শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অন্তরঙ্গ অবস্থায় গ্রামবাসীর হাতে এএসআই আটক, পুলিশের মামলায় ১৩ জন গ্রেফতার

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:১৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ নভেম্বর ২০২১
  • ১০১ Time View

সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধি: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার উত্তর ধর্মপুর গ্রামে বাদীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় গ্রামবাসীর হাতে এএসআই আটক ও প্রত্যাহারের পর সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ৯০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। ওই মামলায় এখন পর্য ন্গ্রেত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  গ্রেফতারকৃতরা হলেন-ওই গ্রামের  আবদুল খালেক, আমজাদ আলী, সুমন মিয়া, বকুল মিয়া, মকুল মিয়া, জহুরুল ইসলাম, শাহজাহান আলী, আবদুর রাজ্জাক, হামিদুল ইসলাম, রবিউল মিয়া, ইসলাম মিয়া, নাজমুল হক ও রাজু মিয়া। রোববার রাতে মামলা ও গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আবদুল্লাহিল জামান।

এদিকে মামলা ও ১৩ জন গ্রেফতারের ঘটনা জানাজানি হওয়ায় গ্রাম ছেড়েছে উত্তর ধর্মপুরের পুরুষরা। গ্রেফতারের ভয়ে তারা আশ্রয় নিয়েছে আশপাশের গ্রামের আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, উত্তর ধর্মপুর গ্রামের এক নারীর গাছ জোরপূর্বক কেটে নেয়ার অভিযোগ পেয়ে ২৯ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এএসআই তোফাজ্জল হোসেন সাদা পোশাকে তার বাড়িতে যান। পরে ঐ বাড়ি থেকে ফেরার সময় এএসআই তোফাজ্জলকে গালমন্দ করেন বাদীর ভাসুর মাসুদ মিয়া। এক পর্যায়ে তিনি চিৎকার করে গ্রামবাসীকে জড়ো করে তোফাজ্জলকে উঠানের আম গাছে বেঁধে মারধর করেন এবং তার পকেটে থাকা টাকা ও হাতঘড়ি লুট করে নেন।

আরো জানা গেছে, খবর পেয়ে কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্তকেন্দ্র ও সুন্দরগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে গ্রামবাসী তাদের ওপর হামলার চেষ্টা চালায়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এএসআই তোফাজ্জলকে উদ্ধার করে সেখান থেকে চলে যায় পুলিশ। ঐ ঘটনার পর গুজব ছড়িয়ে মারধর ও ছিনতাইসহ সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে শনিবার মামলা করেন কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এসআই মিজানুর রহমান। সে মামলায় ২০ জনের নাম উল্লেখ ও ৭০ জনকে অজ্ঞাত হিসেবে আসামি করা হয়।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, কিছুদিন আগে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের উত্তর ধর্মপুর গ্রামের ওই নারীর সৌদি প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে তা বড় ভাইয়ের জমি নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। সেই বিরোধের জেরে জোরপূর্বক গাছ কেটে নেয়ায় ওই নারী ভাসুরের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সেই মামলার তদন্তে গিয়ে ওই প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন এএসআই তোফাজ্জল হোসেন। তিনি মামলার অজুহাতে ওই নারীর সঙ্গে প্রায়ই রাতে দেখা করতেন।

অভিযোগ ওঠে, শুক্রবার রাতে ওই নারীর সঙ্গে বাড়ির গোয়ালঘরে আপত্তিকর অবস্থায় তোফাজ্জল হোসেনকে দেখে ফেলে প্রতিবেশীরা। ঘটনা জানাজানি হলে গ্রামবাসী তাদের আটক করে বাড়ির উঠানের আমগাছে বেঁধে পুলিশে খবর দেয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, খবর পেয়ে কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এএসআই তোফাজ্জল হোসেনকে উদ্ধার করতে গেলে গ্রামবাসী হামলার চেষ্টা চালায়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এএসআই তোফাজ্জল হোসেনকে উদ্ধার করে। ঐ সময় জনগণ ছত্রভঙ্গ হয়ে বিভিন্ন দিকে ছোটাছুটি করতে গিয়ে কয়েকজন আহত হয়।

সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আবদুল্লাহিল জামান জানান, সেদিনের ঘটনার পর কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এএসআই তোফাজ্জল হোসেনকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশের করা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

MD ZANNATUL FERDOUSH

NEWS PURPOSE
Popular Post

তেঁতুলিয়ায় ক্ল ুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটন, বীরগঞ্জ থেকে আসামি আটক

অন্তরঙ্গ অবস্থায় গ্রামবাসীর হাতে এএসআই আটক, পুলিশের মামলায় ১৩ জন গ্রেফতার

Update Time : ১০:১৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ নভেম্বর ২০২১

সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধি: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার উত্তর ধর্মপুর গ্রামে বাদীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় গ্রামবাসীর হাতে এএসআই আটক ও প্রত্যাহারের পর সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ৯০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। ওই মামলায় এখন পর্য ন্গ্রেত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  গ্রেফতারকৃতরা হলেন-ওই গ্রামের  আবদুল খালেক, আমজাদ আলী, সুমন মিয়া, বকুল মিয়া, মকুল মিয়া, জহুরুল ইসলাম, শাহজাহান আলী, আবদুর রাজ্জাক, হামিদুল ইসলাম, রবিউল মিয়া, ইসলাম মিয়া, নাজমুল হক ও রাজু মিয়া। রোববার রাতে মামলা ও গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আবদুল্লাহিল জামান।

এদিকে মামলা ও ১৩ জন গ্রেফতারের ঘটনা জানাজানি হওয়ায় গ্রাম ছেড়েছে উত্তর ধর্মপুরের পুরুষরা। গ্রেফতারের ভয়ে তারা আশ্রয় নিয়েছে আশপাশের গ্রামের আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, উত্তর ধর্মপুর গ্রামের এক নারীর গাছ জোরপূর্বক কেটে নেয়ার অভিযোগ পেয়ে ২৯ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এএসআই তোফাজ্জল হোসেন সাদা পোশাকে তার বাড়িতে যান। পরে ঐ বাড়ি থেকে ফেরার সময় এএসআই তোফাজ্জলকে গালমন্দ করেন বাদীর ভাসুর মাসুদ মিয়া। এক পর্যায়ে তিনি চিৎকার করে গ্রামবাসীকে জড়ো করে তোফাজ্জলকে উঠানের আম গাছে বেঁধে মারধর করেন এবং তার পকেটে থাকা টাকা ও হাতঘড়ি লুট করে নেন।

আরো জানা গেছে, খবর পেয়ে কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্তকেন্দ্র ও সুন্দরগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে গ্রামবাসী তাদের ওপর হামলার চেষ্টা চালায়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এএসআই তোফাজ্জলকে উদ্ধার করে সেখান থেকে চলে যায় পুলিশ। ঐ ঘটনার পর গুজব ছড়িয়ে মারধর ও ছিনতাইসহ সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে শনিবার মামলা করেন কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এসআই মিজানুর রহমান। সে মামলায় ২০ জনের নাম উল্লেখ ও ৭০ জনকে অজ্ঞাত হিসেবে আসামি করা হয়।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, কিছুদিন আগে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের উত্তর ধর্মপুর গ্রামের ওই নারীর সৌদি প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে তা বড় ভাইয়ের জমি নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। সেই বিরোধের জেরে জোরপূর্বক গাছ কেটে নেয়ায় ওই নারী ভাসুরের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সেই মামলার তদন্তে গিয়ে ওই প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন এএসআই তোফাজ্জল হোসেন। তিনি মামলার অজুহাতে ওই নারীর সঙ্গে প্রায়ই রাতে দেখা করতেন।

অভিযোগ ওঠে, শুক্রবার রাতে ওই নারীর সঙ্গে বাড়ির গোয়ালঘরে আপত্তিকর অবস্থায় তোফাজ্জল হোসেনকে দেখে ফেলে প্রতিবেশীরা। ঘটনা জানাজানি হলে গ্রামবাসী তাদের আটক করে বাড়ির উঠানের আমগাছে বেঁধে পুলিশে খবর দেয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, খবর পেয়ে কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এএসআই তোফাজ্জল হোসেনকে উদ্ধার করতে গেলে গ্রামবাসী হামলার চেষ্টা চালায়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এএসআই তোফাজ্জল হোসেনকে উদ্ধার করে। ঐ সময় জনগণ ছত্রভঙ্গ হয়ে বিভিন্ন দিকে ছোটাছুটি করতে গিয়ে কয়েকজন আহত হয়।

সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আবদুল্লাহিল জামান জানান, সেদিনের ঘটনার পর কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এএসআই তোফাজ্জল হোসেনকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশের করা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।