
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমসহ একাধিক জঙ্গি সংগঠন আবারো কার্যক্রম শুরু করেছে। দীর্ঘদিন পর পুরোনো রোহিঙ্গাদের অনেকে ক্যাম্পের বাইরে থেকে বিভিন্ন অপকর্মের কলকাঠি নাড়ে। তাদের হাত ধরে সক্রিয় হচ্ছে এসব জঙ্গি সংগঠন। কক্সবাজার শহর ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে ছদ্মবেশী জঙ্গিরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অপরিচিত লোকজনের আনাগোনা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধু তাই নয়, গভীর রাতে গরু-ছাগল জবাই ও ভাগ বাটোয়ারা করা হচ্ছে। এসব অপকর্মের নেতৃত্বে রয়েছেন রোহিঙ্গা নেতা শাইখ ছালামত উল্লাহ, শফিক, কামাল হোসেন, ইদ্রিস জিহাদিসহ প্রায় চার শতাধিক পুরোনো রোহিঙ্গা। তাদের অনেকেই এর আগে একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছিলেন জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে।
গত বছরের জুন মাসে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট রাজধানীর রামপুরা থেকে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা কিছু সংখ্যক এনজিও এবং রোহিঙ্গা নেতাদেরকে সহযোগিতা করেছে বলে জানা যায়।
স্থানীয়রা জানায়, রোহিঙ্গাদের পর্দার অন্তরালে লোমহর্ষক কাহিনি রয়েছে। তাদের মধ্যে একটি ভয়ঙ্কর গ্রুপ রয়েছে। এই রোহিঙ্গারা খোলস পাল্টাতে পারে যখন তখন। রোহিঙ্গারা প্রথমে তাদের অসহায়ত্বের কথা বলে আশ্রয় খোঁজে। স্থান পাওয়ার পর তাদের পুরোনো নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিভিন্ন উগ্রবাদী সংগঠনে যোগ দেয়।
আরএসও, আল ইয়াকিন নামে সন্ত্রাসীরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাঁদাবাজি, ইয়াবা, অস্ত্র মজুত, চোরাচালান ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শতাধিক রোহিঙ্গা এবং অন্তত ১৮ জন বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যা করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে বহু অস্ত্র উদ্ধার ও রোহিঙ্গা ডাকাতদের গ্রেফতার করেছে।
সম্প্রতি ঢাকায় গ্রেফতার হন- আনসার আল ইসলামের সদস্য মারুফ চৌধুরী মিশু ওরফে ফারহান। তার সঙ্গে রোহিঙ্গা নেতা ইদ্রিছ জিহাদি, শাইখ ছালামত উল্লাহ, আয়াজ, হাসিম, আবু ছালেহ, রুহুল আমিন, আবু সিদ্দিক, কামাল হোসেনসহ অনেকের যোগাযোগ ছিল। ফারহান গ্রেফতার হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একাধিক জঙ্গি গোষ্ঠী গা ঢাকা দিয়েছিল। এসব অপরাধী চক্র আবারো সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে।
৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি আমীর জাফর বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতার খবর পেয়ে আমরা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। রোহিঙ্গাদের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। গত একমাসে দুই শতাধিক দুষ্কৃতিকারীকে আটক করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।