শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাঁতার না জেনেও যেভাবে বেঁচে ফিরলেন জবি ছাত্রী ফাতেমা

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:০৮:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২১
  • ১৪০ Time View

ঝালকাঠি প্রতিনিধি: রাত তিনটায় লঞ্চে দাউ দাউ করে জ্বলছিলো আগুন। সবাই যে যার মতো করে জীবন রক্ষার্থে ছুটোছুটি করছে। কেউ বেঁচে ফিরছেন, কেউ নিখোঁজ রয়েছেন, কেউবা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। যারা বেঁচে ফিরেছেন তাদেরই একজন ফাতেমা আক্তার। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী।

দ্বিতীয় সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ হলো। তাই বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে বরগুনায় নিজ বাড়ির উদ্দেশে ফিরছিলেন। সঙ্গে ফুফাতো বোন। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া বরগুনাগামী লঞ্চ এমভি অভিযান-১০ এর যাত্রী ছিলেন তিনিও।

রাত তিনটা। এমভি অভিযান- ১০ ঝালকাঠি টার্মিনালের কাছাকাছি পৌঁছালে ইঞ্জিনরুমের আগুন মুহূর্তেই পুরো লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে। পরে সদর উপজেলার দিয়াকুল এলাকায় নদীর তীরে নোঙর করে।
ঠিক সেই মৃহূর্তে ভাবনায় পড়েছেন ফাতেমা। এখন তিনি কী করবেন? কার কাছে যাবেন? এই বাঁচামরার দোলাচলে তখনো বিভোর। এসবের কারণ তিনি সাঁতার জানেন না।

এরপর মুঠোফোনে মাকে ফোন দেন। তখন মা তাকে পরামর্শ দেন। মায়ের পরামর্শে দুই বোন নদীতে ঝাঁপ দেন এবং প্রাণে বেঁচে যান। নদীতে ঝাঁপ দেয়ার আগে দগ্ধ হয়েছিলেন ফাতেমা।

মায়ের কী সেই পরামর্শ ছিল? ফাতেমা আক্তারের পরিবারের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন জবির ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন। তিনি বলেছেন, ফাতেমার ফুফাতো বোন সাঁতার জানতেন। তার মা তাকে ফুফাতো বোনের সহায়তা নেয়ার পরামর্শ দেন। এরপর বোনের সহায়তায় কোনো রকমে নদীর তীরে পৌঁছাতে পারে ফাতেমা।

ফাতেমা আক্তার এখন ঝালকাঠির সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার মা-বাবা দুজনই জবির কর্মচারী। উন্নত চিকিৎসার জন্য মেয়েকে রাজধানীতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করার চিন্তাভাবনা করছে পরিবার। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও তার খোঁজখবর রাখছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Md Zannatul Ferdoush Jewel

Online News Portal
Popular Post

তেঁতুলিয়ায় ক্ল ুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটন, বীরগঞ্জ থেকে আসামি আটক

সাঁতার না জেনেও যেভাবে বেঁচে ফিরলেন জবি ছাত্রী ফাতেমা

Update Time : ১০:০৮:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২১

ঝালকাঠি প্রতিনিধি: রাত তিনটায় লঞ্চে দাউ দাউ করে জ্বলছিলো আগুন। সবাই যে যার মতো করে জীবন রক্ষার্থে ছুটোছুটি করছে। কেউ বেঁচে ফিরছেন, কেউ নিখোঁজ রয়েছেন, কেউবা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। যারা বেঁচে ফিরেছেন তাদেরই একজন ফাতেমা আক্তার। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী।

দ্বিতীয় সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ হলো। তাই বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে বরগুনায় নিজ বাড়ির উদ্দেশে ফিরছিলেন। সঙ্গে ফুফাতো বোন। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া বরগুনাগামী লঞ্চ এমভি অভিযান-১০ এর যাত্রী ছিলেন তিনিও।

রাত তিনটা। এমভি অভিযান- ১০ ঝালকাঠি টার্মিনালের কাছাকাছি পৌঁছালে ইঞ্জিনরুমের আগুন মুহূর্তেই পুরো লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে। পরে সদর উপজেলার দিয়াকুল এলাকায় নদীর তীরে নোঙর করে।
ঠিক সেই মৃহূর্তে ভাবনায় পড়েছেন ফাতেমা। এখন তিনি কী করবেন? কার কাছে যাবেন? এই বাঁচামরার দোলাচলে তখনো বিভোর। এসবের কারণ তিনি সাঁতার জানেন না।

এরপর মুঠোফোনে মাকে ফোন দেন। তখন মা তাকে পরামর্শ দেন। মায়ের পরামর্শে দুই বোন নদীতে ঝাঁপ দেন এবং প্রাণে বেঁচে যান। নদীতে ঝাঁপ দেয়ার আগে দগ্ধ হয়েছিলেন ফাতেমা।

মায়ের কী সেই পরামর্শ ছিল? ফাতেমা আক্তারের পরিবারের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন জবির ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন। তিনি বলেছেন, ফাতেমার ফুফাতো বোন সাঁতার জানতেন। তার মা তাকে ফুফাতো বোনের সহায়তা নেয়ার পরামর্শ দেন। এরপর বোনের সহায়তায় কোনো রকমে নদীর তীরে পৌঁছাতে পারে ফাতেমা।

ফাতেমা আক্তার এখন ঝালকাঠির সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার মা-বাবা দুজনই জবির কর্মচারী। উন্নত চিকিৎসার জন্য মেয়েকে রাজধানীতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করার চিন্তাভাবনা করছে পরিবার। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও তার খোঁজখবর রাখছে।