
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস ও বরযাত্রীবাহী মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৯ জন নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বেলা ২টার দিকে শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর বাসস্ট্যান্ডে ঢাকাগামী মাইক্রোবাসের সঙ্গে স্বাধীন পরিবহনের এ সংঘর্ষ হয়। নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের ৬ জনসহ ৯ জনই মাইক্রোবাসের যাত্রী।
নিহতদের মধ্যে বর রুবেলের বাবা আঃ রশিদ বেপারী (৭০), বোন লিজা (২৪) ভাগনী তাবাসসুম(৬) ও অপর ভাগনী রেনু (১২), ভাবি রুনা (২৫) ও ভাতিজা তাহসান(৫) একই পরিবারের সদস্য। বাকি তিন জন জন হলেন মাইক্রোবাস চালক বিল্লাল (২৮), বরযাত্রী কেরামত বেপারী (৭১) ও মফিজুল মোল্লা (৬০)। এ ঘটনায় অপর আহত ১০ জনকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় বর পিছনের গাড়িতে থাকায় তিনি অক্ষত রয়েছেন।
জানা যায়, বরের বহরের মাইক্রোবাসটি মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কনকসার গ্রাম থেকে ১৩ জন ঢাকার কামরাঙ্গীচর এক বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। অপরদিকে স্বাধীন পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসটি যাচ্ছিল মাওয়ার দিকে। সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই ছয়জনের মৃত্যু হয়। পরে শ্রীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে পথে মারা যান আরও দুজন। অপরদিকে চারজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজধানীর মিডফোর্ড হাসপাতালে নেওয়া হলে মারা যায় একজন। এ ঘটনায় আহত জাহাঙ্গীর(৫২), জয়নাল আবেদিন(৫২) ও শোয়েব(২২) গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বাকি ১০ জনকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর ছেড়ে দেয়া হয়।
শ্রীনগর নির্বাহী অফিসার রহিমা আক্তার বলেন, ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মাইক্রোবাসের ভেতরে আটকে পড়া নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে। জেলা প্রশাসক নিহতের প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে দেয়ার ঘোষণা দেন।এদিকে সন্ধ্যায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আসমা শাহীনকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম ৯ জন নিহতের খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ‘দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাসের চালকসহ ৯ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ছয় জন দুর্ঘটনাস্থলে, দুই জন ষোলঘর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও দুই জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। এ ঘটনায় আহত অন্তত ১০ জনকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ‘মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলা থেকে মাইক্রোবাসটি ঢাকার দিকে যাচ্ছিলো। মাইক্রোবাসের সবাই ছিলেন বরযাত্রী। তবে তারা সবাই একই পরিবারের ছিলেন কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’
হাঁসাড়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আব্দুল বাসেদ জানান, ‘মাওয়াগামী স্বাধীন পরিবহনের বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঢাকাগামী মাইক্রোবাসের ওপরে গিয়ে পড়লে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মাইক্রোবাসের আরোহীরা সবাই আত্মীয়-স্বজন ছিল।