খোঁজ খবর ডেস্ক: বাংলাদেশ রেলওয়ে লোকসান কমাতে ও আয় বাড়াতে অব্যবহৃত জমির সৎ ব্যবহারের মাধ্যমে মাল্টিমোডাল হাব, মেডিকেল কলেজ, শপিংমল, পাঁচ তারকা হোটেলসহ বাণিজ্যিক অবকাঠামো বানানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। গতকাল বৃহষ্পতিবার রেলভবনে আয়োজিত এ সংক্রান্ত এক বৈঠকের কার্যপত্র থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
তথ্যমতে, রাজধানীর কমলাপুর ও বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক মাল্টিমডাল হাব তৈরি করবে রেলওয়ে। ২০২৫ সালের মধ্যে কমলাপুরের মাল্টিমোডাল হাব নির্মাণের আনুমানিক ব্যয় হবে ৮০০ কোটি টাকা। এ হাব তৈরির বিষয়ে একটি ডিজাইন তৈরি করেছে জাপানের কাজিমা করপোরেশন। যাতে মেট্রো রেলের ৬টি রুট কমলাপুরে জুড়তে বর্তমান স্টেশনের কিছু অংশ ভাঙা হতে পারে। যদিও গতকালের বৈঠকে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে রেলসূত্র জানিয়েছে।
এছাড়া ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিমান বন্দরেও মাল্টিমোডাল হাব তৈরি করা হবে। এ প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৫ সাল পর্যন্ত। এ হাব দুটির জন্য বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে রেলওয়ে। এ ছাড়া ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে তেজগাঁও স্টেশনে একটি বিজনেস হাব তৈরির প্রস্তাব করা হয়েছে।
কার্যপত্র থেকে আরো জানা গেছে- বহু প্রতীক্ষিত ঢাকা শহরের চতুর্দিকে ৭০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বৃত্তাকার রেললাইন তৈরির জন্য ফিজিবিলিটি টেস্টের কাজে চায়না রেলওয়ে কোম্পানি সিজুইনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় রেলওয়ে। যা ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।
এছাড়া রেলওয়ের ধীরাশ্রম স্টেশনে ২ হাজার ১৫৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি নতুন আইসিডি নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। ২ বছরের মধ্যে এটির অবকাঠামো নির্মান হলেও চালু হতে সময় লাগবে ৩০ বছর। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে রেলের জমিতে ৫টি অত্যাধুনিক হাসপাতাল নির্মানের প্রস্তাব পাশ করেছে রেলওয়ে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম রেল হাসপাতাল সংলগ্ন জমিতে ৩৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশ্বমানের হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ, ঢাকার কমলাপুর হাসপাতালের পাশে অব্যবহৃত জমিতে ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক হাসপাতাল ও নার্সিং ইনস্টিটিউট, নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৬০০ কোটি টাক ব্যয়ে মেডিকেল কলেজ, পাবনার পাকশী রেলওয়ে হাসপাতাল সংলগ্ন জমিতে ২৫০ শয্যার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, খুলনা রেলের অব্যবহৃত জমিতে একটি অত্যাধুনিক মেডিকেল কলেজ ও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণ করবে রেলওয়ে।
আবার খুলনা স্টেশনের কাছে একটি শপিংমল কাম গেস্ট হাউস, চট্টগ্রাম জাকির হোসেন রোডে বিশ্বমানের পাঁচ তারকা হোটেল, চট্টগ্রাম পোলোগ্রাউণ্ড এলাকায় ৮৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বহুতল বিশিষ্ট রেসিডেনন্সিয়াল কাম কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স, চট্টগ্রাম রেলের পে এণ্ড ক্যাশ অফিসের পূর্ব ধারে ৪৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি শপিংমল কাম গেস্টহাউস, সৈয়দপুরে রেলের জমিতে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম স্টেশন এলাকায় ৮৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি আইকন ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়ে রেলওয়ে। জিটুজি ও পিপিপির অধীনে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। বেশ কয়েকটি প্রকল্পের জন্য টেণ্ডার শেষ হলেও বাকি প্রকল্পের জন্য দ্রুত টেণ্ডার করা হবে বলে রেলসূত্রে জানা গেছে।