রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, ইউপি সদস্যদের অনাস্থা

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:৫৯:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১
  • ২৮০ Time View

লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার দলগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান রবিন্দ্রনাথ বর্মনের বিরুদ্ধে। হতদরিদ্রর জন্য করোনাকালীন ত্রাণ (জিআর) ও নগদ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্য চেয়ারম্যান রবিন্দ্রনাথ বর্মনের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

শনিবার (১০ জুলাই) বিকেলে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল মান্নান অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে দলগ্রাম ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যসহ নির্বাচিত ১২জন সদস্য গত ৮জুলাই চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করে অনাস্থা প্রস্তাব এনে এ অভিযোগ দেন।

তারও আগে গত ৪ জুলাই চেয়ারম্যানের নানা অনিয়মও দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।

জানা গেছে, করোনায় হতদরিদ্রর জন্য দলগ্রাম ইউনিয়নে ৫৫০ জন সুবিধাভোগীর প্রত্যেককে জিআর বরাদ্দের ৫০০ টাকা করে প্রদানের নির্দেশ থাকলেও অনেকে এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

তালিকা অনুযায়ী বেশ কিছু সুবিধাভোগী ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়ার আগেই চেয়ারম্যান তার লোকদেরকে দিয়ে নামের তালিকায় জাল টিপে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন।

তালিকায় নাম থাকা ৩নং ওয়ার্ডের উত্তর দলগ্রাম এলাকার রনজিৎ কুমার ও তার স্ত্রী স্বপ্না রানী বলেন, মাষ্টার রোলে আমাদের নাম আছে কিন্তু টাকা পাইনি। এভাবে টাকা আত্মসাত হওয়ার ঘটনা টের পাননি তালিকায় নাম থাকা আরও অনেকেই।
মাষ্টার রোলে থাকা ৩নং ওয়ার্ডের ১৮টি নামের টাকা উত্তোলন করেন কালভৈরব বাজারের পল্লী চিকিৎসক ললিত মোহন রায়।

এ বিষয় জানতে চাইলে ওই পল্লী চিকিৎসক জানান, চেয়ারম্যান ১৮টি নামের টাকা দিয়েছে বাজারে রাস্তার কাজ করার জন্য। তালিকায় হতদরিদ্রদের নাম আছে অথচ টাকা নেই। ফলে কৌশলে এ টাকা আত্মসাত করেন চেয়ারম্যান।

অনাস্থা প্রস্তাবে উল্লেখ করেন গত ২৮ জুন করোনাকালীন জিআর বরাদ্দের টাকা বিতরনে চেয়ারম্যান একেকজনকে দিয়ে একাধিক নামের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন এবং ৫নং ওয়ার্ডের তালিকায় নাম আছে টাকা পায়নি অনেকেই। এছাড়া ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে নামসর্বস্ব বিভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে চেয়ারম্যান প্রায় ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। জন্ম নিবন্ধন সনদ দিতে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, প্রত্যায়নপত্র দিতে ৫০ টাকা, ভূমিহীন সনদ দিতে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা আদায় করেন এবং ট্রেড লাইসেন্স ফির টাকাসহ যাবতীয় রাজস্ব রাষ্ট্রের কোষাগারে জমা না করে তিনি নিজেই আত্মসাত করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া পরিষদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সদস্যদের সাথে সমন্বয় না করে তিনি একক সিদ্ধান্তেই সব কার্যক্রম চালান।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান রবিন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, আমি সঠিক ভাবে পরিষদের কাজ কর্ম পরিচালনা করছি, এতে সুবিধা করতে না পারায় তারা (সদস্যরা) আমার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্রমুলক অভিযোগ করেন। যাহা সম্পুর্ন মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল মান্নান জানান, অভিোগ পেয়েছি,বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

MD ZANNATUL FERDOUSH

NEWS PURPOSE

এবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক পাচ্ছেন ২ ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠান

চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, ইউপি সদস্যদের অনাস্থা

Update Time : ১০:৫৯:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১

লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার দলগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান রবিন্দ্রনাথ বর্মনের বিরুদ্ধে। হতদরিদ্রর জন্য করোনাকালীন ত্রাণ (জিআর) ও নগদ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্য চেয়ারম্যান রবিন্দ্রনাথ বর্মনের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

শনিবার (১০ জুলাই) বিকেলে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল মান্নান অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে দলগ্রাম ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যসহ নির্বাচিত ১২জন সদস্য গত ৮জুলাই চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করে অনাস্থা প্রস্তাব এনে এ অভিযোগ দেন।

তারও আগে গত ৪ জুলাই চেয়ারম্যানের নানা অনিয়মও দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।

জানা গেছে, করোনায় হতদরিদ্রর জন্য দলগ্রাম ইউনিয়নে ৫৫০ জন সুবিধাভোগীর প্রত্যেককে জিআর বরাদ্দের ৫০০ টাকা করে প্রদানের নির্দেশ থাকলেও অনেকে এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

তালিকা অনুযায়ী বেশ কিছু সুবিধাভোগী ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়ার আগেই চেয়ারম্যান তার লোকদেরকে দিয়ে নামের তালিকায় জাল টিপে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন।

তালিকায় নাম থাকা ৩নং ওয়ার্ডের উত্তর দলগ্রাম এলাকার রনজিৎ কুমার ও তার স্ত্রী স্বপ্না রানী বলেন, মাষ্টার রোলে আমাদের নাম আছে কিন্তু টাকা পাইনি। এভাবে টাকা আত্মসাত হওয়ার ঘটনা টের পাননি তালিকায় নাম থাকা আরও অনেকেই।
মাষ্টার রোলে থাকা ৩নং ওয়ার্ডের ১৮টি নামের টাকা উত্তোলন করেন কালভৈরব বাজারের পল্লী চিকিৎসক ললিত মোহন রায়।

এ বিষয় জানতে চাইলে ওই পল্লী চিকিৎসক জানান, চেয়ারম্যান ১৮টি নামের টাকা দিয়েছে বাজারে রাস্তার কাজ করার জন্য। তালিকায় হতদরিদ্রদের নাম আছে অথচ টাকা নেই। ফলে কৌশলে এ টাকা আত্মসাত করেন চেয়ারম্যান।

অনাস্থা প্রস্তাবে উল্লেখ করেন গত ২৮ জুন করোনাকালীন জিআর বরাদ্দের টাকা বিতরনে চেয়ারম্যান একেকজনকে দিয়ে একাধিক নামের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন এবং ৫নং ওয়ার্ডের তালিকায় নাম আছে টাকা পায়নি অনেকেই। এছাড়া ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে নামসর্বস্ব বিভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে চেয়ারম্যান প্রায় ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। জন্ম নিবন্ধন সনদ দিতে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, প্রত্যায়নপত্র দিতে ৫০ টাকা, ভূমিহীন সনদ দিতে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা আদায় করেন এবং ট্রেড লাইসেন্স ফির টাকাসহ যাবতীয় রাজস্ব রাষ্ট্রের কোষাগারে জমা না করে তিনি নিজেই আত্মসাত করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া পরিষদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সদস্যদের সাথে সমন্বয় না করে তিনি একক সিদ্ধান্তেই সব কার্যক্রম চালান।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান রবিন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, আমি সঠিক ভাবে পরিষদের কাজ কর্ম পরিচালনা করছি, এতে সুবিধা করতে না পারায় তারা (সদস্যরা) আমার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্রমুলক অভিযোগ করেন। যাহা সম্পুর্ন মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল মান্নান জানান, অভিোগ পেয়েছি,বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।