বরগুনা প্রতিনিধি : ঝালকাঠিতে লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহত অজ্ঞাত পরিচয় ২৩টি মরদেহ দাফন করা হয়েছে। নিহতের পরিচয় না পাওয়া গেলেও তাদের নমুনা সংরক্ষণ করেছে ঝালকাঠী স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বজনরা লাশ না পাওয়ার অভিযোগ দিলে সেই অনুযায়ী তাদেরও নমুনা নিয়ে সংরক্ষিত নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে লাশ শনাক্ত করা হবে বলে জানিয়েয়েছে বরগুনা জেলা প্রশাসন। এদিকে বরগুনা জেলা প্রশাসনের কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী বরগুনার এখনো ১৬জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে স্বজনরা।
লাশ দাফনের সময় আসা এক স্বজন নান্না হাওলাদার বলেন, আমার বোন সেদিন ঢাকা থেকে বরগুনা আসতে ছিলো। অগ্নিকান্ডের ঘটনার পর থেকে আমার বোনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এখানে যে লাশ গুলো রয়েছে সেগুলোর মধ্যে আমার বোন আছে কিনা তাও বুঝতে পারছি না। লাশগুলো এমনভাবে পুড়ে গেছে যে দেখে বোঝার কোন উপায় নেই।
আরেক স্বজন কনু হাওলাদার বলেন, ঝালকাঠি, বরিশাল, বরগুনার সকল হাসপাতালে খুঁজেছি কিন্তু কোথাও আমার ছেলে, বউ ও নাতীকে খুঁজে পেলাম না। বরগুনায় যে লাশ রয়েছে তাও সবগুলো ভালো করে খুঁজে দেখলাম কিন্তু বুঝে উঠতে পারছি না কোন আমার আদরের ধনের লাশ। নাকি এখনো আমার ছেলেন কোন সন্ধান পাওয়াই যায়নি। মুই কি হরমু কিছু কইতে পারি না আপনারা আমার ছেলেরে আইন্না দেন।
এবিষয়ে ঝালকাঠি সিভিল সার্জন রতন কুমার ঢালী বলেন, লাশ গুলো উদ্ধার করে বরগুনা জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করার আগেই আমরা এখানে উদ্ধারকৃত ৩৭টি লাশের নমুনা সংগ্রহ করে রেখেছি। যে কোন আইনগত প্রক্রিয়া কিংবা ডিএনএ পরীক্ষার জন্যই মূলত এই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা আজকে ২৩টি অজ্ঞাত পরিচয় লাশ দাফন করেছি বরগুনার পোটকাখালী গণকবরে। আমাদের বরগুনায় লাশ সংরক্ষনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় লাশ গুলো ধর্মীয় নিয়ম নীতি মেনে দাফন করা হয়েছে। তবে স্বজনদের হতাশ হবার কিছু নেই আমরা প্রতিটি লাশে একটি ক্রমিক নম্বর ব্যবহার করেছি এবং সেই অনুযায়ী ঝালকাঠি স্বাস্থ্য বিভাগ সকল লাশ গুলোর নমুনা সংগ্রহ করে রেখেছে। কোন স্বজন যদি তার নিখোঁজ প্রিয়জনদের খুজে না পায় তবে আমরা তারও নমুনা সংগ্রহ করে দাফনকৃত লাশের নমুনা মিলিয়ে লাশগুলো শনাক্ত করবো।