশ নেওয়ার নোটিশ দিয়েছেন। খুলনার জেলা প্রশাসক স্যার ঘর করে দেবেন বলে জানিয়েছেন।

খুলনা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর আহম্মেদ জানান, পুলিশ ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে সাধারণ নারী কোটায় মেধা তালিকায় প্রথম হয় মিম আক্তার। তবে পুলিশ ভেরিফিকেশনে স্থায়ী ঠিকানা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। আমরা ঘটনাটি পুলিশ হেড কোয়ার্টারে জানাই। অবশেষে পুলিশ হেড কোয়ার্টারের নির্দেশনায় মিমের আবেদন আমরা গ্রহণ করি। মিমকে ট্রেনিংয়ের জন্য ডাকা হয়েছে। ট্রেনিং শেষে মিম চূড়ান্ত নিয়োগপত্র পাবেন।

স্থায়ী ঠিকানার সমস্যা সমাধান প্রসঙ্গে তিনি কোনো কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, এটা পুলিশ হেড কোয়ার্টার থেকে জানতে হবে। আমরা কেবলমাত্র নির্দেশনা পালন করেছি।

উল্লেখ্য, ট্রেইনি কনস্টেবল পদে সাধারণ নারী কোটায় মেধা তালিকায় প্রথম হওয়ার পরও ১১ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে খুলনা পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে মিমকে জানিয়ে দেওয়া হয় পুলিশ ভেরিফিকেশনে স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় তাকে চাকুরিটি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমন খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়ে মিমের ভূমিহীন পরিবার।

মিম আক্তার খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার ৩ নম্বর আবাসিক এলাকার ১ নম্বর রোডে ডাক্তার বাবর আলীর বাড়ীর ভাড়াটিয়া বাসিন্দা। বাবা মো. রবিউল ইসলাম খুলনার বয়রা ক্রস রোডে ছোট একটি দোকান ভাড়া নিয়ে লেপতোশকের ব্যবসা করেন। দোকানটির নাম বেডিং হাউজ। মিমের বাবার খুলনা জেলায় স্হায়ী ঠিকানা হিসেবে জমি নেই দেখে পুলিশ কনস্টেবল পদে মিমের চাকরির বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে যায়।