
সিলেট প্রতিনিধি: জেলার শ্রীমঙ্গলে প্রায় চার দশক ধরে অবৈধ দখলে রয়েছে রেলের শত কোটি টাকার জমি। এ নিয়ে কয়েক দফা লোক দেখানো উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও উদ্ধার করা যায়নি এক ছটাক জমি।
রেলওয়ে বিভাগীয় এস্টেট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন শ্রীমঙ্গল স্টেশন এলাকার ভানুগাছ রোডের পূর্বপাশ সংলগ্ন রূপশপুর মৌজায় জেএল নং-৬৭, খতিয়ান নং-৩, এসএ দাগ-১৭৬১-এ ২৮৭ শতক জমি রয়েছে।
জানা গেছে, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের একাংশের নাম ভাঙিয়ে এক শ্রেণির দখলদার শহরের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকায় ‘কৃষি নার্সারি প্রকল্প’র নামে ১৩৫ শতক মূল্যবান জমি দখলে নিয়ে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে।
এসব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েকশ’ দোকান ঘর বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। রেল সূত্র মতে, মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান, আসলামসহ ৩০ জনের একটি দখলদার চক্র রেলের এই বিপুল পরিমাণ জমি অবৈধ দখলে নেয়।
‘কৃষি নার্সারি প্রকল্প’র নামে দখল করা রেলের এই জমির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৩৬ কোটি টাকা বলে জানা গেছে।
এছাড়া শহরের শতাধিক প্রভাবশালী একই দাগের ১৫২ শতক জমি দখলে নিয়ে গড়ে তুলেছে অভিজাত হোটেল-রেস্তোরাঁ, ফার্নিচার শোরুম, অফিস, চা-পাতার দোকান, সেলুন, হার্ডওয়ার স্টোর, এলপিজি গোডাউনসহ শতাধিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।
সূত্র মতে এই ১৫২ শতক ভূমির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৬৫ কোটি টাকা। রেল বিভাগের এসব জমি ৩৮ বছর ধরে দখলে নিয়ে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা বাণিজ্য করলেও সরকার বছরে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
দখলদাররা এসব জমিতে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে দোকান মার্কেট গড়ে ব্যবসা পরিচালনা করলেও বাইর থেকে বোঝার উপায় নেই এই জমি রেল বিভাগের দখল করা জমি।
ক্রয় সূত্রে রেলের জমির মালিকানা দাবি করে ‘কৃষি নার্সারি প্রকল্প’র অন্যতম দখলদার মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান জানান, তিনি চা বাগানের এক শ্রমিকের কাছ থেকে রেলের জমি ক্রয় করে ভোগদখল করছেন। তিনি এ নিয়ে রেল বিভাগের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার আদালতে স্বত্বমামলাও করেছেন জানান তিনি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ২৭ নভেম্বর উচ্ছেদ অভিযানের কথা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ রেলের বিভাগীয় এস্টেট অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, উচ্ছেদ অভিযানের প্রোগ্রাম ঠিক করা হয়েছে। সব ঠিক থাকলে যতটুকু করা যায় উচ্ছেদ করা হবে।