খোঁজ খবর ডেস্ক: মিরপুর টেস্টের চতুর্থ দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৭ উইকেট এবং বাংলাদেশের ১০ উইকেট, অর্থাৎ মোট ১৭ উইকেটের পতন হয়েছে। আর দিন শেষে বাংলাদেশও হেরেছে ১৭ রানে। আর এর মধ্যে দিয়ে ঘরের মাঠেই দুর্বল ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ। ২০১২ সালের পর এই প্রথম দেশের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ।
এর আগে ২০১৯ সালে ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে হেরেছিল বাংলাদেশ। ২০১২ সালের পর এশিয়ার মাটিতে প্রথম টেস্ট সিরিজ জিতল ওয়েষ্ট ইন্ডিজ। ২০১৭ সালের পর ঘরের বাইরে উইন্ডিজের এটি প্রথম সিরিজ জয়। চট্টগ্রাম টেস্টে ক্যারিবিয়ানরা ৩ উইকেটে জিতেছিল। টেষ্ট সিরিজে বাংলাদেশ দুর্বল উইন্ডিজের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হবে কেউ কল্পনাও করেনি। ক্যারিবিয়ানরা হোয়াইটওয়াশ করে হারিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে সাদা-পোশাকে তারা টাইগারদের চেয়ে ভাল দল।
এই পরাজয়ের ফলে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে এখন পর্যন্ত কোনো পয়েন্টের মুখ দেখা হলো না বাংলাদেশের। অথচ সিরিজ শুরুর আগে দুর্বল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পুরো ১২০ পয়েন্টের আশায় সিরিজ শুরু করেছিল বাংলাদেশ দল।
আগের দিনের করা ৪১/৩ রান নিয়ে রোববার চতুর্থ দিনে মিরপুর শেরেবাংলায় ব্যাটিংয়ে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলীয় ৫০ রানে আউট হন আগের দিনের নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে খেলতে নামা জোমাল ওয়ারিক্যান। এরপর ২৩ রানের ব্যবধানে ফেরেন কাইল মেয়ার্স ও জার্মেইন ব্লাকউড।
সপ্তম উইকেটে জসুয়া ডি সিলভাকে সঙ্গে নিয়ে ৩১ রানের জুটি গড়েন এনকেরুমা বোনার। ৬ উইকেটে ১০৪ রান করা উইন্ডিজ এরপর মাত্র ১৩ রানের ব্যবধানে হারায় ৪ উইকেট।
প্রথম ইনিংসে ৪০৯ রান করা উইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট ১১৭ রানে। বাংলাদেশ দলের হয়ে তিন স্পিনার তাইজুল ইসলাম ৪, নাইম হাসান ৩ আর মেহেদী হাসান মিরাজ নেন এক উইকেট। দুই উইকেট শিকার করেন পেসার আবু জায়েদ রাহী।
২৩১ রানের জয়ের টার্গেটে খেলতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। উদ্বোধনী জুটিতে ৫৯ রান করা বাংলাদেশ এরপর ৫৬ রানের ব্যবধানে সৌম্য সরকার, তামিম ইকবাল, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুনের উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে যায়।
ষষ্ঠ উইকেটে লিটন দাসকে সঙ্গে নিয়ে ৩২ রানের ছোট জুটি গড়েন অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভ। এরপর আবারও ব্যাটিং বিপর্যয়। ৫ উইকেটে ১৪৭ রান করা বাংলাদেশ এরপর মাত্র ১৬ রানের ব্যবধানে হারায় মুমিনুল, লিটন ও তাইজুল ইসলামের উইকেট।
দলের পরাজয় এড়াতে শেষদিকে একাই চেষ্টা করে যান মেহেদী হাসান মিরাজ। তাকে সেভাবে সঙ্গ দিতে পারেননি নাইম হাসান। দলীয় ১৮৮ রানে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন নাইম।
জয়ের জন্য শেষ উইকেটে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৪৩ রান। বাংলাদেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখানো মিরাজ শেষ ব্যাটসম্যান আবু জায়েদ রাহীকে নিয়ে ২৫ রান তুলতে সক্ষম। দলীয় ২১৩ রানে স্লিপে ক্যাচ তুলে দিয়ে মিরাজ আউট হলে তীরে গিয়ে তরী ডুবে। মাত্র ১৭ রানে হেরে যায় টাইগাররা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৪০৯/১০ (জসুয়া ডি সিলভা ৯২, একেরুমা বোনার ৯০, আলজারি জোসেফ ৮২, ক্রেক ব্রাথওয়েট ৪৭, জন ক্যাম্পবেল ৩৬; আবু জায়েদ রাহী ৪/৯৮, তাইজুল ইসলাম ৪/১০৮)। ২য় ইনিংস: ১১৭/১০ (এনকেরুমা বোনার ৩৮, জসুয়া ডি সিলভা ২০; তাইজুল ৪/৩৬, নাইম হাসান ৩/৩৪, আবু জায়েদ রাহী ২/৩২)।
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৯৬/১০ (লিটন ৭১, মিরাজ ৫৭, মুশফিক ৫৪, তামিম ৪৪; রাহকিম কর্নওয়াল ৫/৭৪, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ৩/৭০)। দ্বিতীয় ইনিংস: ২১৩/১০ (তামিম ৫০, মিরাজ ৩১, মুমিনুল হক ২৬, লিটন ২২;রাহকিন কর্নওয়াল ৪/১০৫, ক্রেগ ব্রাথওয়েট ৩/৪৭, জোমাল ওয়ারিক্যান ৩/২৫)।
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৭ রানে জয়ী।
দুই টেস্টের সিরিজে উইন্ডিজ ২-০ ব্যবধানে জয়ী।