শেয়ারিং অ্যাপ লাইকিতে পরিচয়। সে সুবাদে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। কিছুদিন পর সেই বন্ধুত্ব গড়ায় প্রেমের সম্পর্কে। এরপর থেকেই প্রেমিকের কাছে বিভিন্ন ধরনের বায়না ধরেন প্রেমিকা। আর প্রেমিকও সুন্দরী প্রেমিকার বায়না মেটাতে উঠেপড়ে লাগেন। ধার দেন নিজের ঘাম ঝরানো পরিশ্রমের সোয়া এক কোটি টাকা।
শেষমেশ সেই ধারের টাকাই কাল হয়ে দাঁড়ায়। প্রেমিকার কাছে টাকা চাইলেই সম্পর্কে ফাটল ধরে। টাকা না পেয়ে নিরুপায় হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন মোজাম্বিক প্রবাসী মিজানুর রহমান নীল।
১০ মার্চ বেলা ১১টায় দেশটির তেতে প্রদেশের স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মিজানুর। তিনি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পূর্ব কাহারঘোনা এলাকার সিদ্দীক আহাম্মেদের ছেলে।
জানা গেছে, লাইকি সূত্রে চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর এলাকার কলেজছাত্রী ফৌজিয়া আনোয়ারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক জড়ান মিজানুর। পাশাপাশি অনলাইনে সম্পর্ক গড়ে ওঠে পতেঙ্গার ঐশী মির্জা নামে এক পার্লার ব্যবসায়ীর সঙ্গেও। আবদার মেটাতে বিভিন্ন সময় মোবাইল ব্যাংকিং ও ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের টাকা ধার দেন মিজানুর। কিন্তু সেই টাকা ফেরত চাইলেই তাদের সম্পর্কে ভাটা পড়ে। এ ঘটনায় চাপ নিতে না পেরে ঐশী মির্জাকে লাইকিতে লাইভে রেখে কীটনাশক পান করেন তিনি। হাসপাতালে নেয়ার কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়।
মিজানের বড় ভাই প্রবাসী মো. ওমর কাজী বলেন, আমরা চার ভাই মোজাম্বিকে রয়েছি। এখানে আমরা ব্যবসা করি। ২০১৪ সালে ছোট ভাই মিজানুরকে এখানে নিয়ে আসি। ব্যবসার হিসাব ও টাকা-পয়সা তার কাছে ছিল। এমন একটা ঘটনা ঘটে যাবে আমরা ভাবিনি।
তিনি বলেন, মিজানুরের হিসাবে প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা আমরা গরমিল পাচ্ছি। ধারণা করছি প্রতারকদের পেছনে টাকাগুলো খরচ করেছে সে। এছাড়া এ ব্যাপারে আমরা মোজাম্বিক পুলিশের সহযোগিতা নিচ্ছি। মূল প্রতারকদের আইনের আওতায় আনতে দুই দেশের পুলিশ কাজ শুরু করেছে। মিজানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও দেশে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ফৌজিয়া আনোয়ার মুঠোফোনে জানান, যা বলার আদালতে বলবেন তিনি। তিনি গণমাধ্যমকে কিছু বলবেন না।