রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুটি বিদেশী সিগারেট কোম্পানি আইন ভঙ্গে বেপরোয়া

দেশে দুটি বিদেশী সিগারেট কোম্পানি আইন ভঙ্গে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারের ধারাবাহিক উদ্যোগ সত্ত্বেও  তাদের মূল উদ্দেশ্য দেশের তরুণ প্রজন্মকে ধূমপানে আকৃষ্ট করা। এজন্য চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনা বিভাগস্থ ৮টি জেলা শহরে বিদেশী দুইটি তামাক কোম্পানির সরাসরি মদদ ও অর্থায়নে বিভিন্ন রেস্টেুরেন্টে ধূমপানের স্থান গড়ে তোলা হয়েছে। বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটভুক্ত ৪৫টি স্থানীয় সংগঠনের মাধ্যমে দেশের ৮টি বিভাগের ৪৫টি জেলায় চালানো জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত ‘আইন ভাঙ্গার শীর্ষে দুটি বিদেশী সিগারেট কোম্পানি’ শীর্ষক একটি সংবাদ সম্মেলনের এ তথ্য তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী হেলাল আহমেদ এর সভাপতিত্বে এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্যর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে মূলপত্র পাঠ করেন গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটির নির্বাহী পরিচালক এ কে এম মাকসুদ। সংবাদ সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী।

জরিপে উল্লেখ করা হয়, ৪৫ টি জেলায় পরিচালিত জরিপে ৯৪৪টি স্থানের সর্বমোট ৮ হাজার ১৯টি বিক্রয়কেন্দ্র থেকে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা কার্যক্রমের তথ্য পাওয়া গেছে। উক্ত জরিপে প্রায় সাড়ে ৩২ হাজার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের চিত্র চিহ্নিত হয়েছে। তথ্য সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে মোট ৪টি সিগারেট কোম্পানির বিজ্ঞাপন পাওয়া গেছে। কিন্তু সব স্থান থেকে প্রাপ্ত তথ্যে আইন লঙ্ঘনে দুটি বিদেশি সিগারেট কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (৯৬%) এবং জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনালের (৮৭%) সর্বাধিক সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।

এছাড়া আবুল খায়ের টোব্যাকো এবং আকিজ টোব্যাকো কোম্পানির বিজ্ঞাপনের তথ্য পাওয়া গেছে যথাক্রমে ২২% ও ৪৬% স্থানে। তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রদেয় বিজ্ঞাপনের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ জুড়ে আছে মূল্য তালিকা সম্বলিত স্টিকার এবং খালি সিগারেট প্যাকেট দিয়ে তৈরি করা ডামি। আইন বাস্তবায়নকারী সংস্থার সহযোগীতায় আইন লঙ্ঘনকারী দোকানদারদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করা হলেও কোম্পানিগুলো তাদেরকে আর্থিক প্রণোদনা দিচ্ছে।

এছাড়া, আইনে নিষিদ্ধ থাকলেও দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ স্থানেই ১৮ বছরের কম বয়সী শিশু-কিশোরদেরকে অবাধে ফেরি করে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় করতে দেখা গেছে। এমনকি ক্রেতা-বিক্রেতাদেরকে উৎসাহিত করার জন্য কোম্পানির থেকে নানা ধরণের উপহার সামগ্রী প্রদানেরও প্রমাণ মিলেছে।

উল্লেখ্য, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের তামাক নিয়ন্ত্রণ নির্দেশিকা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০০ মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ। কিন্তু জরিপে তৎসংলগ্ন স্থানে তামাকজাত দ্রব্যের অবাধ বিক্রয় ও বিজ্ঞাপন প্রচার লক্ষ্য করা গেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Md Zannatul Ferdoush Jewel

Online News Portal

এবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক পাচ্ছেন ২ ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠান

দুটি বিদেশী সিগারেট কোম্পানি আইন ভঙ্গে বেপরোয়া

Update Time : ১০:২৮:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩

দেশে দুটি বিদেশী সিগারেট কোম্পানি আইন ভঙ্গে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারের ধারাবাহিক উদ্যোগ সত্ত্বেও  তাদের মূল উদ্দেশ্য দেশের তরুণ প্রজন্মকে ধূমপানে আকৃষ্ট করা। এজন্য চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনা বিভাগস্থ ৮টি জেলা শহরে বিদেশী দুইটি তামাক কোম্পানির সরাসরি মদদ ও অর্থায়নে বিভিন্ন রেস্টেুরেন্টে ধূমপানের স্থান গড়ে তোলা হয়েছে। বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটভুক্ত ৪৫টি স্থানীয় সংগঠনের মাধ্যমে দেশের ৮টি বিভাগের ৪৫টি জেলায় চালানো জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত ‘আইন ভাঙ্গার শীর্ষে দুটি বিদেশী সিগারেট কোম্পানি’ শীর্ষক একটি সংবাদ সম্মেলনের এ তথ্য তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী হেলাল আহমেদ এর সভাপতিত্বে এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্যর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে মূলপত্র পাঠ করেন গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটির নির্বাহী পরিচালক এ কে এম মাকসুদ। সংবাদ সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী।

জরিপে উল্লেখ করা হয়, ৪৫ টি জেলায় পরিচালিত জরিপে ৯৪৪টি স্থানের সর্বমোট ৮ হাজার ১৯টি বিক্রয়কেন্দ্র থেকে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা কার্যক্রমের তথ্য পাওয়া গেছে। উক্ত জরিপে প্রায় সাড়ে ৩২ হাজার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের চিত্র চিহ্নিত হয়েছে। তথ্য সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে মোট ৪টি সিগারেট কোম্পানির বিজ্ঞাপন পাওয়া গেছে। কিন্তু সব স্থান থেকে প্রাপ্ত তথ্যে আইন লঙ্ঘনে দুটি বিদেশি সিগারেট কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (৯৬%) এবং জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনালের (৮৭%) সর্বাধিক সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।

এছাড়া আবুল খায়ের টোব্যাকো এবং আকিজ টোব্যাকো কোম্পানির বিজ্ঞাপনের তথ্য পাওয়া গেছে যথাক্রমে ২২% ও ৪৬% স্থানে। তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রদেয় বিজ্ঞাপনের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ জুড়ে আছে মূল্য তালিকা সম্বলিত স্টিকার এবং খালি সিগারেট প্যাকেট দিয়ে তৈরি করা ডামি। আইন বাস্তবায়নকারী সংস্থার সহযোগীতায় আইন লঙ্ঘনকারী দোকানদারদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করা হলেও কোম্পানিগুলো তাদেরকে আর্থিক প্রণোদনা দিচ্ছে।

এছাড়া, আইনে নিষিদ্ধ থাকলেও দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ স্থানেই ১৮ বছরের কম বয়সী শিশু-কিশোরদেরকে অবাধে ফেরি করে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় করতে দেখা গেছে। এমনকি ক্রেতা-বিক্রেতাদেরকে উৎসাহিত করার জন্য কোম্পানির থেকে নানা ধরণের উপহার সামগ্রী প্রদানেরও প্রমাণ মিলেছে।

উল্লেখ্য, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের তামাক নিয়ন্ত্রণ নির্দেশিকা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০০ মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ। কিন্তু জরিপে তৎসংলগ্ন স্থানে তামাকজাত দ্রব্যের অবাধ বিক্রয় ও বিজ্ঞাপন প্রচার লক্ষ্য করা গেছে।