বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রতিপক্ষের দুইজনকে বিদুৎস্পৃষ্টে হত্যার অভিযোগে গাইবান্ধায় তিন সহোদরের ফাঁসির আদেশ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৪২:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর ২০২০
  • ১৯৭ Time View

খোঁজ খবর রিপোর্টঃ জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে প্রতিপক্ষের দুইজনকে হত্যার অভিযোগে তিনসহোদর ভাইকে ফাঁসির দন্ডাদেশ প্রদান করেছেন আদালত। গাইবান্ধা জেলা ও দায়রাজজ আদালতের বিচারক দিলীপ কুমার ভৌমিক আজ দুপুরে এই আদেশ প্রদান করেন। তাদের মৃত্যু না হওয়া ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে এই রায় কার্যকর করার আদেশ প্রদান করা হয়।

মৃত্যুদ-প্রাপ্ত তিনজন হলেন সুন্দরগঞ্জের পূর্ব ঝিনিয়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে হযরত আলী (৫৫), হাবিজার রহমান (৩২) ও আজিজল হক (২৭)। মামলার অপর তিনজন মহিলা আসামী মোছঃ জরিনা বেগম, মোছাঃ গোলেনুর বেগম ও মোর্শেদা আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। একজন আসামীর মামলা চলাকালীন মৃত্যু হয়।

মামলার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ৮০ শতক জমি নিয়ে সুন্দরগঞ্জের পূর্ব ঝিনিয়া গ্রামের মফিজল হকের ছেলে তসলিম উদ্দিনের সঙ্গে প্রতিবেশী আবুল হোসেনের ছেলে হযরত আলীর বিরোধ ও মামলা চলছিল। মামলার রায় পেয়ে তসলিম উদ্দীন ওই জমিতে আমন ধান রোপণ করেন। এই জমির ধান কাটার খবর শুনে ২০১৬ সালের ১১ নভেম্বর রাতে জমিতে জিআই তার পেতে রেখে নিজের রাইস মিল থেকে তাতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেন হযরত আলী ও তার ভাইরা। পরদিন ১২ নভেম্বর সকালে ওই জমিতে কয়েকজন নারী ও পুরুষ শ্রমিক নিয়ে তসলিম উদ্দিন ধান কাটতে যান। কিন্তু জিআই তারে বিদ্যুৎ থাকার বিষয়টি না জানায় জিআই তারে জড়িয়ে ঘটনাস্থলেই তসলিম উদ্দিন(৩৫) ও সাইদুর রহমানের স্ত্রী মর্জিনা বেগম(৩০) মারা যান। নিহতরা আপন চাচাতো ভাই-বোন ।  এসময়  মেহের আলী ভোলার ছেলে শহিদুল হক, এনামুল হকের স্ত্রী মর্জিনা বেগম ও তসলিম উদ্দিনের স্ত্রী জমিলা খাতুন গুরুতর আহত হন। পরে এ ঘটনায় তসলিম উদ্দিনের বাবা মফিজল হক সাতজনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার সাক্ষ্য গ্রহন ও দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালতের বিচারক ৩২৩/৩০২/৩৪ ধারায় এই রায় প্রদান করেন। মামলা পরিচালনায় রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর মোঃ শফিকুল ইসলাম শফি। আসামী পক্ষে এ্যাড. মোঃ রহমত উল্যা আজাদ, আবু আলা মোঃ সিদ্দিকুল ইসলাম রিপু ও এ এ এম আহসানুল করিম লাছু। গাইবান্ধা পাবলিক প্রসিকিউটর শফিকুর রহমান শফিক বলেন, এই রায়ে আমি খুশি। বাদিপক্ষ ন্যায্য বিচার পেয়েছে। অপরদিকে আসামী পক্ষের আইনজীবী আবু আলা মোঃ সিদ্দিকুল ইসলাম রিপু বলেন, আসামীরা ন্যায়বিচার পায়নি। তাই আমরা উচ্চতর আদালতে আপিল করবো।

মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত তিন আসামীর মধ্যে দুইজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন ও অপরজন পলাতক রয়েছেন। পরে আসামীদের গাইবান্ধা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। গাইবান্ধা জেলা কারাগারে কনডেম সেল না থাকায় মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামীদের রংপুর কারাগারে পাঠানো হবে বলেও জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

MD ZANNATUL FERDOUSH

NEWS PURPOSE
Popular Post

গাইবান্ধায় বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ইউপি সদস্য খুন

প্রতিপক্ষের দুইজনকে বিদুৎস্পৃষ্টে হত্যার অভিযোগে গাইবান্ধায় তিন সহোদরের ফাঁসির আদেশ

Update Time : ০৪:৪২:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর ২০২০

খোঁজ খবর রিপোর্টঃ জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে প্রতিপক্ষের দুইজনকে হত্যার অভিযোগে তিনসহোদর ভাইকে ফাঁসির দন্ডাদেশ প্রদান করেছেন আদালত। গাইবান্ধা জেলা ও দায়রাজজ আদালতের বিচারক দিলীপ কুমার ভৌমিক আজ দুপুরে এই আদেশ প্রদান করেন। তাদের মৃত্যু না হওয়া ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে এই রায় কার্যকর করার আদেশ প্রদান করা হয়।

মৃত্যুদ-প্রাপ্ত তিনজন হলেন সুন্দরগঞ্জের পূর্ব ঝিনিয়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে হযরত আলী (৫৫), হাবিজার রহমান (৩২) ও আজিজল হক (২৭)। মামলার অপর তিনজন মহিলা আসামী মোছঃ জরিনা বেগম, মোছাঃ গোলেনুর বেগম ও মোর্শেদা আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। একজন আসামীর মামলা চলাকালীন মৃত্যু হয়।

মামলার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ৮০ শতক জমি নিয়ে সুন্দরগঞ্জের পূর্ব ঝিনিয়া গ্রামের মফিজল হকের ছেলে তসলিম উদ্দিনের সঙ্গে প্রতিবেশী আবুল হোসেনের ছেলে হযরত আলীর বিরোধ ও মামলা চলছিল। মামলার রায় পেয়ে তসলিম উদ্দীন ওই জমিতে আমন ধান রোপণ করেন। এই জমির ধান কাটার খবর শুনে ২০১৬ সালের ১১ নভেম্বর রাতে জমিতে জিআই তার পেতে রেখে নিজের রাইস মিল থেকে তাতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেন হযরত আলী ও তার ভাইরা। পরদিন ১২ নভেম্বর সকালে ওই জমিতে কয়েকজন নারী ও পুরুষ শ্রমিক নিয়ে তসলিম উদ্দিন ধান কাটতে যান। কিন্তু জিআই তারে বিদ্যুৎ থাকার বিষয়টি না জানায় জিআই তারে জড়িয়ে ঘটনাস্থলেই তসলিম উদ্দিন(৩৫) ও সাইদুর রহমানের স্ত্রী মর্জিনা বেগম(৩০) মারা যান। নিহতরা আপন চাচাতো ভাই-বোন ।  এসময়  মেহের আলী ভোলার ছেলে শহিদুল হক, এনামুল হকের স্ত্রী মর্জিনা বেগম ও তসলিম উদ্দিনের স্ত্রী জমিলা খাতুন গুরুতর আহত হন। পরে এ ঘটনায় তসলিম উদ্দিনের বাবা মফিজল হক সাতজনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার সাক্ষ্য গ্রহন ও দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালতের বিচারক ৩২৩/৩০২/৩৪ ধারায় এই রায় প্রদান করেন। মামলা পরিচালনায় রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর মোঃ শফিকুল ইসলাম শফি। আসামী পক্ষে এ্যাড. মোঃ রহমত উল্যা আজাদ, আবু আলা মোঃ সিদ্দিকুল ইসলাম রিপু ও এ এ এম আহসানুল করিম লাছু। গাইবান্ধা পাবলিক প্রসিকিউটর শফিকুর রহমান শফিক বলেন, এই রায়ে আমি খুশি। বাদিপক্ষ ন্যায্য বিচার পেয়েছে। অপরদিকে আসামী পক্ষের আইনজীবী আবু আলা মোঃ সিদ্দিকুল ইসলাম রিপু বলেন, আসামীরা ন্যায়বিচার পায়নি। তাই আমরা উচ্চতর আদালতে আপিল করবো।

মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত তিন আসামীর মধ্যে দুইজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন ও অপরজন পলাতক রয়েছেন। পরে আসামীদের গাইবান্ধা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। গাইবান্ধা জেলা কারাগারে কনডেম সেল না থাকায় মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামীদের রংপুর কারাগারে পাঠানো হবে বলেও জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।