বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চীনে সন্তান নিলেই বেতনসহ এক বছরের ছুটি পাবেন কর্মী

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:০০:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ নভেম্বর ২০২১
  • ১২৩ Time View

খোঁজ খবর ডেস্ক: জন্মহার কমে যাওয়ায় দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ চিন্তিত চীন সরকার। এজন্য দেশটির দম্পতিদের সন্তান গ্রহণে সরকারিভাবে নানাভাবে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শানজি প্রদেশের কর্তৃপক্ষ এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। নতুন চিন্তাভাবনা অনুযায়ী, প্রদেশটিতে কোনো নারী কর্মী সন্তান নিলে পূর্ণ বেতনে এক বছরের মাতৃত্বকালীন ছুটি পাবেন তিনি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স গত বুধবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বর্তমানে চীনের শানজি প্রদেশে সন্তান হলে নারী কর্মীরা ১৬৮ দিনের ছুটি কাটাতে পারেন। প্রদেশটির সরকার এই ছুটি বাড়িয়ে প্রায় এক বছর করতে চায়। এ বিষয়ে জনমত যাচাই করছে তারা। একই সঙ্গে তৃতীয় সন্তান জন্ম নিলে পুরুষ কর্মীদের পিতৃত্বকালীন ছুটি বাড়িয়ে ৩০ দিন করতে চায় সরকার। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশ চীন। তবে দেশটিতে জনসংখ্যার বৃদ্ধি দ্রুত কমে আসছে। এ কারণে দম্পতিদের সন্তান গ্রহণে উৎসাহিত করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার।

গত মে মাসে সরকার ঘোষণা দিয়েছে, দম্পতিরা চাইলে দুজনের বেশি সন্তান নিতে পারবেন। এর পর থেকে শানজিসহ ১৪টি প্রদেশ পরিবার পরিকল্পনার স্থানীয় নিয়মনীতি ও আইন সংশোধন করেছে বা জনমত যাচাই করছে। এর অংশ হিসেবে সন্তান নিলে নারী ও পুরুষ কর্মীর সবেতন ছুটি বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। দেশটির কয়েকটি প্রদেশে কর্মীদের জন্য ‘শিশুর বেড়ে ওঠার ছুটি’ নামে নতুন একধরনের ছুটি চালু করা হয়েছে। এর আওতায় যেসব কর্মীর ৩ বছর বা এর কমবয়সী সন্তান রয়েছে, তাঁরা ছুটি নিতে পারবেন।

ফাইল ছবি

দক্ষিণাঞ্চলীয় হাইনান প্রদেশ কর্মীদের তিন বছর বা এর কমবয়সী সন্তানের দেখভালের জন্য প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে ছুটি দিচ্ছে। চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকার প্রত্যন্ত শহর ও গ্রামে সন্তানের জন্মহার আশঙ্কাজনক হারে কমতে শুরু করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে হেইলংজিয়াং প্রদেশের সরকার সেখানকার সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী দম্পতিদের চারটি সন্তান নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চীনে এক সন্তান নীতি কার্যকর ছিল।

জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমতে শুরু করায় ২০১৬ সালে দেশটি কয়েক দশকের পুরোনো এ আইন থেকে সরে আসে। চালু হয় দুই সন্তান নীতি। এতে দম্পতিরা একের অধিক সন্তান নেওয়ার সুযোগ পান। তবে আইনের এই পরিবর্তনে খুব একটা সুফল মেলেনি। চলতি বছর দেশটিতে তিন সন্তান নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় দম্পতিদের। মূলত জীবনযাত্রার বাড়তি ব্যয় চীনা দম্পতিদের সন্তান গ্রহণের আগ্রহ বৃদ্ধির পথে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে রয়ে গেছে। তাই সন্তান গ্রহণে দম্পতিদের উৎসাহ দিতে সরকারি প্রণোদনা, কর্মক্ষেত্রে ছুটি বাড়ানোসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এমনকি কোথাও কোথাও দম্পতিদের চারটি পর্যন্ত সন্তান নিতে সরকারের পক্ষ থেকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।

১৯৬০-এর দশকের পর বর্তমানে চীনে সন্তান জন্মের হার সবচেয়ে কম। দেশটির ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকস গত এপ্রিলে জানিয়েছে, গত বছর দেশটিতে ১ কোটি ২০ লাখ শিশুর জন্ম হয়েছে। ২০১৬ সালে দেশটিতে ১ কোটি ৮০ লাখ শিশুর জন্ম হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

MD ZANNATUL FERDOUSH

NEWS PURPOSE
Popular Post

তেঁতুলিয়ায় ক্ল ুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটন, বীরগঞ্জ থেকে আসামি আটক

চীনে সন্তান নিলেই বেতনসহ এক বছরের ছুটি পাবেন কর্মী

Update Time : ০৫:০০:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ নভেম্বর ২০২১

খোঁজ খবর ডেস্ক: জন্মহার কমে যাওয়ায় দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ চিন্তিত চীন সরকার। এজন্য দেশটির দম্পতিদের সন্তান গ্রহণে সরকারিভাবে নানাভাবে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শানজি প্রদেশের কর্তৃপক্ষ এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। নতুন চিন্তাভাবনা অনুযায়ী, প্রদেশটিতে কোনো নারী কর্মী সন্তান নিলে পূর্ণ বেতনে এক বছরের মাতৃত্বকালীন ছুটি পাবেন তিনি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স গত বুধবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বর্তমানে চীনের শানজি প্রদেশে সন্তান হলে নারী কর্মীরা ১৬৮ দিনের ছুটি কাটাতে পারেন। প্রদেশটির সরকার এই ছুটি বাড়িয়ে প্রায় এক বছর করতে চায়। এ বিষয়ে জনমত যাচাই করছে তারা। একই সঙ্গে তৃতীয় সন্তান জন্ম নিলে পুরুষ কর্মীদের পিতৃত্বকালীন ছুটি বাড়িয়ে ৩০ দিন করতে চায় সরকার। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশ চীন। তবে দেশটিতে জনসংখ্যার বৃদ্ধি দ্রুত কমে আসছে। এ কারণে দম্পতিদের সন্তান গ্রহণে উৎসাহিত করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার।

গত মে মাসে সরকার ঘোষণা দিয়েছে, দম্পতিরা চাইলে দুজনের বেশি সন্তান নিতে পারবেন। এর পর থেকে শানজিসহ ১৪টি প্রদেশ পরিবার পরিকল্পনার স্থানীয় নিয়মনীতি ও আইন সংশোধন করেছে বা জনমত যাচাই করছে। এর অংশ হিসেবে সন্তান নিলে নারী ও পুরুষ কর্মীর সবেতন ছুটি বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। দেশটির কয়েকটি প্রদেশে কর্মীদের জন্য ‘শিশুর বেড়ে ওঠার ছুটি’ নামে নতুন একধরনের ছুটি চালু করা হয়েছে। এর আওতায় যেসব কর্মীর ৩ বছর বা এর কমবয়সী সন্তান রয়েছে, তাঁরা ছুটি নিতে পারবেন।

ফাইল ছবি

দক্ষিণাঞ্চলীয় হাইনান প্রদেশ কর্মীদের তিন বছর বা এর কমবয়সী সন্তানের দেখভালের জন্য প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে ছুটি দিচ্ছে। চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকার প্রত্যন্ত শহর ও গ্রামে সন্তানের জন্মহার আশঙ্কাজনক হারে কমতে শুরু করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে হেইলংজিয়াং প্রদেশের সরকার সেখানকার সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী দম্পতিদের চারটি সন্তান নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চীনে এক সন্তান নীতি কার্যকর ছিল।

জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমতে শুরু করায় ২০১৬ সালে দেশটি কয়েক দশকের পুরোনো এ আইন থেকে সরে আসে। চালু হয় দুই সন্তান নীতি। এতে দম্পতিরা একের অধিক সন্তান নেওয়ার সুযোগ পান। তবে আইনের এই পরিবর্তনে খুব একটা সুফল মেলেনি। চলতি বছর দেশটিতে তিন সন্তান নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় দম্পতিদের। মূলত জীবনযাত্রার বাড়তি ব্যয় চীনা দম্পতিদের সন্তান গ্রহণের আগ্রহ বৃদ্ধির পথে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে রয়ে গেছে। তাই সন্তান গ্রহণে দম্পতিদের উৎসাহ দিতে সরকারি প্রণোদনা, কর্মক্ষেত্রে ছুটি বাড়ানোসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এমনকি কোথাও কোথাও দম্পতিদের চারটি পর্যন্ত সন্তান নিতে সরকারের পক্ষ থেকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।

১৯৬০-এর দশকের পর বর্তমানে চীনে সন্তান জন্মের হার সবচেয়ে কম। দেশটির ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকস গত এপ্রিলে জানিয়েছে, গত বছর দেশটিতে ১ কোটি ২০ লাখ শিশুর জন্ম হয়েছে। ২০১৬ সালে দেশটিতে ১ কোটি ৮০ লাখ শিশুর জন্ম হয়।