শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাইবান্ধায় অপহৃত স্কুল ছাত্রী তিনদিন পর পলাশবাড়ী থেকে উদ্ধার

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:১৯:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২১
  • ৪০১ Time View
খোঁজ খবর রিপোর্ট: গাইবান্ধা শহরের ফকিরপাড়া মসজিদের সামন থেকে নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী(১৫)কে অপহরণের তিনদিন পর পলাশবাড়ী পৌর এলাকার একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার বিকেল ৪ টায় গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাহফুজার রহমান ঝটিকা অভিযান চালিয়ে পলাশবাড়ী পৌর এলাকার বাবলা মিয়ার বাড়ি থেকে অপহৃতা স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে। অপহরণের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বাবলা মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ।
এই ঘটনায় অপহৃতার মা বাদি হয়ে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌর এলাকার মোঃ শাহানুর মিয়ার ছেলে মেহেদী হাসান সিয়াম(১৭), তার মামা বাবলা মিয়া(২৬), হরিনমারী গ্রামের রনজু মিয়ার ছেলে অপূর্ব মিয়া(১৮), গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাখালী বালুয়া এলাকার আশরাফুল ইসলামের ছেলে আবির হোসেন(১৭) এবং একই এলাকার বুলবুল (৩৫) এর বিরুদ্ধে গাইবান্ধা থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহারে অপহৃতার মা উল্লেখ করেন,  আমার মেয়েটি গাইবান্ধা স্বাধীনতা রজত জয়ন্তী বালিকা বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী। করোনার কারণে লকডাউনে স্কুল বন্ধ থাকায় আমার মেয়েটি বর্তমানে শহরের ফকিরপাড়া নিজ বাড়ি থেকে তার নানার বাড়ি ডেভিড কোম্পানী পাড়ায় যাতায়াত করতো। সেখানে যাতায়াত করার সময় আসামী পলাশবাড়ী পৌর এলাকার মোঃ শাহানুর মিয়ার ছেলে মেহেদী হাসান সিয়াম আমার মেয়েকে ভালোবাসা এবং পরবর্তীতে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। সিয়ামকে সহযোগিতা করতো তার মামা বাবলা মিয়াসহ পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনমারী গ্রামের রনজু মিয়ার ছেলে অপূর্ব মিয়া, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাখালী বালুয়া এলাকার আশরাফুল ইসলামের ছেলে আবির হোসেন এবং একই এলাকার বুলবুল। এজাহারে বলা হয়, আসামীরা আমার মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব ও বিয়ের প্রস্তাব দেয়। বিষয়টি আমার মেয়ে আমাকে জানালে আমি মেহেদী হাসান সিয়ামকে মৌখিকভাবে শাসন করি এবং অন্যান্য আসামীদের বিচার দেই। এতে আসামী বাবলা মিয়া  ও বুলবুল আহম্মেদ উল্টো সিয়ামের সাথে আমার নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দিতে বলেন। আমি আমার নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দিতে অস্বীকার করলে আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।
এজাহারে স্কুল ছাত্রীর মা উল্লেখ করেন, গত ১৫ এপ্রিল রাত পৌনে আট টারদিকে শহরের ফকিরপাড়ার বাড়ি হতে ঔষধ কেনার জন্য গাইবান্ধা ফায়ার সার্ভিস মোড়ে যায়। সেখান থেকে ফেরার পথে ফকিরপাড়া মসজিদের সামন থেকে আসামীরা জোরপূর্বক স্কেকুল ছাত্রীটিকে মাইক্রোযোগে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এই ঘটনার পর আসামী বাবলা মিয়ার বাড়িতে অপহৃতার মা লোকজন নিয়ে হাজির হয়ে মেয়েকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা তার মেয়েকে সিয়ামের সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্য জোর করে। স্কুল ছাত্রীর মা নাবালিকা মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় আসামীরা তাদের ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে বাড়ি হতে তাড়িয়ে দেয়। এই ঘটনায় স্কুল ছাত্রীর ভগ্নিপতি ১৫ এপ্রিল গাইবান্ধা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন।
পরবর্তীতে মেয়েকে খুজে না পাওয়ায় ১৭ এপ্রিল রাত পৌনে ৮টায় অপহৃতার মা মোছাঃ মিনারা বেগম বাদি হয়ে দন্ডবিধি ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন(সংশোধিত/০৩) এর ৭/৩০ ধারায় গাইবান্ধা সদর থানায় মামলা করেন । মামলা নম্বর ৩৯, তারিখ ১৭.০৪/২০২১।
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাহফুজার রহমান আজ বিকেল ৫টায় খোঁজ খবরকে বলেন,  গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় ফোর্সসহ আজ রোববার বিকেল ৪টায় পলাশবাড়ী পৌর এলাকায় আসামী মেহেদী হাসান সিয়ামের চাচার বাড়ি “তন্ময় ভিলা” তল্যাশি চালিয়ে অপহৃতা মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। অপহরণের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সিয়ামের মামা তালিকাভুক্ত আসামী বাবলা মিয়াকে আটক করা হয়েছে। ওসি বলেন, উদ্ধারকৃত মেয়েটিকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভিকটিম নিজেই বলছে তাকে অপহরণ করা হয়নি। সেচ্ছায় আসামী মেহেদী হাসানের সাথে চলে গেছে এবং তাদের গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় বিবাহ পড়ানো হয়েছে। কোথায় কার বাড়িতে বিবাহ পড়ানো হয়েছে তা সঠিক করে বলতে পারছে না। যেহেতু মেয়েটি নাবালক তাই আগামীকাল ভিটটিমকে আদালতে হাজির করা হবে। আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

MD ZANNATUL FERDOUSH

NEWS PURPOSE

গাইবান্ধায় বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ইউপি সদস্য খুন

গাইবান্ধায় অপহৃত স্কুল ছাত্রী তিনদিন পর পলাশবাড়ী থেকে উদ্ধার

Update Time : ০৬:১৯:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২১
খোঁজ খবর রিপোর্ট: গাইবান্ধা শহরের ফকিরপাড়া মসজিদের সামন থেকে নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী(১৫)কে অপহরণের তিনদিন পর পলাশবাড়ী পৌর এলাকার একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার বিকেল ৪ টায় গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাহফুজার রহমান ঝটিকা অভিযান চালিয়ে পলাশবাড়ী পৌর এলাকার বাবলা মিয়ার বাড়ি থেকে অপহৃতা স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে। অপহরণের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বাবলা মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ।
এই ঘটনায় অপহৃতার মা বাদি হয়ে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌর এলাকার মোঃ শাহানুর মিয়ার ছেলে মেহেদী হাসান সিয়াম(১৭), তার মামা বাবলা মিয়া(২৬), হরিনমারী গ্রামের রনজু মিয়ার ছেলে অপূর্ব মিয়া(১৮), গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাখালী বালুয়া এলাকার আশরাফুল ইসলামের ছেলে আবির হোসেন(১৭) এবং একই এলাকার বুলবুল (৩৫) এর বিরুদ্ধে গাইবান্ধা থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহারে অপহৃতার মা উল্লেখ করেন,  আমার মেয়েটি গাইবান্ধা স্বাধীনতা রজত জয়ন্তী বালিকা বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী। করোনার কারণে লকডাউনে স্কুল বন্ধ থাকায় আমার মেয়েটি বর্তমানে শহরের ফকিরপাড়া নিজ বাড়ি থেকে তার নানার বাড়ি ডেভিড কোম্পানী পাড়ায় যাতায়াত করতো। সেখানে যাতায়াত করার সময় আসামী পলাশবাড়ী পৌর এলাকার মোঃ শাহানুর মিয়ার ছেলে মেহেদী হাসান সিয়াম আমার মেয়েকে ভালোবাসা এবং পরবর্তীতে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। সিয়ামকে সহযোগিতা করতো তার মামা বাবলা মিয়াসহ পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনমারী গ্রামের রনজু মিয়ার ছেলে অপূর্ব মিয়া, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাখালী বালুয়া এলাকার আশরাফুল ইসলামের ছেলে আবির হোসেন এবং একই এলাকার বুলবুল। এজাহারে বলা হয়, আসামীরা আমার মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব ও বিয়ের প্রস্তাব দেয়। বিষয়টি আমার মেয়ে আমাকে জানালে আমি মেহেদী হাসান সিয়ামকে মৌখিকভাবে শাসন করি এবং অন্যান্য আসামীদের বিচার দেই। এতে আসামী বাবলা মিয়া  ও বুলবুল আহম্মেদ উল্টো সিয়ামের সাথে আমার নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দিতে বলেন। আমি আমার নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দিতে অস্বীকার করলে আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।
এজাহারে স্কুল ছাত্রীর মা উল্লেখ করেন, গত ১৫ এপ্রিল রাত পৌনে আট টারদিকে শহরের ফকিরপাড়ার বাড়ি হতে ঔষধ কেনার জন্য গাইবান্ধা ফায়ার সার্ভিস মোড়ে যায়। সেখান থেকে ফেরার পথে ফকিরপাড়া মসজিদের সামন থেকে আসামীরা জোরপূর্বক স্কেকুল ছাত্রীটিকে মাইক্রোযোগে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এই ঘটনার পর আসামী বাবলা মিয়ার বাড়িতে অপহৃতার মা লোকজন নিয়ে হাজির হয়ে মেয়েকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা তার মেয়েকে সিয়ামের সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্য জোর করে। স্কুল ছাত্রীর মা নাবালিকা মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় আসামীরা তাদের ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে বাড়ি হতে তাড়িয়ে দেয়। এই ঘটনায় স্কুল ছাত্রীর ভগ্নিপতি ১৫ এপ্রিল গাইবান্ধা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন।
পরবর্তীতে মেয়েকে খুজে না পাওয়ায় ১৭ এপ্রিল রাত পৌনে ৮টায় অপহৃতার মা মোছাঃ মিনারা বেগম বাদি হয়ে দন্ডবিধি ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন(সংশোধিত/০৩) এর ৭/৩০ ধারায় গাইবান্ধা সদর থানায় মামলা করেন । মামলা নম্বর ৩৯, তারিখ ১৭.০৪/২০২১।
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাহফুজার রহমান আজ বিকেল ৫টায় খোঁজ খবরকে বলেন,  গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় ফোর্সসহ আজ রোববার বিকেল ৪টায় পলাশবাড়ী পৌর এলাকায় আসামী মেহেদী হাসান সিয়ামের চাচার বাড়ি “তন্ময় ভিলা” তল্যাশি চালিয়ে অপহৃতা মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। অপহরণের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সিয়ামের মামা তালিকাভুক্ত আসামী বাবলা মিয়াকে আটক করা হয়েছে। ওসি বলেন, উদ্ধারকৃত মেয়েটিকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভিকটিম নিজেই বলছে তাকে অপহরণ করা হয়নি। সেচ্ছায় আসামী মেহেদী হাসানের সাথে চলে গেছে এবং তাদের গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় বিবাহ পড়ানো হয়েছে। কোথায় কার বাড়িতে বিবাহ পড়ানো হয়েছে তা সঠিক করে বলতে পারছে না। যেহেতু মেয়েটি নাবালক তাই আগামীকাল ভিটটিমকে আদালতে হাজির করা হবে। আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।