সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঠিকাদারের কোটি টাকার বালু ব্যবসা, কাজ শেষ না করেই বিল উত্তোলন, অসহায় পানি উন্নয়ন বোর্ড

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:৪০:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১
  • ১৮৫ Time View

লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাট জেলার চারিপাশে নদী। বলা যায় নদী দিয়েই এই জেলাকে আলাদা করা হয়েছে। এই জেলার উপর দিয়ে অনেক গুলো নদী প্রবাহিত হয়েছে। যেমন তিস্তা, ধরলা, রত্নাই ও সতী নদী। আবার এই স্বতী নদীই স্বর্ণামতি,ভ্যাটেশ্বরী নামে পরিচিত।

আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতিবান্ধা, পাটগ্রাম ও সদরসহ ৫টি উপজেলা নিয়ে লালমনিরহাট জেলা গঠিত।

সতী-স্বর্ণামতি-ভাটেশ্বরী নদীর আয়োতন মাত্র ৩৫ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১৫০ মিটার এবং নদীটি সর্পিলাকার। বর্তমানে নদীটির বেশির ভাগ যায়গা ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে এই নদী তীরবর্তী এলাকায় দেখা দেয় বন্যা। অন্যদিকে সুষ্ক মৌসুমে পানি না থাকায় নদী পাড়ের জমি গুলো চাষাবাদ অনুপযোগী হয়ে ওঠে।

নদী পাড়ে বসবাসরত মানুষের বন্যা থেকে বাঁচাতে ও সুষ্ক মৌসুমে ফসলি জমি আবাদে কৃষকদের সহায়তার জন্য লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাওবো) নদীটি খননের উদ্যোগ নেয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে সতী নদীর ১৭ কিলোমিটার খননের কাজ পায় এসএএসআই গ্রুপ নামে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্টান।

একই বছরের ডিসেম্বর মাসে এসএএসআই গ্রুপের হাতিবান্ধা উপজেলার পারুলিয়া বাজারের রেদোয়ান আহমেদ নামে একজনকে এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব দেন। এই এজেন্ট রেদোয়ান সতী নদী খননে এলাকা ভিত্তিক কিছু সাব-ঠিকাদার নিয়োগ করে।

প্রথমে ভেকু (এসকেভেটর) দিয়ে নদী খননের কাজ শুরু করে। শুরুটা ভাল হলেও কাজ চলাকালীন জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট রেদোয়ান আহমেদ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ম্যানেজ করে কাজ বাবদ কোটি টাকার বিল তুলে নেয়।

এরই মাঝে গত বছরের মার্চ মাসে নভেল করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে সরকার লকডাউন ঘোষনা করে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট সতী নদী খনন কাজ হ-জ-ব-র-ল করে বন্ধ করে দেয়। নদী খননের সাব-ঠিকাদারদের কোন টাকা না দিয়ে তাদের জানায় আগামি অর্থ বছর কাজ করা হলে আপনারা আপনাদের বিল পেয়ে যাবেন। অথচ তিনি কাজ শেষ না করেই কোটি টাকার বিল উত্তোলনে করে নিয়েছেন।

নদী খননের জন্য ভাড়া করে আনা ভেকু(এসকেভেটর), নাইট গার্ড ও লেবারদের পাওনা টাকা না দিতে পারায় এবং টাকা ধার করে নদী খননের কাজ করে ধারের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সাব-ঠিকাদাররা দেউলিয়া হয়ে যায়।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজনের ভাই ঠিকাদার প্লাবন বলেন, এসএএসআই গ্রুপের এজেন্ট রেদোয়ান আহমেদ আমাকে ৪ কিলোমিটার নদী খননের কাজ দেয়। কিন্তু করোনার অজুহাতে কাজ বন্ধ করে আমাদের সাথে প্রতারণা করেছে। আমি অনেক টাকা পাই।

স্বর্নামতী ব্রীজ এলাকার সাব-ঠিকাদার বাংটু কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, রেদোয়ান আহমেদ আমাদেরকে পথে বসিয়ে দিয়েছে। আমি তার কাছে প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা পাই। আজ আমি পাওনাদারের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।
২০২১-২০২২ অর্থ বছরে কয়েক দিন কাজ করলেও আবারও তা বন্ধ রাখা হয়েছে।

সরেজমিন গিয়ে পাওয়া যায় আরো ভয়াবহ চিত্র। সতী নদীর ১৭ কিলোমিটার জুড়ে বালু ও মাটি বিক্রয়ের মহোৎসব চলছে। ভাদাই, সারপুকুর, খুনিয়াগাছ, হারাটি ও রাজপুর ইউনিয়নে কয়েকটি যায়গায় পয়েন্ট করে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ট্রাক্টর ও ট্রলিযোগে মাটি বিক্রয় করা হচ্ছে। আর এ সবই হচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে কমিশন ভিত্তিতে। যার একটা অংশ দেয়া হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে। আর এই মাটি ও বালু বিক্রয়ের কাজ নিয়ন্ত্রন করছে এলাকার প্রভাবশালী কিছু লোক। এলাকাবাসী তাদের ভয়ে মুখ খুলতে চায় না।

বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) রাজপুর ইউনিয়নের রাজপুর বাজারের পাশে সতী নদীর ধারে গিয়ে দেখা যায় সালাম মেম্বারের নেতৃত্বে গত বছরের ড্রেজিংকৃত মাটি ও ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী থেকে তুলা বালু বিক্রয় করা হচ্ছে। সেখানে নদীর স্লোভ (পাড়) ট্রলি ঠেকিয়ে মাটি বিক্রয় করা হচ্ছে। গত এক বছর ধরে কোটি টাকার মাটি বালু বিক্রয় করা হয়েছে যা জানে না পানি উন্নয়ন বোর্ড।

রাজপুর এলাকার সতী নদী পাড়ের আনিস, ছালাম ও ময়না বেগম অভিযোগ করে বলেন, এভাবে মাটি বিক্রয় করায় আমরা আরো বেশি হুমকিতে পড়ছি। যে কোন মূহুর্তে বন্যায় তলিয়ে যেতে পারে আমাদের বসতবাড়ী। আপনারা নিজেরাই তো দেখতে পাচ্ছেন রাজপুর টু তিস্তার পাকা সড়ক কিভাবে ভেঙ্গে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, অভিযোগ দিয়ে কোন কাজ হয় না। কারন যেই স্যার আসে তারা কানে কানে কি যেন বলে আর স্যাররা চলে যায়।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট রেদোয়ান আহমেদ কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, দেখেন আমি রংপুরে থাকি আমার ওই সাইড (এলাকা) নিয়ে খুব ঝামেলায় আছি। আমি কাজটি শেষ করব। কবে করবেন এবং লোক দিয়ে নদীর মাটি কেন বিক্রয় করছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অতিরিক্ত মাটি গুলো বিক্রয় করা হচ্ছে। আর তারা আমার কাছে টাকা পায় তাই আমি নিষেধ করলেও তারা আমার কথা শোনে না।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল কাদের সেল ফোনে বলেন, গত বছর কাজটি শুরু করা হয়েছিল কিন্তু করোনার অযুহাতে সতী নদী খনন কাজ বন্ধ করে রাখেন ঠিকাদার। এ বছর কাজ শেষ না করলে আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিব। তবে তিনি কমিশনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। মাটি ও বালু বিক্রয় কেন করছে সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, আমাদের লোকবল কম। তাদের নিষেধ করা হয়েছে তারপরেও তারা কথা শোনে না।

লালমনিরহাট পাওবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ খনন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ঠিকাদারকে অবশিষ্ট কাজ করার বিষয়ে চাপ দেয়া হচ্ছে। যদি ঠিকাদার গড়িমসি করেন তাহলে তার জামানতের অর্থ দিয়ে অসম্পুর্ণ কাজ সম্পুর্ণ করা হবে বলেও তিনি নিশ্চিত করে। নদীর মাটি ও বালু কেন বিক্রয় করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

MD ZANNATUL FERDOUSH

NEWS PURPOSE

এবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক পাচ্ছেন ২ ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠান

ঠিকাদারের কোটি টাকার বালু ব্যবসা, কাজ শেষ না করেই বিল উত্তোলন, অসহায় পানি উন্নয়ন বোর্ড

Update Time : ০৬:৪০:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১

লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাট জেলার চারিপাশে নদী। বলা যায় নদী দিয়েই এই জেলাকে আলাদা করা হয়েছে। এই জেলার উপর দিয়ে অনেক গুলো নদী প্রবাহিত হয়েছে। যেমন তিস্তা, ধরলা, রত্নাই ও সতী নদী। আবার এই স্বতী নদীই স্বর্ণামতি,ভ্যাটেশ্বরী নামে পরিচিত।

আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতিবান্ধা, পাটগ্রাম ও সদরসহ ৫টি উপজেলা নিয়ে লালমনিরহাট জেলা গঠিত।

সতী-স্বর্ণামতি-ভাটেশ্বরী নদীর আয়োতন মাত্র ৩৫ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১৫০ মিটার এবং নদীটি সর্পিলাকার। বর্তমানে নদীটির বেশির ভাগ যায়গা ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে এই নদী তীরবর্তী এলাকায় দেখা দেয় বন্যা। অন্যদিকে সুষ্ক মৌসুমে পানি না থাকায় নদী পাড়ের জমি গুলো চাষাবাদ অনুপযোগী হয়ে ওঠে।

নদী পাড়ে বসবাসরত মানুষের বন্যা থেকে বাঁচাতে ও সুষ্ক মৌসুমে ফসলি জমি আবাদে কৃষকদের সহায়তার জন্য লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাওবো) নদীটি খননের উদ্যোগ নেয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে সতী নদীর ১৭ কিলোমিটার খননের কাজ পায় এসএএসআই গ্রুপ নামে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্টান।

একই বছরের ডিসেম্বর মাসে এসএএসআই গ্রুপের হাতিবান্ধা উপজেলার পারুলিয়া বাজারের রেদোয়ান আহমেদ নামে একজনকে এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব দেন। এই এজেন্ট রেদোয়ান সতী নদী খননে এলাকা ভিত্তিক কিছু সাব-ঠিকাদার নিয়োগ করে।

প্রথমে ভেকু (এসকেভেটর) দিয়ে নদী খননের কাজ শুরু করে। শুরুটা ভাল হলেও কাজ চলাকালীন জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট রেদোয়ান আহমেদ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ম্যানেজ করে কাজ বাবদ কোটি টাকার বিল তুলে নেয়।

এরই মাঝে গত বছরের মার্চ মাসে নভেল করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে সরকার লকডাউন ঘোষনা করে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট সতী নদী খনন কাজ হ-জ-ব-র-ল করে বন্ধ করে দেয়। নদী খননের সাব-ঠিকাদারদের কোন টাকা না দিয়ে তাদের জানায় আগামি অর্থ বছর কাজ করা হলে আপনারা আপনাদের বিল পেয়ে যাবেন। অথচ তিনি কাজ শেষ না করেই কোটি টাকার বিল উত্তোলনে করে নিয়েছেন।

নদী খননের জন্য ভাড়া করে আনা ভেকু(এসকেভেটর), নাইট গার্ড ও লেবারদের পাওনা টাকা না দিতে পারায় এবং টাকা ধার করে নদী খননের কাজ করে ধারের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সাব-ঠিকাদাররা দেউলিয়া হয়ে যায়।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজনের ভাই ঠিকাদার প্লাবন বলেন, এসএএসআই গ্রুপের এজেন্ট রেদোয়ান আহমেদ আমাকে ৪ কিলোমিটার নদী খননের কাজ দেয়। কিন্তু করোনার অজুহাতে কাজ বন্ধ করে আমাদের সাথে প্রতারণা করেছে। আমি অনেক টাকা পাই।

স্বর্নামতী ব্রীজ এলাকার সাব-ঠিকাদার বাংটু কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, রেদোয়ান আহমেদ আমাদেরকে পথে বসিয়ে দিয়েছে। আমি তার কাছে প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা পাই। আজ আমি পাওনাদারের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।
২০২১-২০২২ অর্থ বছরে কয়েক দিন কাজ করলেও আবারও তা বন্ধ রাখা হয়েছে।

সরেজমিন গিয়ে পাওয়া যায় আরো ভয়াবহ চিত্র। সতী নদীর ১৭ কিলোমিটার জুড়ে বালু ও মাটি বিক্রয়ের মহোৎসব চলছে। ভাদাই, সারপুকুর, খুনিয়াগাছ, হারাটি ও রাজপুর ইউনিয়নে কয়েকটি যায়গায় পয়েন্ট করে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ট্রাক্টর ও ট্রলিযোগে মাটি বিক্রয় করা হচ্ছে। আর এ সবই হচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে কমিশন ভিত্তিতে। যার একটা অংশ দেয়া হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে। আর এই মাটি ও বালু বিক্রয়ের কাজ নিয়ন্ত্রন করছে এলাকার প্রভাবশালী কিছু লোক। এলাকাবাসী তাদের ভয়ে মুখ খুলতে চায় না।

বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) রাজপুর ইউনিয়নের রাজপুর বাজারের পাশে সতী নদীর ধারে গিয়ে দেখা যায় সালাম মেম্বারের নেতৃত্বে গত বছরের ড্রেজিংকৃত মাটি ও ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী থেকে তুলা বালু বিক্রয় করা হচ্ছে। সেখানে নদীর স্লোভ (পাড়) ট্রলি ঠেকিয়ে মাটি বিক্রয় করা হচ্ছে। গত এক বছর ধরে কোটি টাকার মাটি বালু বিক্রয় করা হয়েছে যা জানে না পানি উন্নয়ন বোর্ড।

রাজপুর এলাকার সতী নদী পাড়ের আনিস, ছালাম ও ময়না বেগম অভিযোগ করে বলেন, এভাবে মাটি বিক্রয় করায় আমরা আরো বেশি হুমকিতে পড়ছি। যে কোন মূহুর্তে বন্যায় তলিয়ে যেতে পারে আমাদের বসতবাড়ী। আপনারা নিজেরাই তো দেখতে পাচ্ছেন রাজপুর টু তিস্তার পাকা সড়ক কিভাবে ভেঙ্গে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, অভিযোগ দিয়ে কোন কাজ হয় না। কারন যেই স্যার আসে তারা কানে কানে কি যেন বলে আর স্যাররা চলে যায়।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট রেদোয়ান আহমেদ কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, দেখেন আমি রংপুরে থাকি আমার ওই সাইড (এলাকা) নিয়ে খুব ঝামেলায় আছি। আমি কাজটি শেষ করব। কবে করবেন এবং লোক দিয়ে নদীর মাটি কেন বিক্রয় করছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অতিরিক্ত মাটি গুলো বিক্রয় করা হচ্ছে। আর তারা আমার কাছে টাকা পায় তাই আমি নিষেধ করলেও তারা আমার কথা শোনে না।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল কাদের সেল ফোনে বলেন, গত বছর কাজটি শুরু করা হয়েছিল কিন্তু করোনার অযুহাতে সতী নদী খনন কাজ বন্ধ করে রাখেন ঠিকাদার। এ বছর কাজ শেষ না করলে আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিব। তবে তিনি কমিশনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। মাটি ও বালু বিক্রয় কেন করছে সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, আমাদের লোকবল কম। তাদের নিষেধ করা হয়েছে তারপরেও তারা কথা শোনে না।

লালমনিরহাট পাওবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ খনন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ঠিকাদারকে অবশিষ্ট কাজ করার বিষয়ে চাপ দেয়া হচ্ছে। যদি ঠিকাদার গড়িমসি করেন তাহলে তার জামানতের অর্থ দিয়ে অসম্পুর্ণ কাজ সম্পুর্ণ করা হবে বলেও তিনি নিশ্চিত করে। নদীর মাটি ও বালু কেন বিক্রয় করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি।