বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুন্দরী রোজীর প্রতারণার ফাঁদে বহু পরিবার

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:১৯:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অক্টোবর ২০২১
  • ১২০ Time View

খোঁজ খবর রিপোর্ট: উম্মে ফাতেমা রোজীর (৩৫) প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বহু পরিবারকে ধ্বংস করেছেন। রোজী নিজেকে অস্ট্রেলিয়ান ইমিগ্রেশনের কনস্যুলার জেনারেল হিসেবে সবার কাছে পরিচয় দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। রোজীর চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর প্রতারণার তথ্য ফাঁদ প্রকাশে নিয়ে এসেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি কর্মকর্তারা জানান, রোজীর বিরুদ্ধে মানব পাচারের কয়েকটি মামলা রয়েছে। রোজীর বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে রমনা থানা, ২০১৭ সালে পল্টন থানা, ২০১৯ সালে একই থানায় আরেকটি এবং ২০১৭ সালে আদালতে রোজীর বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগীরা। এসব মামলায় ওই প্রতারকের পাসপোর্টটি জব্দ করা হলেও তিনি তা ভুল তথ্য দিয়ে তুলে নিয়ে পালিয়েছেন।

সিআইডি কর্মকর্তারা আরও জানান, খিলগাঁও থানায় একটি মামলা তদন্ত করতে গিয়ে দেখতে সুন্দরী হলেও রোজীর চক্রের সন্ধান মেলে। অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে চক্রটি ভুয়া ভিসা ও বিমানের টিকিট দেয়। টাকা নেওয়ার পর ভিসা প্রসেসিং সেন্টার গ্লোবাল বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডের (ভিএফএস) নামে ভুয়া ই-মেইল খুলে প্রার্থীকে ই-মেইল ও কর্মকর্তা সেজে ফোন দিত। তাদের হাতে জাল ভিসা, জাল বিমান টিকিট ও ভুয়া স্বাস্থ্যকার্ড ধরিয়ে দিত।

সিআইডির ঢাকা-মেট্রো পূর্ব বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার কানিজ ফাতেমা বলেন, রোজীর চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর প্রতারণার শিকার ব্যক্তিদের নথিগুলো যাচাই-বাচাই করা হচ্ছে। তবে মূল আসামি বিদেশে রয়েছে। সব তথ্য বিশ্নেষণ করে তাকে দেশে ফেরাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এর আগে ১২ সেপ্টেম্বর সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, উম্মে ফাতেমা রোজী একজন অস্ট্রেলিয়ান প্রবাসী। গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি। মাঝে মধ্যে দেশে এসে টার্গেট করে কয়েকটি পরিবারের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। সেই সম্পর্কের জেরে বাংলাদেশিদের কম খরচে পরিবারসহ অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখায় সে। ভুয়া ভিসা ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় রোজী।

রোজীর খপ্পরে পড়ে ৭৫ লাখ টাকা খুইয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম এ বি এম খাইরুল ইসলাম। এছাড়াও চলচ্চিত্র প্রযোজক বিপ্লব শরীফও রোজীর খপ্পরে পড়ে ১৮ লাখ টাকা খুইয়েছেন। অন্যদিকে ২০১৫ সালে জাহিদা ভূঁইয়া নামের এক নারীর দুই ছেলেকে অস্ট্রেলিয়ায় লেখাপড়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার নামে ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এভাবে বেশ কিছু পরিবারের সদস্যদের খপ্পরে ফেলে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে উম্মে ফাতেমা রোজী।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

MD ZANNATUL FERDOUSH

NEWS PURPOSE

গাইবান্ধায় ঘাঘট তীরে মুক্তমঞ্চ ‘মানব বন্ধন‘ এর উদ্বোধন

সুন্দরী রোজীর প্রতারণার ফাঁদে বহু পরিবার

Update Time : ০৮:১৯:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অক্টোবর ২০২১

খোঁজ খবর রিপোর্ট: উম্মে ফাতেমা রোজীর (৩৫) প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বহু পরিবারকে ধ্বংস করেছেন। রোজী নিজেকে অস্ট্রেলিয়ান ইমিগ্রেশনের কনস্যুলার জেনারেল হিসেবে সবার কাছে পরিচয় দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। রোজীর চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর প্রতারণার তথ্য ফাঁদ প্রকাশে নিয়ে এসেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি কর্মকর্তারা জানান, রোজীর বিরুদ্ধে মানব পাচারের কয়েকটি মামলা রয়েছে। রোজীর বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে রমনা থানা, ২০১৭ সালে পল্টন থানা, ২০১৯ সালে একই থানায় আরেকটি এবং ২০১৭ সালে আদালতে রোজীর বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগীরা। এসব মামলায় ওই প্রতারকের পাসপোর্টটি জব্দ করা হলেও তিনি তা ভুল তথ্য দিয়ে তুলে নিয়ে পালিয়েছেন।

সিআইডি কর্মকর্তারা আরও জানান, খিলগাঁও থানায় একটি মামলা তদন্ত করতে গিয়ে দেখতে সুন্দরী হলেও রোজীর চক্রের সন্ধান মেলে। অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে চক্রটি ভুয়া ভিসা ও বিমানের টিকিট দেয়। টাকা নেওয়ার পর ভিসা প্রসেসিং সেন্টার গ্লোবাল বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডের (ভিএফএস) নামে ভুয়া ই-মেইল খুলে প্রার্থীকে ই-মেইল ও কর্মকর্তা সেজে ফোন দিত। তাদের হাতে জাল ভিসা, জাল বিমান টিকিট ও ভুয়া স্বাস্থ্যকার্ড ধরিয়ে দিত।

সিআইডির ঢাকা-মেট্রো পূর্ব বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার কানিজ ফাতেমা বলেন, রোজীর চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর প্রতারণার শিকার ব্যক্তিদের নথিগুলো যাচাই-বাচাই করা হচ্ছে। তবে মূল আসামি বিদেশে রয়েছে। সব তথ্য বিশ্নেষণ করে তাকে দেশে ফেরাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এর আগে ১২ সেপ্টেম্বর সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, উম্মে ফাতেমা রোজী একজন অস্ট্রেলিয়ান প্রবাসী। গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি। মাঝে মধ্যে দেশে এসে টার্গেট করে কয়েকটি পরিবারের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। সেই সম্পর্কের জেরে বাংলাদেশিদের কম খরচে পরিবারসহ অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখায় সে। ভুয়া ভিসা ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় রোজী।

রোজীর খপ্পরে পড়ে ৭৫ লাখ টাকা খুইয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম এ বি এম খাইরুল ইসলাম। এছাড়াও চলচ্চিত্র প্রযোজক বিপ্লব শরীফও রোজীর খপ্পরে পড়ে ১৮ লাখ টাকা খুইয়েছেন। অন্যদিকে ২০১৫ সালে জাহিদা ভূঁইয়া নামের এক নারীর দুই ছেলেকে অস্ট্রেলিয়ায় লেখাপড়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার নামে ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এভাবে বেশ কিছু পরিবারের সদস্যদের খপ্পরে ফেলে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে উম্মে ফাতেমা রোজী।