নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সাভারের আশুলিয়ায় ফেইসবুকে “কাউয়ামুক্ত যুবলীগ চাই” পোষ্টে মন্তব্য করায় এক শ্রমিকের ওপর হামলা করেছে ইয়ারপুর ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা কর্মীরা। এঘটনায় রাজন ভুঁইয়া (৩৫) নামের এক যুবলীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আশুলিয়ার বেরন এলাকার সোনামিয়া মার্কেট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে গত (১২ নভেম্বর) মঙ্গলবার দুপুরে আশুলিয়ার বেরন এলাকার তেতুলতলায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে আশুলিয়া থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী।
গ্রেফতারকৃত যুবলীগ নেতা আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকার সোনামিয়া মার্কেটের বারেক ভুঁইয়ার ছেলে। এছাড়া অন্যান্য আসামিরা হলেন, ইয়ারপুর ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আবুল সরকারের ছেলে সোহেল সরকার (৩২), জুয়েল মোল্লা (৩৫), আমির হোসেনের ছেলে শাহিন (২২), মজিবরের ছেলে শিপু (৩০), আরাফাত (৩২), সাগর (২৮) ও টগর (২৮)।
ভুক্তভোগী হারুন (২৫) মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার বাকসাট্টা গ্রামের আব্দুল আউয়ালের ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি হ্যান্ড গ্লোবস কারখানায় কর্মরত ছিলেন।
জানা যায়, ৮মামলার আসামি, বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারী নেতা কর্মীদের নিয়ে আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহবায়ক কমিটি গঠন করার অভিযোগ তুলে আশুলিয়ার বিভিন্ন গুরত্বপুর্ণ পয়েন্টে “কাউয়ামুক্ত যুবলীগ চাই” লেখা ফেস্টুন টাঙ্গিয়ে দেয় সাবেক যুবলীগ কর্মীরা। পরে রাতের আঁধারে বর্তমান যুবলীগ কর্মীরা ওই ফেস্টুন খুলতে গেলে দুই গ্রুপেরে সংঘর্ষ হয়। এ নিয়ে মামলা ও সাবেক এক যুবলীগ কর্মীকে গ্রেফতারও করা হয়। পরে “কাউয়ামুক্ত যুবলীগ চাই” এমন একটি ফেইসবুক পোষ্টে মন্তব্য করায় আবার গত (১২ নভেম্বর) মঙ্গলবার হামলার স্বীকার হলেন এই শ্রমিক।
ভুক্তভোগী পোশক শ্রমিক হারুন বলেন, “কাউয়ামুক্ত যুবলীগ চাই” এমন একটি ফেইসবুক পোষ্টে অতি উৎসাহী হয়ে আমি মন্তব্য করি। পর দিন অফিস থেকে দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। এসময় সাগর নামের এক জন আমাকে ডেকে নিয়ে বেরন এলাকার তেতুলতলা নামক স্থানে নিয়ে যুবলীগের নেতাকর্মীরা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। পরে এ ব্যাপারে আমি মামলা দায়ের করি।
মামলার এজাহার থেকে জানা য়ায়, হারুন নামের ওই শ্রমিক অফিস থেকে দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলে তাকে তেতুলতলার মোড়ে ডেকে নিয়ে লাঠি, লোহার রড, লোহার পাইপসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ইয়ারপুর ইউনিয়ন যুবলীগের নেতাকর্মীরা তার ওপর হামলা চালায়। পরে তার ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে তার কাছে থাকা একটি অ্যানড্রয়েড ফোন, গলায় থাকা একটি স্বর্ণের চেইন ও পকেটে থাকা ১৭০০ টাকা নিয়ে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে তারা পালিয়ে যায়। এসময় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎক তাকে ঢাকা মেডেকেলে পাঠিয়ে দেয়। একটু সুস্থ্য হয়ে গতকাল তিনি মামলা দায়ের করেন।
এব্যাপারে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম সুমন বলেন, মামলার ভিত্তিতে ২ নম্বর আসামি রাজন ভুঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য, গ্রেফতার ওই যুবলীগ নেতা এর আগেও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে এক পোশাক শ্রমিকের পা ভেঙ্গে দেয়। এ ঘটনায় গ্রেফতার রাজন ভুঁইয়াকে প্রধান আসমি করে মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী শ্রমিক।