রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ধারণ ক্ষমতার অধিক যাত্রী ছিলো লঞ্চে, ছিলোনা অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:১৭:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২১
  • ১১৮ Time View

বরগুনা প্রতিনিধি : অভিযান ১০ লঞ্চটি ধারণ ক্ষমতার অধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে বরগুনা রওনা হয়েছিলো বলে অভিযোগ করেছে বেঁচে ফিরে আসা যাত্রীরা। একই সাথে লঞ্চের ভিতরে অগ্নিনির্বাপনের ছিলো কোন ব্যবস্থা। অগ্নি নির্বাপনের জন্য গ্যাস সিলিন্ডার থাকলেও সেগুলো ছিলো বিকল। তবে বিআইডব্লিউটি থেকে জানানো হয়েছে ৩১০ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে বরগুনা যাচ্ছিলো লঞ্চটি। যাত্রীরা বলছেন প্রায় ১ হাজারের মতো যাত্রী ছিলো লঞ্চে।

লঞ্চ থেকে প্রাণে বেচে ফিরে আসা যাত্রী সাদিক জানান, লঞ্চটি ঢাকা থেকে ছাড়ার পরপরই লঞ্চের ফ্লোর গরম হতে থাকে। এসময় লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি যাত্রীরা জানালেও তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি। বরংচো যাত্রীদের নিবৃত করে কম্বল বিছিয়ে দিয়েছিলো ফ্লোরে। এরপর ক্রমান্বয়ে গরম হতে থাকলেও শীতের তীব্রতার কারনে তা টের পায়নি যাত্রীরা। তবে শুরুতেই যখন লঞ্চটি গরম হচ্ছিলো তখন ব্যবস্থা নিলে হয়তো এতো প্রাণহানি দেখতে হতো না।

আরেক যাত্রী মোশারফ বলেন, আমি ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে বরগুনা যাচ্ছিলাম। লঞ্চে দেরিতে আসার কারনে কেবিন না পাওয়ায় নিচ তলার ডেকে অবস্থান নিয়ে ছিলাম। লহ্চ যখন গরম হতে শুরু করে তখন সেখান থেকে সরে গিয়ে লঞ্চের সম্মুখভাগে যাই। এরপর মাঝখানে একবার ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ মানুষের চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায়। এরপর শুনতে পারি বিষ্পোরিত হয়ে লঞ্চে আগুন লেগেছে তাৎক্ষনিক লঞ্চ থেকৈ লাফিয়ে নদীতে পরে তীরে সাতরে উঠি। এরপর স্থানীয়দের মাধ্যমে স্বজনদের খবর দিলে তারা গিয়ে আমাকে নিয়ে আসে।

সুত্র জানায়, ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে আগুন লাগা এমভি অভিযান-১০ লঞ্চটি বৃহ¯পতিবার ঢাকা থেকে ছাড়ার সময় ৩১০ জন যাত্রীর ঘোষণা দেয়। তবে এর দ্বিগুণেরও বেশি যাত্রী ছিলো লঞ্চটিতে, বলছেন উদ্ধার হওয়া যাত্রীরা। লঞ্চ কর্তৃপক্ষের দাবি লঞ্চটির ধারণ ক্ষমতা ৯০০ জন।

নৌপথে দক্ষিণাঞ্চলের ঢাকা- বরগুনা রুটের যাত্রী পরিবহনে বছর দুয়েক আগে চালু হয় বিলাসবহুল এমভি অভিযান-১০ লঞ্চ। বরিশাল সহ, বরগুনার, বেতাগী কাঁকচিড়া ঘাটে যাত্রীর আসা নেওয়া করতো এ নৌযানটি। মাত্র দিন পনেরো আগে মেরামতের কাজ হয় জলযানটিতে। এরপর চারটি ট্রিপ সম্পন্ন করে ৯০০ যাত্রী ধারণাক্ষমতার লঞ্চটি।

অভিযান-১০ লঞ্চে চলাচলকারী বেশিরভাগ যাত্রী বরগুনা জেলা ও এর আশপাশের এলাকার। আগুনের ঘটনায় হতাহতের বেশিরভাগই বরগুনা জেলার, বলছেন স্বজনেরা।

এবিষয়ে লঞ্চ মালিক হাম জালাল এর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, এই লঞ্চটি এর আগেও একবার চরে উঠিয়ে দিয়েছিলো। আমার মনে হয় লঞ্চ কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারনে এতগুলো নীরিহ প্রাণ একসাথে মারা গেলো।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Md Zannatul Ferdoush Jewel

Online News Portal

গাইবান্ধায় ঘাঘট তীরে মুক্তমঞ্চ ‘মানব বন্ধন‘ এর উদ্বোধন

ধারণ ক্ষমতার অধিক যাত্রী ছিলো লঞ্চে, ছিলোনা অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা

Update Time : ১২:১৭:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২১

বরগুনা প্রতিনিধি : অভিযান ১০ লঞ্চটি ধারণ ক্ষমতার অধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে বরগুনা রওনা হয়েছিলো বলে অভিযোগ করেছে বেঁচে ফিরে আসা যাত্রীরা। একই সাথে লঞ্চের ভিতরে অগ্নিনির্বাপনের ছিলো কোন ব্যবস্থা। অগ্নি নির্বাপনের জন্য গ্যাস সিলিন্ডার থাকলেও সেগুলো ছিলো বিকল। তবে বিআইডব্লিউটি থেকে জানানো হয়েছে ৩১০ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে বরগুনা যাচ্ছিলো লঞ্চটি। যাত্রীরা বলছেন প্রায় ১ হাজারের মতো যাত্রী ছিলো লঞ্চে।

লঞ্চ থেকে প্রাণে বেচে ফিরে আসা যাত্রী সাদিক জানান, লঞ্চটি ঢাকা থেকে ছাড়ার পরপরই লঞ্চের ফ্লোর গরম হতে থাকে। এসময় লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি যাত্রীরা জানালেও তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি। বরংচো যাত্রীদের নিবৃত করে কম্বল বিছিয়ে দিয়েছিলো ফ্লোরে। এরপর ক্রমান্বয়ে গরম হতে থাকলেও শীতের তীব্রতার কারনে তা টের পায়নি যাত্রীরা। তবে শুরুতেই যখন লঞ্চটি গরম হচ্ছিলো তখন ব্যবস্থা নিলে হয়তো এতো প্রাণহানি দেখতে হতো না।

আরেক যাত্রী মোশারফ বলেন, আমি ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে বরগুনা যাচ্ছিলাম। লঞ্চে দেরিতে আসার কারনে কেবিন না পাওয়ায় নিচ তলার ডেকে অবস্থান নিয়ে ছিলাম। লহ্চ যখন গরম হতে শুরু করে তখন সেখান থেকে সরে গিয়ে লঞ্চের সম্মুখভাগে যাই। এরপর মাঝখানে একবার ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ মানুষের চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায়। এরপর শুনতে পারি বিষ্পোরিত হয়ে লঞ্চে আগুন লেগেছে তাৎক্ষনিক লঞ্চ থেকৈ লাফিয়ে নদীতে পরে তীরে সাতরে উঠি। এরপর স্থানীয়দের মাধ্যমে স্বজনদের খবর দিলে তারা গিয়ে আমাকে নিয়ে আসে।

সুত্র জানায়, ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে আগুন লাগা এমভি অভিযান-১০ লঞ্চটি বৃহ¯পতিবার ঢাকা থেকে ছাড়ার সময় ৩১০ জন যাত্রীর ঘোষণা দেয়। তবে এর দ্বিগুণেরও বেশি যাত্রী ছিলো লঞ্চটিতে, বলছেন উদ্ধার হওয়া যাত্রীরা। লঞ্চ কর্তৃপক্ষের দাবি লঞ্চটির ধারণ ক্ষমতা ৯০০ জন।

নৌপথে দক্ষিণাঞ্চলের ঢাকা- বরগুনা রুটের যাত্রী পরিবহনে বছর দুয়েক আগে চালু হয় বিলাসবহুল এমভি অভিযান-১০ লঞ্চ। বরিশাল সহ, বরগুনার, বেতাগী কাঁকচিড়া ঘাটে যাত্রীর আসা নেওয়া করতো এ নৌযানটি। মাত্র দিন পনেরো আগে মেরামতের কাজ হয় জলযানটিতে। এরপর চারটি ট্রিপ সম্পন্ন করে ৯০০ যাত্রী ধারণাক্ষমতার লঞ্চটি।

অভিযান-১০ লঞ্চে চলাচলকারী বেশিরভাগ যাত্রী বরগুনা জেলা ও এর আশপাশের এলাকার। আগুনের ঘটনায় হতাহতের বেশিরভাগই বরগুনা জেলার, বলছেন স্বজনেরা।

এবিষয়ে লঞ্চ মালিক হাম জালাল এর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, এই লঞ্চটি এর আগেও একবার চরে উঠিয়ে দিয়েছিলো। আমার মনে হয় লঞ্চ কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারনে এতগুলো নীরিহ প্রাণ একসাথে মারা গেলো।