
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পরিত্যক্ত সেলটি একটি প্রাচীন আমলের ধাতব কন্টেনার বা বোতল ভেবেছিল তারা। তাদের ধারণা ছিল, এর ভেতরে মূল্যবান মূদ্রা বা ধাতু পাওয়া যাবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সেল কাটতে গিয়ে বিস্ফোরণ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বিস্ফোরণের ঘটনায় খায়রুজ্জামান নামে একজনকে র্যাব হেফাজতে নেয়ার বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ। বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তর কুর্মিটোলায় সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, গত ২৪ মার্চ বিকাল ৪টার দিকে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ এর কামারদহ মেকুরাই নয়াপাড়া গ্রামে বোরহান উদ্দিনের (৩৮) বাড়িতে হঠাৎ বিকট আওয়াজে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় বাড়িটির টিনের ঘর উড়ে যায় ও তিনজন নিহত হয়। ঘটনার পরই আমরা থানা পুলিশের পাশাপাশি তদন্ত গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করি। এরই প্রেক্ষিতে আজ ভোরে গাজীপুরের মাওনা থেকে গোয়েন্দা দল খায়রুজ্জামানকে (৩৬) র্যাবের হেফাজতে নেয়।
তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খায়রুজ্জামান জানায় যে, বেশ কয়েকদিন আগে বগুড়ার মোকামতলা সুগার মিল এলাকায় একটি কনস্ট্রাকশন সাইট থেকে হাবীব নামে এক ব্যক্তি একটি পরিত্যক্ত সেল উদ্ধার করে। এ ব্যক্তি ওই সাইটের কেয়ার টেকার হিসেবে নিয়োজিত ছিল। বিষয়টি সে বিস্ফোরণে নিহত হওয়া বোরহান উদ্দিনকে জানায়। অতঃপর বোরহান উদ্দিন খায়রুজ্জামানকে ১৫-২০ দিন আগে জানায়।
ঘটনার আগের দিন খায়রুজ্জামান ও বোরহান মোটর সাইকেল করে পরিত্যাক্ত সেলটি সংগ্রহ করে নিয়ে আসে। সেলটি কাটার জন্য বোরহান উদ্দিন ফাঁসিতলা বাজারের একটি দোকান থেকে কাটার মেশিন নিয়ে আসে। ওয়াহিদুজ্জামান ও বোরহান উদ্দিন ঢাকায় অবস্থানরত রানাকেও তথ্যটি জানিয়েছিল। পরে ২৪ মার্চ বুধবার হাবিব, বোরহান, ওয়াহিদুজ্জামান, রানা ও খাইরুজ্জামান একত্রিত হয়। অতঃপর সেলটি কাটার সময় বিস্ফোরণ হয়। এসময় হাবীব বারান্দায় ও খায়রুজ্জামান পার্শ্ববর্তী রুমে অবস্থান করছিল।
জানা যায়, বোরহান উদ্দিন একসময় প্রবাসী ছিলেন, বর্তমানে একজন পরিবহন ব্যবসায়ী (ট্রাক মালিক)। ওয়াহিদুল এলাকা থেকে পালিয়ে গিয়ে সাভারে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছিলেন। আগে প্রতরণামূলক মামলায় জেলে ছিলেন তিনি। খায়রুজ্জামান পেশায় কৃষিজীবী ও বোরহান উদ্দিনের কাছের আত্মীয়।
খায়রুজ্জামান আরো জানায়, ঘটনার পর হতাহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে ভীতস্বন্ত্রস্ত হয়ে ওইদিনই বিকেলে এলাকা ত্যাগ করেন তিনি। তাদের ধারণা ছিল, পরিত্যক্ত সেলটি একটি প্রাচীন আমলের ধাতব কন্টেনার বা বোতল যার ভিতরে মূল্যবান মূদ্রা বা ধাতু পাওয়া যাবে।