গোবিন্দগঞ্জ প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বিরাট দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে একমাস ধরে শ্রেণিকক্ষ ঘেঁষে চলছে ফার্নিচার মেলা।মাঠজুড়ে তাবু টানিয়ে স্থাপন করা হয়েছে ফার্নিচারের দোকান। মাত্র ৫০ হাজার টাকায় তিনমাসের জন্য মাঠটি ভাড়া দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রায় একমাস ধরে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা বন্ধ রয়েছে। আরও দুইমাস মেলা চলবে। ২০০৯ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে কোন প্রকার মেলা, সার্কাস বা বাণিজ্যিক অনুষ্ঠানের অনুমোদন দেওয়া যাবে না বলে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। তারপরও মেলা চলছে।
গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দুরে বিরাট দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয় সুত্র জানায়, উপজেলার রাজাহার ইউনিয়নের অন্তর্গত বিদ্যালয়টি ১৯৬৪ সালে স্থাপিত হয়। এখানে ১৭ জন শিক্ষক-কর্মচারি রয়েছে। ছাত্র সংখ্যা প্রায় ২০০ জন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের ভিন্ন চিত্র। মাঠজুড়ে তাবু টানানো। তাবুর ভিতর ফার্নিচার সামগ্রী। অন্তত ১০০টি দোকান। এসব ফার্নিচারের দোকান থেকে বেচাকেনা চলছে। তবে প্রতি রোববার এখানে বেশি বেচাকেনা হয়। ওইদিন দুরদুরান্ত থেকে ক্রেতারা ফার্নিচার সামগ্রী কিনতে আসেন। মেলার কারণে মাঠে ময়লা আর্বজনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানায়, প্রায় একমাস ধরে মাঠে ফার্নিচার মেলা চালানো হচ্ছে। বিরাট এলাকার বাসিন্দা ফারুক আহম্মেদ বলেন, শিক্ষার্থীরা মাঠে টিফিনের সময় খেলাধুলা করে। বিকেলে আশপাশের শিশুরা খেলে। একমাস ধরে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় শিশুদের খেলাধুলা বন্ধ রয়েছে। একই এলাকার ব্যবসায়ী আহসান হাবিব বলেন, সন্ধ্যায় ফাঁকা মাঠে এলাকার নারী পুরুষ এখানে হাটাহাটি করেন। মুক্ত বাতাসে নি:শ্বাস নেন। কিন্তু ফার্নিচার সামগ্রী রাখায় সবকিছু বন্ধ হয়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানায়, প্রতিদিন টিফিনের সময় তারা মাঠে খেলাধুলা করে। মেলা বসানোর কারণে তারা খেলাধুলা করতে পারছে না। এ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সবুজ মিয়া বলেন, মাত্র ৫০ হাজার টাকা ভাড়ায় মাঠে কাঠের ফার্নিচার মেলা বসানো হয়েছে। এ কারণে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।মাঠ ভাড়া দেওয়া প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রোকনুজ্জামান সরকার বলেন, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্তে মাঠে ফার্নিচার মেলা বসানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তবে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আলতামাসুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয় মাঠে মেলা করার অনুমতি তিনি দেননি। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিভাবে মেলা বসিয়েছে সেটা তার জানা নেই।
এসব বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলম পারভেজ বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে বাণিজ্যিক মেলা বসানোর সুযোগ নেই। এজন্য শিক্ষা মন্ত্রানালয়ের প্রজ্ঞাপনও আছে। তিনি বলেন, মেলা বন্ধ করতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারপরও বন্ধ না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে মেলার ইজাদার বাসেত মিয়া মুঠোফোনে বলেন, শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার সমস্যা হতে পারে। কিন্তু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিয়েছেন বলে তারা মেলা চালাচ্ছেন। মাঠের ভাড়া বাবদ বিদ্যালয়কে প্রায় ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। যা বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজে লাগে।