
বরিশাল প্রতিনিধি : বরগুনায় আলোচিত শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির তারিখ পিছিয়ে ১ জানুয়ারি নির্ধারণ করেছেন আদালত। বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে দুই আসামির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ভুবন চন্দ্র হাওলাদার বলেন, মামলাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় আমি সময়ের আবেদন করি।অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ যাতে না হয় সেজন্য আদালতে আবেদন করেন। পরে আদালত অভিযোগ গঠনের জন্য আগামী ১ জানুয়ারি দিন ঠিক করেন। এদিন এ মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে আট আসামিকে বরগুনা কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। তারা হলো- রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, কামরুল ইসলাম সাইমুন, মো. হাসান, মোহাইমিনুল সিফাত, আল কাইয়ূম রাব্বি আকন, রেজোয়ান আলী খান ওরফে টিকটক হৃদয়, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর । আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি তার বাবার মোটরসাইকেলে চড়ে আদালতে উপস্থিত হন। এছাড়া আসামি মুছা পলাতক রয়েছে।
আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা চার্জ থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন আদালতে। অন্যদিকে আসামি মোহাইমিনুল সিফাত ও সাগরের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। আদালত তাদের আবেদন নামঞ্জুর করেন। পরে আসামি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম ও কমল কান্তি দাস বলেন, মিন্নি তার স্বামী রিফাত শরীফকে সেদিন বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। মিন্নি ছিল প্রথমে সাক্ষী। সাক্ষী থাকলেই মিন্নি আদালতে সব ঘটনার বর্ণনা করতে পারত। এই হত্যার সঙ্গে মিন্নি আদৌ জড়িত নয়। এদিন আদালত প্রাঙ্গণে রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বলেন, একমাত্র ছেলে খুন হওয়ার পর কোনো কিছু ভালো লাগে না। সারাদিন রিফাতের মা কান্নাকাটি করে। সকালে রিফাতের মা আমাকে বলে, বেশি দিন বাঁচব না। ছেলের বিচার দেখে মরতে চাই। তিনি আরও বলেন, মনে করেছিলাম আজ অভিযোগ গঠন হবে। তাও হল না।
এ বছরের ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজ গেটের সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে প্রথমে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে সন্ত্রাসীরা। এরপর তাক বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজে নেয়ার পর সেখানেই মারা যান। এ ঘটনায় ২৭ জুন রিফাতের বাবা বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়। গ্রেফতার ১৫ আসামির সবাই এ হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা ১ সেপ্টেম্বর দুই খণ্ডে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। শিশু আদালতে অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিচারের জন্য এবং প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিচারের জন্য দায়রা জজ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের অভিযোগ গঠনের তারিখ আগামী ৮ জানুয়ারি নির্ধারিত রয়েছে।