সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নওগাঁর মান্দায় টেন্ডার ছাড়াই গাছ কেটে সাবাড়, দেখার কেউ নেই

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:৩৩:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১
  • ৩২২ Time View

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দায় আত্রাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের রাস্তার গাছ টেন্ডার ছাড়াই কেটে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার নুরুল্লাবাদ ইউনিয়নের পার-নুরুল্লাবাদ এলাকায় আত্রাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় ৬০০ ফুট সড়ক থেকে গাছ কাটা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শুক্রবার (৯ এপ্রিল) ছুটির দিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে এলাকায় প্রভাবশালী প্রদীপ হাওলাদার ও তার লোকজন টেন্ডার ছাড়াই গাছ কেটে অল্প দামের বিক্রি করে দিয়েছেন।
জানা গেছে, নুরুল্লাবাদ ইউনিয়নের পার-নুরুল্লাবাদ এলাকায় আত্রাই নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় ৬০০ ফুট রাস্তার দুই পাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। কিছুদিন আগে বাঁধ সংস্কারে টেন্ডার হয়েছে। এ সুযোগে বাঁধের রাস্তায় থাকা বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কোনো টেন্ডার ছাড়াই পাঁজরভাঙ্গা গ্রামের মৃত সুবল চন্দ্র হাওলাদারের ছেলে প্রদীপ হাওলাদার ও তার লোকজনেরা কেটে বিক্রি করে দিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাঁধের রাস্তায় দেড় শতাধিক আম, কাঁঠাল, জাম ও বাবলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ছিল। ওইসব গাছের দাম কমপক্ষে ৬০-৭০ হাজার টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু মাত্র ২৫ হাজার টাকায় সেই গাছ বিক্রির কথা বলা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আমজাদ হোসেন, আনোয়ার হোসেন, আমিনুল ইসলাম অভিযোগ করেন, রাস্তার আম ও কাঁঠাল গাছ তাদের লাগানো। এখন তারা (প্রদীপ ও তার লোকজন) জোর করে গাছ কেটে নিচ্ছেন। গাছ কেটে নেয়ার কারণ জানতে চাইলে জানানো হচ্ছে- ‘ফল খেয়েছেন। গাছ তো খেতে পারবেন না।’
গাছের ক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাঁধের ৬০০ ফুটের মধ্যে যত গাছ আছে, তা ২৫ হাজার টাকা দিয়ে প্রদীপ হাওলাদারের কাছ থেকে কিনেছি।’
জানতে চাইলে প্রদীপ হাওলাদার বলেন, ‘উপজেলা বন কর্মকর্তা আহমদ আলী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মুনসুর আলীর মৌখিক নির্দেশে আমরা গাছগুলো কেটেছি।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস সহায়ক মুনসুর আলী বলেন, ‘রাস্তা সংস্কারে মাটির কাজের জন্য টেন্ডার হয়েছে। রাস্তার গাছ অপসারণ করতে ইতোমধ্যে উপজেলা বন বিভাগে চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে কে বা কারা গাছ কাটছে, তা আমার জানা নেই। আর গাছ কাটার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততাও নেই।’
উপজেলা বন কর্মকর্তা আহমদ আলী মণ্ডল বলেন, ‘গাছ কাটার ব্যাপারে কোনো টেন্ডার হয়নি। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা মৌখিকভাবে আমাকে বিষয়টি অবগত করেছেন। আমি জানিয়েছি কিছু নিয়মনীতি আছে। সে অনুসারে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বরাবর লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে।’
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খান বলেন, ‘গাছ কাটার জন্য বিভাগকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে গাছের টেন্ডার হয়েছে কি-না তা আমার জানা নেই।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

MD ZANNATUL FERDOUSH

NEWS PURPOSE
Popular Post

গাইবান্ধায় বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ইউপি সদস্য খুন

নওগাঁর মান্দায় টেন্ডার ছাড়াই গাছ কেটে সাবাড়, দেখার কেউ নেই

Update Time : ০৬:৩৩:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দায় আত্রাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের রাস্তার গাছ টেন্ডার ছাড়াই কেটে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার নুরুল্লাবাদ ইউনিয়নের পার-নুরুল্লাবাদ এলাকায় আত্রাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় ৬০০ ফুট সড়ক থেকে গাছ কাটা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শুক্রবার (৯ এপ্রিল) ছুটির দিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে এলাকায় প্রভাবশালী প্রদীপ হাওলাদার ও তার লোকজন টেন্ডার ছাড়াই গাছ কেটে অল্প দামের বিক্রি করে দিয়েছেন।
জানা গেছে, নুরুল্লাবাদ ইউনিয়নের পার-নুরুল্লাবাদ এলাকায় আত্রাই নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় ৬০০ ফুট রাস্তার দুই পাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। কিছুদিন আগে বাঁধ সংস্কারে টেন্ডার হয়েছে। এ সুযোগে বাঁধের রাস্তায় থাকা বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কোনো টেন্ডার ছাড়াই পাঁজরভাঙ্গা গ্রামের মৃত সুবল চন্দ্র হাওলাদারের ছেলে প্রদীপ হাওলাদার ও তার লোকজনেরা কেটে বিক্রি করে দিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাঁধের রাস্তায় দেড় শতাধিক আম, কাঁঠাল, জাম ও বাবলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ছিল। ওইসব গাছের দাম কমপক্ষে ৬০-৭০ হাজার টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু মাত্র ২৫ হাজার টাকায় সেই গাছ বিক্রির কথা বলা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আমজাদ হোসেন, আনোয়ার হোসেন, আমিনুল ইসলাম অভিযোগ করেন, রাস্তার আম ও কাঁঠাল গাছ তাদের লাগানো। এখন তারা (প্রদীপ ও তার লোকজন) জোর করে গাছ কেটে নিচ্ছেন। গাছ কেটে নেয়ার কারণ জানতে চাইলে জানানো হচ্ছে- ‘ফল খেয়েছেন। গাছ তো খেতে পারবেন না।’
গাছের ক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাঁধের ৬০০ ফুটের মধ্যে যত গাছ আছে, তা ২৫ হাজার টাকা দিয়ে প্রদীপ হাওলাদারের কাছ থেকে কিনেছি।’
জানতে চাইলে প্রদীপ হাওলাদার বলেন, ‘উপজেলা বন কর্মকর্তা আহমদ আলী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মুনসুর আলীর মৌখিক নির্দেশে আমরা গাছগুলো কেটেছি।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস সহায়ক মুনসুর আলী বলেন, ‘রাস্তা সংস্কারে মাটির কাজের জন্য টেন্ডার হয়েছে। রাস্তার গাছ অপসারণ করতে ইতোমধ্যে উপজেলা বন বিভাগে চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে কে বা কারা গাছ কাটছে, তা আমার জানা নেই। আর গাছ কাটার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততাও নেই।’
উপজেলা বন কর্মকর্তা আহমদ আলী মণ্ডল বলেন, ‘গাছ কাটার ব্যাপারে কোনো টেন্ডার হয়নি। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা মৌখিকভাবে আমাকে বিষয়টি অবগত করেছেন। আমি জানিয়েছি কিছু নিয়মনীতি আছে। সে অনুসারে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বরাবর লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে।’
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খান বলেন, ‘গাছ কাটার জন্য বিভাগকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে গাছের টেন্ডার হয়েছে কি-না তা আমার জানা নেই।’