সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাইবান্ধায় ইউপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:৪৭:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ নভেম্বর ২০২১
  • ২৪৭ Time View

স্টাফ রিপোর্টার: গাইবান্ধা সদর উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদস্য প্রার্থী ফজলে রাব্বীর বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রী রতনা বেগম(২৬)কে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের উত্তর খোলাহাটী ঢোলমারা গ্রামে। পুলিশ আজ সকালে নিহতের লাশ উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।

এই ঘটনায় ফজলে রাব্বীর দ্বিতীয় স্ত্রী ফারজনা বেগম(২০)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফজলে রাব্বি চলতি ইউপি নির্বাচনে(১১ নভেম্বর) খোলাহাটী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য পদে মোড়গ মার্কা নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

স্থানীয়রা জানায়, উত্তর খোলাহাটী ঢোলমারা গ্রামের লতিফ মিস্ত্রির ছেলে দাদন ব্যবসায়ি ফজলে রাব্বীর সাথে ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে রতনা বেগমের সাথে প্রায় সাত বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে চাপ দিয়ে আসতো ফজলে রাব্বী। রতনা বেগম দুই ছেলের জননী। দাদন ব্যবসায়ি ফজলে রাব্বী পরকিয়া করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রায় ৬ মাস আগে অন্যের স্ত্রী ফারজনা বেগমকে দ্বিতীয় বিয়ে করে। এনিয়ে সংসারে প্রায় ঝগড়া-বিবাদ চলে আসছিল। প্রতিবেশীরা বিবাদ মেটাতে এগিয়ে আসলে তাদেরও মারপিট করে তাড়িয়ে দিত।

স্থানীয়রা অভিযোগে জানায়, নিহতের ছেলে রনি(৬) রোববার দুপুরে পাখির বাসা পারার জন্য গাছে উঠলে ব্যাথা পায়। এই খবর জানার পর বিকেলে ফজলে রাব্বী তার ছেলে রনির দুই হাত বেধে বুকে ইট চাপা দিয়ে মাটিতে শুয়ে রাখে। এতে রনির বা হাত ভেঙ্গে যায় এবং চিকিৎসা না করে বাড়িতে রেখে দেয়। এই ঘটনায় রনির মা রতনা বেগম প্রতিবাদ করলে ফজলে রাব্বী তাকে বেদম মারপিট করে। রাতে মায়ের সাথে রনি ও তার ছোট ভাই হাবিব(৪) ঘুমিয়ে পড়ে। ফজলে রাব্বী নির্বাচনী প্রচারণা শেষে গভীর রাতে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে অন্য কক্ষে ঘুমায়। ভোরে নিহত রতনা বেগম বাড়ির আঙ্গিনা ঝাড়– দিয়ে খড়ির ঘর ঝাড়– দিতে যায়। তখন ফজলে রাব্বী স্ত্রী রতনা বেগমকে বেদম মারপিট করে। এতে রতনা বেগম মারা গেলে তার মৃতদেহ খড়ির ঘরের ধরনার সাথে ওরনা পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে রতনার লাশ বিছানায় রেখে পালিয়ে যায় ফজলে রাব্বী।

আজ সকালে ঘুম থেকে দুই ভাই রনি  ও ছোট ভাই হাবিব মা রতনা বেগমকে পাশে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে কান্নাকাটি করে। পরে আশপাশের লোকজন এসে রতনা বেগমের লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছিলে এলাকাবাসি নিহতের সতিন ফারজনা বেগমসহ ফজলে রাব্বীকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ করে। তারা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানান। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং নিহতের সুরতহাল তৈরি করে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) তদন্ত মোঃ আব্দুর রউফ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধুর লাশ উদ্ধার মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের সতিন ফারজনা বেগমকে আটক করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

MD ZANNATUL FERDOUSH

NEWS PURPOSE

এবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক পাচ্ছেন ২ ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠান

গাইবান্ধায় ইউপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ

Update Time : ১১:৪৭:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ নভেম্বর ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার: গাইবান্ধা সদর উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদস্য প্রার্থী ফজলে রাব্বীর বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রী রতনা বেগম(২৬)কে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের উত্তর খোলাহাটী ঢোলমারা গ্রামে। পুলিশ আজ সকালে নিহতের লাশ উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।

এই ঘটনায় ফজলে রাব্বীর দ্বিতীয় স্ত্রী ফারজনা বেগম(২০)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফজলে রাব্বি চলতি ইউপি নির্বাচনে(১১ নভেম্বর) খোলাহাটী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য পদে মোড়গ মার্কা নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

স্থানীয়রা জানায়, উত্তর খোলাহাটী ঢোলমারা গ্রামের লতিফ মিস্ত্রির ছেলে দাদন ব্যবসায়ি ফজলে রাব্বীর সাথে ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে রতনা বেগমের সাথে প্রায় সাত বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে চাপ দিয়ে আসতো ফজলে রাব্বী। রতনা বেগম দুই ছেলের জননী। দাদন ব্যবসায়ি ফজলে রাব্বী পরকিয়া করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রায় ৬ মাস আগে অন্যের স্ত্রী ফারজনা বেগমকে দ্বিতীয় বিয়ে করে। এনিয়ে সংসারে প্রায় ঝগড়া-বিবাদ চলে আসছিল। প্রতিবেশীরা বিবাদ মেটাতে এগিয়ে আসলে তাদেরও মারপিট করে তাড়িয়ে দিত।

স্থানীয়রা অভিযোগে জানায়, নিহতের ছেলে রনি(৬) রোববার দুপুরে পাখির বাসা পারার জন্য গাছে উঠলে ব্যাথা পায়। এই খবর জানার পর বিকেলে ফজলে রাব্বী তার ছেলে রনির দুই হাত বেধে বুকে ইট চাপা দিয়ে মাটিতে শুয়ে রাখে। এতে রনির বা হাত ভেঙ্গে যায় এবং চিকিৎসা না করে বাড়িতে রেখে দেয়। এই ঘটনায় রনির মা রতনা বেগম প্রতিবাদ করলে ফজলে রাব্বী তাকে বেদম মারপিট করে। রাতে মায়ের সাথে রনি ও তার ছোট ভাই হাবিব(৪) ঘুমিয়ে পড়ে। ফজলে রাব্বী নির্বাচনী প্রচারণা শেষে গভীর রাতে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে অন্য কক্ষে ঘুমায়। ভোরে নিহত রতনা বেগম বাড়ির আঙ্গিনা ঝাড়– দিয়ে খড়ির ঘর ঝাড়– দিতে যায়। তখন ফজলে রাব্বী স্ত্রী রতনা বেগমকে বেদম মারপিট করে। এতে রতনা বেগম মারা গেলে তার মৃতদেহ খড়ির ঘরের ধরনার সাথে ওরনা পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে রতনার লাশ বিছানায় রেখে পালিয়ে যায় ফজলে রাব্বী।

আজ সকালে ঘুম থেকে দুই ভাই রনি  ও ছোট ভাই হাবিব মা রতনা বেগমকে পাশে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে কান্নাকাটি করে। পরে আশপাশের লোকজন এসে রতনা বেগমের লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছিলে এলাকাবাসি নিহতের সতিন ফারজনা বেগমসহ ফজলে রাব্বীকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ করে। তারা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানান। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং নিহতের সুরতহাল তৈরি করে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) তদন্ত মোঃ আব্দুর রউফ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধুর লাশ উদ্ধার মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের সতিন ফারজনা বেগমকে আটক করা হয়েছে।