সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সকল অবসান ঘটিয়ে কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হলো আর্জেন্টিনা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:৫৭:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১
  • ৩৬৮ Time View

খোঁজ খবর ডেস্ক: দীর্ঘ ২৮ বছর পর আন্তর্জাতিক কোনো টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতলো আর্জেন্টিনা। তাও আবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে হারিয়ে। কোপা আমেরিকার ফাইনালে একমাত্র গোলে ব্রাজিলকে হারিয়ে শিরোপা জয় করল মেসির আর্জেন্টিনা। আক্ষেপ তো একটাই ছিল মেসির, আর্জেন্টিনার জার্সিতে কিছু জিততে না পারা। সেই আক্ষেপ আজ ঘুচেছে। তাও আবার ব্রাজিলের মাটিতে।

অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার করা একমাত্র গোলে তিতের অপরাজেয় যাত্রা অবসান ঘটিয়ে কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হলো আর্জেন্টিনা। খেলার ২১ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে রদ্রিগো দি পলের চোখধাঁধানো পাস ধরে দারুণ চিপে বল জালে জড়ান ডি মারিয়া। সেটিই শেষ পর্যন্ত ঘুচিয়েছে মেসির আক্ষেপ।

শুরু থেকেই একে অপরের ওপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছিল দুই দল। তবে ডি মারিয়ার গোলে প্রথমার্ধেই এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ২০০৪ সালের পর কোপা আমেরিকার ফাইনালে গোল করলেন কোনো আর্জেন্টিনার ফুটবলার। রডরিগো ডি পলের বাড়ানো পাস আটকাতে ব্যর্থ হন ব্রাজিলের রেনান লোডি। পা বাড়িয়েছিলেন তিনি, কিন্তু পৌঁছতে পারেননি।

সেই বল পেয়ে যান ডি মারিয়া। একাই এগিয়ে যেতে থাকেন বল নিয়ে। তাঁর গতির সঙ্গে পেরে ওঠেনি কেউ। গোলের সামনে পৌঁছে ব্রাজিলের গোলরক্ষক এডেরসন মোরায়েজের মাথার ওপর দিয়ে বল পাঠিয়ে দেন জালের ভেতর। ২২ মিনিটের মাথায় এগিয়ে দেন দলকে।

প্রতিযোগিতার বাকি ম্যাচে বার বার দেখা গিয়েছে ডি মারিয়াকে প্রথম একাদশ থেকে বাদ দিয়েছিলেন লিয়োনেল স্কালোনি। তবে দি মারিয়া নামতেই আর্জেন্টিনার খেলায় ছন্দ দেখা যেত। ফাইনালে তাই কোনও রকম দেরি করেননি আর্জেন্টিনার প্রশিক্ষক। জানতেন শুরুতেই গোল করতে পারলে বাড়তি আত্মবিশ্বাস পাবে দল। প্রথম একাদশেই রেখেছিলেন দি মারিয়াকে। সুফলও পেলেন।

৩৪ মিনিটের মাথায় বক্সের সামনে ফ্রি কিক পেয়েছিল ব্রাজিল। তবে আর্জেন্টিনার মানব প্রাচীরে ধাক্কা খেয়ে ফেরে নেমারের শট। প্রথমার্ধে বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল ব্রাজিল। গোলে দুটো শটও নিয়েছিল তারা। কিন্তু গোল করতে পারেনি।

ম্যাচ শুরুর ৩ মিনিটের মাথায় হলুদ কার্ড দেখেন ব্রাজিলের ফ্রেড। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই তাঁকে তুলে নেন তিতে। ফ্রেডের বদলে মাঠে নামেন রবের্তো ফিরমিনো। একে অপরের জামা ধরা, চোরাগোপ্তা পা চালানো, ইচ্ছাকৃত ভাবে আটকে রাখা চলতেই থাকে দুই দলের মধ্যে। হলুদ কার্ড দেখেন আর্জেন্টিনার লিয়েন্ড্রো প্যারাদেসও।

৫২ মিনিটের মাথায় গোল পেয়েই গিয়েছিল ব্রাজিল। রিচার্লিসনের শট জালে জড়িয়ে যায়। তবে অফ সাইড ছিলেন তিনি। বাতিল হয়ে যায় সেই গোল। ২ মিনিটের মধ্যে ফের আক্রমণে উঠে আসে ব্রাজিল। ফের সুযোগ পান রিচার্লিসন। তাঁর জোরালো শট আটকে দেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। বার বার আক্রমণে উঠতে থাকে ব্রাজিল। চাপ বাড়তে থাকে আর্জেন্টিনার রক্ষণে। বক্সের মধ্যে এক বার পড়ে যান নেমার। তবে পেনাল্টি দেননি রেফারি।

সময় যত এগিয়েছে ব্রাজিল মরিয়া হয়ে উঠেছে। ফ্রি কিক পেয়েছে, কর্নার পেয়েছে, মাঠে আসা কিছু দর্শকের উৎসাহ পেয়েছে কিন্তু গোল করতে পারেননি নেমাররা। গোল না খাওয়ার পণ করে নেমেছিলেন ওটামেন্ডিরা।

৮৬ মিনিটের মাথায় নেমারের ফ্রি কিক থেকে বল পেয়ে গিয়েছিলেন পরিবর্ত হিসেবে নামা গ্যাবি। তার শট আটকে দেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক মার্টিনেজ।

সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতেছিল আলবিসেলেস্তে শিবির। আন্তর্জাতিক মঞ্চে ট্রফি ছিল না সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়ার মেসির। যে কারণে কম ট্রলের শিকার হতে হয়নি আর্জেন্টাইন সুপারস্টারকে।

এ নিয়ে এই টুর্নামেন্টে ১৫টি শিরোপা হল আর্জেন্টিনার, যৌথভাবে যা সর্বোচ্চ। উরুগুয়েও আর্জেন্টিনার সমানসংখ্যক ট্রফি জিতেছে। এই ম্যাচ দিয়ে ব্রাজিলের বিপক্ষে সর্বশেষ দুই ম্যাচেই জয় পেল আর্জেন্টিনা। আগের জয়টি ছিল ২০১৯ সালে সৌদি আরবে।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

MD ZANNATUL FERDOUSH

NEWS PURPOSE
Popular Post

গাইবান্ধায় বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ইউপি সদস্য খুন

সকল অবসান ঘটিয়ে কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হলো আর্জেন্টিনা

Update Time : ০৯:৫৭:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১

খোঁজ খবর ডেস্ক: দীর্ঘ ২৮ বছর পর আন্তর্জাতিক কোনো টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতলো আর্জেন্টিনা। তাও আবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে হারিয়ে। কোপা আমেরিকার ফাইনালে একমাত্র গোলে ব্রাজিলকে হারিয়ে শিরোপা জয় করল মেসির আর্জেন্টিনা। আক্ষেপ তো একটাই ছিল মেসির, আর্জেন্টিনার জার্সিতে কিছু জিততে না পারা। সেই আক্ষেপ আজ ঘুচেছে। তাও আবার ব্রাজিলের মাটিতে।

অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার করা একমাত্র গোলে তিতের অপরাজেয় যাত্রা অবসান ঘটিয়ে কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হলো আর্জেন্টিনা। খেলার ২১ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে রদ্রিগো দি পলের চোখধাঁধানো পাস ধরে দারুণ চিপে বল জালে জড়ান ডি মারিয়া। সেটিই শেষ পর্যন্ত ঘুচিয়েছে মেসির আক্ষেপ।

শুরু থেকেই একে অপরের ওপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছিল দুই দল। তবে ডি মারিয়ার গোলে প্রথমার্ধেই এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ২০০৪ সালের পর কোপা আমেরিকার ফাইনালে গোল করলেন কোনো আর্জেন্টিনার ফুটবলার। রডরিগো ডি পলের বাড়ানো পাস আটকাতে ব্যর্থ হন ব্রাজিলের রেনান লোডি। পা বাড়িয়েছিলেন তিনি, কিন্তু পৌঁছতে পারেননি।

সেই বল পেয়ে যান ডি মারিয়া। একাই এগিয়ে যেতে থাকেন বল নিয়ে। তাঁর গতির সঙ্গে পেরে ওঠেনি কেউ। গোলের সামনে পৌঁছে ব্রাজিলের গোলরক্ষক এডেরসন মোরায়েজের মাথার ওপর দিয়ে বল পাঠিয়ে দেন জালের ভেতর। ২২ মিনিটের মাথায় এগিয়ে দেন দলকে।

প্রতিযোগিতার বাকি ম্যাচে বার বার দেখা গিয়েছে ডি মারিয়াকে প্রথম একাদশ থেকে বাদ দিয়েছিলেন লিয়োনেল স্কালোনি। তবে দি মারিয়া নামতেই আর্জেন্টিনার খেলায় ছন্দ দেখা যেত। ফাইনালে তাই কোনও রকম দেরি করেননি আর্জেন্টিনার প্রশিক্ষক। জানতেন শুরুতেই গোল করতে পারলে বাড়তি আত্মবিশ্বাস পাবে দল। প্রথম একাদশেই রেখেছিলেন দি মারিয়াকে। সুফলও পেলেন।

৩৪ মিনিটের মাথায় বক্সের সামনে ফ্রি কিক পেয়েছিল ব্রাজিল। তবে আর্জেন্টিনার মানব প্রাচীরে ধাক্কা খেয়ে ফেরে নেমারের শট। প্রথমার্ধে বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল ব্রাজিল। গোলে দুটো শটও নিয়েছিল তারা। কিন্তু গোল করতে পারেনি।

ম্যাচ শুরুর ৩ মিনিটের মাথায় হলুদ কার্ড দেখেন ব্রাজিলের ফ্রেড। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই তাঁকে তুলে নেন তিতে। ফ্রেডের বদলে মাঠে নামেন রবের্তো ফিরমিনো। একে অপরের জামা ধরা, চোরাগোপ্তা পা চালানো, ইচ্ছাকৃত ভাবে আটকে রাখা চলতেই থাকে দুই দলের মধ্যে। হলুদ কার্ড দেখেন আর্জেন্টিনার লিয়েন্ড্রো প্যারাদেসও।

৫২ মিনিটের মাথায় গোল পেয়েই গিয়েছিল ব্রাজিল। রিচার্লিসনের শট জালে জড়িয়ে যায়। তবে অফ সাইড ছিলেন তিনি। বাতিল হয়ে যায় সেই গোল। ২ মিনিটের মধ্যে ফের আক্রমণে উঠে আসে ব্রাজিল। ফের সুযোগ পান রিচার্লিসন। তাঁর জোরালো শট আটকে দেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। বার বার আক্রমণে উঠতে থাকে ব্রাজিল। চাপ বাড়তে থাকে আর্জেন্টিনার রক্ষণে। বক্সের মধ্যে এক বার পড়ে যান নেমার। তবে পেনাল্টি দেননি রেফারি।

সময় যত এগিয়েছে ব্রাজিল মরিয়া হয়ে উঠেছে। ফ্রি কিক পেয়েছে, কর্নার পেয়েছে, মাঠে আসা কিছু দর্শকের উৎসাহ পেয়েছে কিন্তু গোল করতে পারেননি নেমাররা। গোল না খাওয়ার পণ করে নেমেছিলেন ওটামেন্ডিরা।

৮৬ মিনিটের মাথায় নেমারের ফ্রি কিক থেকে বল পেয়ে গিয়েছিলেন পরিবর্ত হিসেবে নামা গ্যাবি। তার শট আটকে দেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক মার্টিনেজ।

সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতেছিল আলবিসেলেস্তে শিবির। আন্তর্জাতিক মঞ্চে ট্রফি ছিল না সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়ার মেসির। যে কারণে কম ট্রলের শিকার হতে হয়নি আর্জেন্টাইন সুপারস্টারকে।

এ নিয়ে এই টুর্নামেন্টে ১৫টি শিরোপা হল আর্জেন্টিনার, যৌথভাবে যা সর্বোচ্চ। উরুগুয়েও আর্জেন্টিনার সমানসংখ্যক ট্রফি জিতেছে। এই ম্যাচ দিয়ে ব্রাজিলের বিপক্ষে সর্বশেষ দুই ম্যাচেই জয় পেল আর্জেন্টিনা। আগের জয়টি ছিল ২০১৯ সালে সৌদি আরবে।