সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতের স্যাটেলাইট ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিতে একাধিক বার আক্রমণ চালিয়েছে চীন

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:৩৬:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ২১১ Time View

খোঁজ খবর ডেস্কঃ লাদাখের বিতর্কিক সীমানায় ভারত কিংবা চীন কেউই আর নতুন করে সৈন্য বাড়াবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। দুই দেশের সেনাবাহিনীর সিনিয়র কমান্ডাররা ১৪ ঘণ্টার ম্যারাথন বৈঠক শেষে এমন ঘোষণাই দিয়েছিল। তবে সেই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা পেরুতে না পেরুতেই চমকে ওঠার মতো একটি খবর দিয়েছে মার্কিন সংস্থা চায়না এরোস্পেস স্টাজিড ইনস্টিটিউট (সিএএসআই)।

প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, সীমান্তে চোখ রাঙানোর পাশাপাশি ভারতের উপগ্রহ যোগাযোগ ব্যবস্থার (স্যাটেলাইট) ওপরও নজর পড়েছে চীনের। ২০০৭ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ভারতের স্যাটেলাইট ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিতে একাধিক বার আক্রমণ চালিয়েছে তারা। কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ২০১৭ সালেও একই ধরনের হামলা চালানো হয়। খবর আনন্দবাজারের।

বিগত ২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ভারতীয় স্যাটেলাইটে হামলা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য তুলে ধরে ১৪২ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে সিএএসআই। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহাকাশে স্যাটেলাইট প্রতিরোধ প্রযুক্তি রয়েছে চীনের। তার মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মহাকাশ প্রযুক্তি এবং নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৃথিবীকে অনুসরণ করে চলা স্যাটেলাইটের ওপর হামলা চালায় তারা।

এসব কাজের জন্য চীনের কাছে রয়েছে কো-অর্বিটাল স্যাটেলাইট, যা শত্রুপক্ষের স্যাটেলাইটকে অনুসরণ করে। তাদের স্যাটেলাইট প্রতিরোধকারী ক্ষেপণাস্ত্র, জ্যামার্স এবং সাইবার অস্ত্রও রয়েছে। শত্রুপক্ষকে সম্পূর্ণরূপে স্তব্ধ করে দিয়ে হামলা চালানো যায়। চীনা সেনাদের হাতে এর মধ্যেই বিশেষ প্রযুক্তি এসেছে। সেসব প্রযুক্তিকে আরো উন্নত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তবে ভারতীয় স্যাটেলাইটের ওপর দফায় দফায় হামলা চালানো হলেও ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) প্রযুক্তি নিরাপদেই রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরোর প্রধান কে শিবন। তিনি জানান, ভারতের একটি স্বাধীন এবং বিচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক রয়েছে, সাধারণ মানুষের নজর থেকে তা দূরে রাখা হয়েছে। ইন্টারনেটের সঙ্গেও সেটি সংযুক্ত নয়। তাই ওই প্রযুক্তি নিরাপদ রয়েছে।

স্যাটেলাইট

ইসরোর একাধিক সূত্র বলছে, স্যাটেলাইটগুলোতে সাইবার হামলা চালানোর ক্ষেত্রে সতর্কবার্তা পৌঁছে দিতে বিশেষ প্রযুক্তি রয়েছে ইসরোর কাছে। তাই চীন এরকম হামলা ঘটিয়ে থাকলেও ব্যর্থই হতে হয়েছে তাদের। তবে চীন বসে থাকাও পাত্র নয়। ইতোমধ্যেই উন্নত ধরনের সাইবার হানা প্রযুক্তি তৈরি করে ফেলেছে তারা।

চীনা বিজ্ঞানিরা শত্রুপক্ষের মহাকাশযান বা স্যাটেলাইট হাইজ্যাক করা, প্রযুক্তি বিকল করে দিতে সক্ষম। সেজন্য মাটিতে, আকাশে এবং মহাকাশে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি জ্যামার তৈরিতে বিনিয়োগ করেছে তারা। তার মাধ্যমে আপলিঙ্ক, ডাউনলিঙ্ক, ক্রশলিঙ্কগুলিকে নিশানা করে শত্রুপক্ষের মহাকাশ প্রযুক্তিগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম তারা। সেখান থেকে তারা তথ্য চুরিও করে নিতে পারে। যদিও ভারত ও চীনের মহাকাশ প্রযুক্তি নিয়ে অন্য দেশগুলো খুব বেশি কিছু জানতে পারে না। হামলার বিষয়টিও তেমন।

সিএএসআই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি থিংকট্যাংক সংস্থা। মার্কিন সরকারের সচিব, চিফ অব স্টাফ, বিমান ও বিশেষ বাহিনীর শীর্ষস্থানীয়রা এখানে পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করেন। এ ছাড়াও তাদের সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর হয়ে উঠতে পারে, বিচার-বিবেচনার মাধ্যমে তা নিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর ও সরকারের অন্যান্য বিভাগের নীতি নির্ধারণকারীদের পরামর্শ দেয় সংস্থাটি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

MD ZANNATUL FERDOUSH

NEWS PURPOSE
Popular Post

গাইবান্ধায় বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ইউপি সদস্য খুন

ভারতের স্যাটেলাইট ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিতে একাধিক বার আক্রমণ চালিয়েছে চীন

Update Time : ০৬:৩৬:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০

খোঁজ খবর ডেস্কঃ লাদাখের বিতর্কিক সীমানায় ভারত কিংবা চীন কেউই আর নতুন করে সৈন্য বাড়াবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। দুই দেশের সেনাবাহিনীর সিনিয়র কমান্ডাররা ১৪ ঘণ্টার ম্যারাথন বৈঠক শেষে এমন ঘোষণাই দিয়েছিল। তবে সেই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা পেরুতে না পেরুতেই চমকে ওঠার মতো একটি খবর দিয়েছে মার্কিন সংস্থা চায়না এরোস্পেস স্টাজিড ইনস্টিটিউট (সিএএসআই)।

প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, সীমান্তে চোখ রাঙানোর পাশাপাশি ভারতের উপগ্রহ যোগাযোগ ব্যবস্থার (স্যাটেলাইট) ওপরও নজর পড়েছে চীনের। ২০০৭ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ভারতের স্যাটেলাইট ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিতে একাধিক বার আক্রমণ চালিয়েছে তারা। কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ২০১৭ সালেও একই ধরনের হামলা চালানো হয়। খবর আনন্দবাজারের।

বিগত ২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ভারতীয় স্যাটেলাইটে হামলা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য তুলে ধরে ১৪২ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে সিএএসআই। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহাকাশে স্যাটেলাইট প্রতিরোধ প্রযুক্তি রয়েছে চীনের। তার মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মহাকাশ প্রযুক্তি এবং নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৃথিবীকে অনুসরণ করে চলা স্যাটেলাইটের ওপর হামলা চালায় তারা।

এসব কাজের জন্য চীনের কাছে রয়েছে কো-অর্বিটাল স্যাটেলাইট, যা শত্রুপক্ষের স্যাটেলাইটকে অনুসরণ করে। তাদের স্যাটেলাইট প্রতিরোধকারী ক্ষেপণাস্ত্র, জ্যামার্স এবং সাইবার অস্ত্রও রয়েছে। শত্রুপক্ষকে সম্পূর্ণরূপে স্তব্ধ করে দিয়ে হামলা চালানো যায়। চীনা সেনাদের হাতে এর মধ্যেই বিশেষ প্রযুক্তি এসেছে। সেসব প্রযুক্তিকে আরো উন্নত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তবে ভারতীয় স্যাটেলাইটের ওপর দফায় দফায় হামলা চালানো হলেও ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) প্রযুক্তি নিরাপদেই রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরোর প্রধান কে শিবন। তিনি জানান, ভারতের একটি স্বাধীন এবং বিচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক রয়েছে, সাধারণ মানুষের নজর থেকে তা দূরে রাখা হয়েছে। ইন্টারনেটের সঙ্গেও সেটি সংযুক্ত নয়। তাই ওই প্রযুক্তি নিরাপদ রয়েছে।

স্যাটেলাইট

ইসরোর একাধিক সূত্র বলছে, স্যাটেলাইটগুলোতে সাইবার হামলা চালানোর ক্ষেত্রে সতর্কবার্তা পৌঁছে দিতে বিশেষ প্রযুক্তি রয়েছে ইসরোর কাছে। তাই চীন এরকম হামলা ঘটিয়ে থাকলেও ব্যর্থই হতে হয়েছে তাদের। তবে চীন বসে থাকাও পাত্র নয়। ইতোমধ্যেই উন্নত ধরনের সাইবার হানা প্রযুক্তি তৈরি করে ফেলেছে তারা।

চীনা বিজ্ঞানিরা শত্রুপক্ষের মহাকাশযান বা স্যাটেলাইট হাইজ্যাক করা, প্রযুক্তি বিকল করে দিতে সক্ষম। সেজন্য মাটিতে, আকাশে এবং মহাকাশে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি জ্যামার তৈরিতে বিনিয়োগ করেছে তারা। তার মাধ্যমে আপলিঙ্ক, ডাউনলিঙ্ক, ক্রশলিঙ্কগুলিকে নিশানা করে শত্রুপক্ষের মহাকাশ প্রযুক্তিগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম তারা। সেখান থেকে তারা তথ্য চুরিও করে নিতে পারে। যদিও ভারত ও চীনের মহাকাশ প্রযুক্তি নিয়ে অন্য দেশগুলো খুব বেশি কিছু জানতে পারে না। হামলার বিষয়টিও তেমন।

সিএএসআই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি থিংকট্যাংক সংস্থা। মার্কিন সরকারের সচিব, চিফ অব স্টাফ, বিমান ও বিশেষ বাহিনীর শীর্ষস্থানীয়রা এখানে পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করেন। এ ছাড়াও তাদের সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর হয়ে উঠতে পারে, বিচার-বিবেচনার মাধ্যমে তা নিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর ও সরকারের অন্যান্য বিভাগের নীতি নির্ধারণকারীদের পরামর্শ দেয় সংস্থাটি।