সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হামলাকারীদের দায় দায়িত্ব হরতাল আহ্বানকারী হেফাজতে ইসলামকেই নিতে হবে-উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:৫৪:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ মার্চ ২০২১
  • ২৬৪ Time View

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যেসব সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ও হিন্দুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে তার সব দায় দায়িত্ব হরতাল আহ্বানকারী হেফাজতে ইসলামকেই নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন,‘গত রোববার বেলা ১১টার পর হেফাজতিরা বিনা উস্কানিকে শহরে তাণ্ডব লীলা চালায়। হামলার সময় সদর থানা থেকে মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে যে, ‘বিক্ষোভকারী ভাইয়েরা আপনারা আমাদের ওপর ঢিল ছুঁড়বেন না, আমরা আপনাদের সাথে আছি’ মাইকে এই ঘোষণা শোনার পর হামলাকারীরা বিপুল উৎসাহে একের পর এক সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। আজ সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তিনি।

উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ‘গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানের দিন বিকেল ৩টার পর থেকেই হেফাজতিরা শহরে তাণ্ডব শুরু করে। তারা রেলস্টেশন ভাঙচুর করে কন্ট্রোল প্যানেল জ্বালিয়ে দিয়েছে। এরপর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সব ট্রেনের যাত্রা বিরতি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এই প্রথম রাজনৈতিক নেতাদের বাড়িতে হামলা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর এই পর্যন্ত কোনও হরতালে রাজনৈতিক নেতাদের বাড়িতে হামলা হয়নি। কিন্তু এবারই তারা পর্যায়ক্রমে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকারের বাড়ি, তার শ্বশুরবাড়ি, তার কার্যালয়, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদৎ হোসেন শোভনের বাড়ি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেলের বাড়ি, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জামাল খানের বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়।’

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জানান, শুক্রবার তাণ্ডব চালিয়ে তারা সার্কিট হাউসের সামনে রাখা ডিসিপুলের ৯টি গাড়ি, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা মৎস্য অফিস, সিভিল সার্জনের কার্যালয় ভাঙচুর করে। হামলাকারীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজউদ্দিন জামিকে হত্যার উদ্দেশে মারধর করে। আরও অনেক সাংবাদিককে নাজেহাল করে বলেও জানান তিনি।

এমপি বলেন, হামলা-তাণ্ডবের সময় প্রশাসন নীরব ছিল। ফায়ার সার্ভিসের কোনও ভূমিকা ছিল না। প্রশাসন একটু সক্রিয় হলে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই কম হতো।

হামলার সময় কেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিষ্ক্রিয় ছিল এমন প্রশ্নের উত্তরে সংসদ সদস্য মোকতাদির বলেন, সেটা তারাই ভালো বলতে পারবেন।

তিনি জানান, হামলার সময় তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সদর থানার ওসি, পুলিশের আইজিপি, কেবিনেট সেক্রেটারিসহ সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও প্রভাবশালী অনেক আমলার সঙ্গে কথা বলেছেন, কিন্তু কোনও সাহায্য পাননি।

হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করে প্রশাসন কেন ভূমিকা নিল না, তাদের স্ব-স্ব ডিপার্টমেন্টাল তদন্ত করার দাবি জানান র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার, সহ-সভাপতি তাজ মোহাম্মদ ইয়াছিন, মুজিবুর রহমান বাবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু প্রমুখ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

MD ZANNATUL FERDOUSH

NEWS PURPOSE
Popular Post

গাইবান্ধায় বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ইউপি সদস্য খুন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হামলাকারীদের দায় দায়িত্ব হরতাল আহ্বানকারী হেফাজতে ইসলামকেই নিতে হবে-উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী

Update Time : ০১:৫৪:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ মার্চ ২০২১

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যেসব সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ও হিন্দুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে তার সব দায় দায়িত্ব হরতাল আহ্বানকারী হেফাজতে ইসলামকেই নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন,‘গত রোববার বেলা ১১টার পর হেফাজতিরা বিনা উস্কানিকে শহরে তাণ্ডব লীলা চালায়। হামলার সময় সদর থানা থেকে মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে যে, ‘বিক্ষোভকারী ভাইয়েরা আপনারা আমাদের ওপর ঢিল ছুঁড়বেন না, আমরা আপনাদের সাথে আছি’ মাইকে এই ঘোষণা শোনার পর হামলাকারীরা বিপুল উৎসাহে একের পর এক সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। আজ সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তিনি।

উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ‘গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানের দিন বিকেল ৩টার পর থেকেই হেফাজতিরা শহরে তাণ্ডব শুরু করে। তারা রেলস্টেশন ভাঙচুর করে কন্ট্রোল প্যানেল জ্বালিয়ে দিয়েছে। এরপর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সব ট্রেনের যাত্রা বিরতি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এই প্রথম রাজনৈতিক নেতাদের বাড়িতে হামলা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর এই পর্যন্ত কোনও হরতালে রাজনৈতিক নেতাদের বাড়িতে হামলা হয়নি। কিন্তু এবারই তারা পর্যায়ক্রমে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকারের বাড়ি, তার শ্বশুরবাড়ি, তার কার্যালয়, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদৎ হোসেন শোভনের বাড়ি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেলের বাড়ি, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জামাল খানের বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়।’

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জানান, শুক্রবার তাণ্ডব চালিয়ে তারা সার্কিট হাউসের সামনে রাখা ডিসিপুলের ৯টি গাড়ি, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা মৎস্য অফিস, সিভিল সার্জনের কার্যালয় ভাঙচুর করে। হামলাকারীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজউদ্দিন জামিকে হত্যার উদ্দেশে মারধর করে। আরও অনেক সাংবাদিককে নাজেহাল করে বলেও জানান তিনি।

এমপি বলেন, হামলা-তাণ্ডবের সময় প্রশাসন নীরব ছিল। ফায়ার সার্ভিসের কোনও ভূমিকা ছিল না। প্রশাসন একটু সক্রিয় হলে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই কম হতো।

হামলার সময় কেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিষ্ক্রিয় ছিল এমন প্রশ্নের উত্তরে সংসদ সদস্য মোকতাদির বলেন, সেটা তারাই ভালো বলতে পারবেন।

তিনি জানান, হামলার সময় তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সদর থানার ওসি, পুলিশের আইজিপি, কেবিনেট সেক্রেটারিসহ সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও প্রভাবশালী অনেক আমলার সঙ্গে কথা বলেছেন, কিন্তু কোনও সাহায্য পাননি।

হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করে প্রশাসন কেন ভূমিকা নিল না, তাদের স্ব-স্ব ডিপার্টমেন্টাল তদন্ত করার দাবি জানান র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার, সহ-সভাপতি তাজ মোহাম্মদ ইয়াছিন, মুজিবুর রহমান বাবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু প্রমুখ।