
স্টাফ রিপোর্টারঃ আত্নহত্যা নয়, পরকীয়ার জেরে দুই বন্ধু মৃণাল চন্দ্র দাস ও সুমন কান্তি দাসকে হত্যার পর গাইবান্ধা সদরের মিয়ারবাজারে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়। হত্যাকান্ডে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে গ্রেফতারকৃত প্রদীপ চন্দ্র আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাইবান্ধার পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ। রবিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন তিনি।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার জানান, গত ১২ আগষ্ট সকালে সদরের পিয়ারাপুরের একটি গাছের বাগানে একই রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় মৃণাল ও সুমনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পরপরই গ্রেফতার করা হয় তাদের বন্ধু প্রদীপকে। প্রদীপ পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের সাথে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে। পরে শনিবার (১৪ আগষ্ট) আদালতেও স্বীকারোক্তি দেয় সে।
প্রদীপ পিবিআই ও আদালতের কাছে জবানবন্দিতে জানায়, নিহত সুমন কান্তি দাসের মায়ের সাথে তার বন্ধু নিতাই চন্দ্র দাসের অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি জানাজানি হয়। এনিয়ে সুমন ও নিতাই দুই বন্ধুর মধ্যে বিরোধ হয়। সেই বিরোধের জেরে নিতাই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রদীপ চন্দ্র দাসের সহযোগীতায় সুমন কান্তি দাস ও মৃনাল কান্তি দাসকে মাদক সেবনের প্রলোভনে ১১ আগষ্ট রাতে নিতাইয়ের বাড়ি সংলগ্ন ঘটনাস্থলে ডেকে নিয়ে গিয়ে আরও তিন-চারজনের সহযোগীতায় মৃনাল ও সুমনকে হত্যা করে। পরে এ হত্যাকান্ড আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেয়ার জন্য একটি গাছে একই রশির দুই মাথায় মৃনাল ও সুমনকে ঝুলিয়ে রেখে নিতাই, প্রদীপ ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।
পরদিন সকালে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় মৃণাল ও সুমনের মরদেহ দেখে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দুটি গাছে ছুড়ি দিয়ে নিতাইয়ের নাম খোদাই করা ছিলো। একটি গাছে কাচি ও আরেকটি গাছে চাকু আটকানো ছিলো। এমনকি তাদের দুজনের মরদেহের পাশে একটি রশিতে সাজিয়ে রাখা তাদের ব্যবহৃত রুমাল, মাস্ক, তোয়ালে, ব্যাগ, মানিব্যাগ জব্দ করে। ওইদিনই এঘটনায় সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। মামলাটির তদন্তভার পায় পিবিআই। এঘটনায় মুল পরিকল্পনাকারী নিতাই ও তার সহযোগীরা সবাই এখনো ধরাছোয়ার বাইরে।