বরগুনা প্রতিনিধি : বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬ এ উপকূলের দাবী নিশ্চিতকল্পে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় যুবকদের প্রতিকী অনশন কার্মসূচি পালিত হয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জাগোনারী, উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরবিশে কর্মজোট (ক্লিন) ও এশিয়ান পিপলস্ মুভমেন্ট অন ডেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এপিএমডিডি) যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে। প্রতীকী অনশণ কার্মসূচিতে বরগুনার ৩টি যুব সংগঠন- বিডি ক্লিনি বরগুনা, ঈশানা নারী ফাউন্ডশেন ও কোষ্টাল ইয়ুথ নেটওর্য়াক (সিওয়াইএন) অংশগ্রহণ কর।
গত ৩১ অক্টোবর শুরু হয়ে আগামী ১২ নভম্বের পর্যন্ত স্কটল্যান্ডের রাজধানী গ্লাসগোতে জাতসিংঘ জলবায়ু সম্মলেন অনুষ্ঠতি হচ্ছে। এ সম্মলেনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চারটি মূল দাবি তুলে ধরছেন। দাবিগুলো হলো- কার্বন নির্গমন শূন্যে নামিয়ে আনার জন্য উচ্চাভিলাষী পরকিল্পনা গ্রহণ করা, উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাও, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ন দেশগুলোকে নবায়নযোগ্য ও পরচ্ছিন্ন জ্বালানি প্রযুক্তি দিয়ে সহায়তা করা এবং জলবায়ু উদ্বাস্তু এবং জলবায়ু পরির্বতনের কারণে ক্ষতি ও ধ্বংসরে দায়-দায়ত্বি গ্রহণ করা।
জলবায়ু পরির্বতনের বিরুপ প্রভাবের ফলে সারা পৃথিবী জুড়ে দূর্যোগের সংখ্যা ও ভয়াবহতা দুটোই বেড়ে গেছে। আর এতে ক্ষতির শিকার হচ্ছে বাংলাদশেরে মতো উপকূলীয় ও উন্নয়নশীল দেশগুলো। গত ২০ বছরে যেসব দেশ জলবায়ু দূর্যোগ আক্রান্ত প্রথম পাঁচটি দেশরে মধ্যে বাংলাদশে একটি। জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবে দেশের উপকূলীয় ও উত্তরাঞ্চলে লবণাক্ততা, খরা, বন্যা, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, নদী ভাঙ্গন, ঘূর্নিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে জীবিকা হারিয়ে প্রতি বছর পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ জলবায়ু উদ্বাস্তুতে পরিনত হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ বাতাসে অতিরিক্ত কার্বন নির্গমন ও তার ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার উদ্দেশ্যে ২০১৫ সালে প্যারিস জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো চুক্তি স্বাক্ষর করে। প্যারিস চুক্তির উদ্দেশ্যে পূরণ করতে হলে ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ এ লক্ষ্য পূরণের প্রতিশ্রুতি দিলেও চীন, রাশিয়া, ব্রাজিল ও ভারতের মতো বড় নির্গমনকারী দেশ কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি। ফলে মানবজাতি রক্ষার উদ্যোগ অনকেটাই ব্যার্থ হবে। মানবজাতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার জন্য এসব দেশের লজ্জা পাওয়া উচিৎ। সবুজ ও পরিছন্ন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে জ্বালানী রুপান্তরের বিষয়ে উপযুক্ত নীতি গ্রহণ করার জন্য নীতি-নির্ধারক ও গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষন করা, গ্লাকসোতে চলমান বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে নিতীনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষ্য নিয়ে এই প্রতিকী অনশন আয়োজন করা হয়।
উক্ত প্রতিকী অনশনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, কয়লাভিত্তিক বিদ্যৎ কেন্দ্রের নেতিবাচক দিক এবং উপকূলীয় জনজীবনে এসবের প্রতিকী প্রভাব স্থানীয় জনগন বিভিন্নভাবে প্রদর্শন করেন। প্রতিকী অনশনে বিডিক্লিন বরগুনা, কোষ্টাল ইয়ুথ নেটওয়ার্ক, ঈশানা নারী ফাউন্ডেশন নামক যুব সংগঠন সমূহ তাদের সদস্যদের নিয়ে এবং স্থানীয় জনগন এই প্রতিকী অনশনে উপস্থিত হয়ে পরিবেশ রক্ষায় তাদের মতামত, সিদ্ধান্ত ও দাবী তুলে ধরেন।
জাগোনারীর প্রতনিধি তাজমেরী জাহান লিখন বলেন, কয়লার ব্যবহার পরিবেশের উপর ও মানুষরে জীবন যাত্রার উপর বিরুপ প্রভাব ফেলছে তাই কয়লার ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। বিডি ক্লিনি বরগুনার আয়শা সিদ্দিকা বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে যেনো পরিবেশের উপর ক্ষতকির প্রভাব না পড়ে। যুব নেতা অর্পিতা বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানভিত্তিকি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে পৃথিবীর তাপমাত্রা সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। কোষ্টাল ইয়থ নেটওয়ার্কের প্রতিনিধি মহিউদ্দিন অপু বলনে, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে জীবন যাত্রার মান উন্নত করতে হবে।
বক্তারা অবিলম্বে কয়লাসহ জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ করা, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জলবায়ু বিপদাপন্নের জন্য পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদশেকে সহায়তা করা, ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন শূন্যে নামিয়ে আনার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চত করার দাবি জানান।