
সাঘাটা প্রতিনিধি: গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় যমুনা নদীতে গোশল করার সময় পানিতে ডুবে দুই সহদরসহ তিন বোনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সাঘাটা থানা ভবনের অদুরে চকপাড়া চরে যমুনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলো রংপুর নগরের বাবুপাড়া এলাকার সেলিম মিয়ার মেয়ে রিতু আকতার(১৮), সাঘাটা উপজেলার কচুয়া এলাকার মৃত সাইদুর রহমানের মেয়ে প্রিতি আকতার(২০) এবং রংপুর নগরের বাবুপাড়া এলাকার মৃত রানা মিয়ার মেয়ে অনামিকা সরোয়ার ওরফে ফাতেমা(১৮)।
জানা গেছে, প্রিতি ও রিতুর মায়ের নাম পান্না বেগম। প্রিতি ও তার ভাই পার্থ মিয়ার বাবা সাইদুর রহমানের মৃত্যুর পর তাদের মা পান্না বেগমের রংপুর নগরের বাবুপাড়া এলাকার সেলিম মিয়ার সাথে দ্বিতীয় বিয়ে হয়। দ্বিতীয় বিয়ের পর রিতু আকতারের জন্ম হয়। নিহত প্রিতি ও রিতু সম্পর্কে সহদর এবং অনামিকা মামাত বোন। তারা সবাই কলেজে স্নাতক শ্রেণিতে লেখাপড়া করে।
প্রিতির ভাই পার্থ মিয়া জানান, তার বোন প্রিতি, রিতু ও অনামিকা রংপর থেকে সাঘাটা উপজেলার কচুয়া এলাকায় আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে। মঙ্গলবার দুপুরে দিকে রিতু, প্রিতি ও অনামিকা সাঘাটা থানা ভবনের অদুরে চকপাড়া চরে বেড়ানোর উদ্দেশ্যে নৌকায় রওনা দেয়। তারা যমুনা নদী পারি দিয়ে চকপাড়া চরে পৌছায় এবং তারা নৌকা থেকে চকপাড়া চরে নামে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, তিন বোন নৌকা থেকে নেমে চকপাড়া চরে গিয়ে ঘোরাঘুড়ি করছিল। এক পর্যায়ে তাদের একজন গোসল করতে যমুনা নদীতে নামে। এসময় সে গভীর পানিতে তলিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধারের জন্য অন্য দুইজন এগিয়ে গেলে তিনজনই পানিতে তলিয়ে যায়। পরে নৌকার মাঝি চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন ও মাঝিরা নদীতে জাল ফেলে এক ঘন্টা খোঁজাখুজির পর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে গুরুতর অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে নদীর তীরে নিয়ে আসে।
সাঘাটা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার(ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল হামিদ জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌছে তিন বোনকে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করে। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন নিহতদের স্বজনরা।
যমুনা নদীতে ডুবে তিন নারীর মৃত্যুর কথা স্বীকার করে সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) বেলাল হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে থানায় ইউডি মামলা হয়েছে। নিহতদের লাশ রাতেই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন ভরতখালি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট।
লাশ গ্রহনের পর পরিবারের লোকজন রাতেই তাদের মৃতদেহ রংপুর নগরের বাবু পাড়ায় নিয়ে যায়। সেখানে আজ বুধবার সকালে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়।