বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রৌমারীর গ্রামীণ রাস্তা গুলোর বেহালদশা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:৩১:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ১৫৫ Time View

রৌমারী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা বেহালদশা হয়ে পড়েছে। উপজেলায় কাঁচাপাকা প্রায় ৭০টি রাস্তা দফায় দফায় বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়ায় রাস্তায় দেখা দিয়েছে অসংখ্য খানা খন্দর। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের জনসাধারন চরম দূর্ভোগে পড়েছে । এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা গুলো দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে ভাঙ্গাচুরা রাস্তাগুলোর মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত যানবাহন গুলো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। ঝঁুকি নিয়ে প্রতিদিনই কর্মজীবি মানুষ, শিক্ষার্থী, স্বাস্থ্যকর্মী, কৃষি ফসলসহ সরকারি বিভিন্ন সেবা ও নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে হাট-বাজারের আসতে হয় উপজেলার সদরে। অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, কোথাও রাস্তার মাঝখানের পাথরসহ খোয়া উঠে বড় বড় খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতি বছর সরকারি বরাদ্দ টিআর, কাবিখা, কাবিটা, এলজিএসপি, লজিক প্রকল্প, এলজিইডিসহ বিভিন্ন প্রকল্প দেওয়া হলেও নাম মাত্র কাজ করে ।

শনিবার(১৯ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে এসব চিত্র দেখা ও তথ্য পাওয়া যায়, বন্দবেড় ৭টি রাস্তা,২৮কি.মি, চর শৌলমারী ১৩টি রাস্তা ৪৪কি.মি, দাঁতভাঙ্গা ১১টি রাস্তা ৩০কি.মি, শৌলমারী ১০টি রাস্তা ৫২কি.মি, রৌমারী সদর ১৩টি রাস্তা ২৬কি.মি, যাদুরচর ১৬টি রাস্তা ৪৫কি.মি, ইউনিয়নের গ্রামীণ গুরত্বপূর্ণ কাঁচাপাকা ছোট ও বড় ৭০টি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে
গুরত্বপূর্ণ ও চলাচলের একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়েছে কাঁচাপাকা মিলে প্রায় ২‘শ পচিশ কি.মি. রাস্তা।

স্থানীয় সিএসডিকে এনজিও’র নিবার্হী পরিচালক আবু হানিফ মাস্টার জানান, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কাঁচাপাক রাস্তা দিয়ে মালামাল পরিবহন ও চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। অতি দ্রুত সংস্কার করার দাবি জানাচ্ছি সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের কাছে। সবুজপাড়া গ্রামের রোকনুজ্জামান রিপন জানান, বন্যা আর বৃষ্টিতে রাস্তা গুলো চলাচলের অযাগ্য হয়ে
পড়েছে। রাস্তা গুলি অতি তাড়াতাড়ি মেরামত করা হক। কলাবাড়ি গ্রামের এমাদাদুল হক জানান, যাদুরচর ইউনিয়নে কাঁচাপাকা মিলে মোট ৪৮কি.মি. রয়েছে। বেশির ভাগ রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পরেছে। মেরামতের কোনো খবর নেই। শৌলমারী গ্রামের মো. মশিউর রহমান বাবু জানান, এই সড়কগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ মানুষ হেটে চলাফেরা করতে পারছেনা।

রৌমারী মহিলা কলেজ এর সহকারি অধ্যাপক আব্দুস সামাদ খাঁন জানান, দফায় দফায় বন্যায় রাস্তা ঘাট ভেঙ্গে চলাচলের ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তবে এসব রাস্তার কাজের সংস্কারের সময় নিম্নমানের কাজ হওয়ায় রাস্তার দুই পাশে ধসে পড়ে রাস্তার প্রশস্থ কমে যাচ্ছে।

এব্যাপারে উপজেলার ৬ টি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বলেন, রাস্তারগুলো চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় জনসাধারণ ও যানবাহন চলাচলের মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সড়ক গুলো ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।

রৌমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা ঘাটের তথ্য জেলায় প্রেরণ করা হয়েছে। প্রকল্প বরাদ্দ আসলে ছোট ছোট গ্রামীণ কাঁচা রাস্তাগুলোর সংস্কার ও মেরামতের কাজ করা হবে। উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল জলিল বলেন, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের অনেক কাঁচাপাকা রাস্তা সংস্কারের অভাবে নষ্ট হয়েছে। রাস্তাগুলো সংস্কার ও মেরামত করা হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে।

রৌমারী উপজেলা নিবার্হী অফিসার আল ইমরান বলেন, বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে উপজেলার বিভিন্ন কাঁচাপাকা রাস্তাগুলোর বিভিন্ন জায়গায় ভেঙ্গে গেছে। এছাড়াও অনেক কাঁচাপাকা রাস্তা ভেঙ্গে খানাখন্দর সৃষ্টি হয়ে যানবাহন চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নিয়ে আলোচনা সভা করে রাস্তা চলাচলের উপযোগী করার ব্যবস্থা গ্রাহন করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

MD ZANNATUL FERDOUSH

NEWS PURPOSE
Popular Post

তেঁতুলিয়ায় ক্ল ুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটন, বীরগঞ্জ থেকে আসামি আটক

রৌমারীর গ্রামীণ রাস্তা গুলোর বেহালদশা

Update Time : ০৮:৩১:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

রৌমারী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা বেহালদশা হয়ে পড়েছে। উপজেলায় কাঁচাপাকা প্রায় ৭০টি রাস্তা দফায় দফায় বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়ায় রাস্তায় দেখা দিয়েছে অসংখ্য খানা খন্দর। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের জনসাধারন চরম দূর্ভোগে পড়েছে । এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা গুলো দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে ভাঙ্গাচুরা রাস্তাগুলোর মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত যানবাহন গুলো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। ঝঁুকি নিয়ে প্রতিদিনই কর্মজীবি মানুষ, শিক্ষার্থী, স্বাস্থ্যকর্মী, কৃষি ফসলসহ সরকারি বিভিন্ন সেবা ও নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে হাট-বাজারের আসতে হয় উপজেলার সদরে। অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, কোথাও রাস্তার মাঝখানের পাথরসহ খোয়া উঠে বড় বড় খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতি বছর সরকারি বরাদ্দ টিআর, কাবিখা, কাবিটা, এলজিএসপি, লজিক প্রকল্প, এলজিইডিসহ বিভিন্ন প্রকল্প দেওয়া হলেও নাম মাত্র কাজ করে ।

শনিবার(১৯ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে এসব চিত্র দেখা ও তথ্য পাওয়া যায়, বন্দবেড় ৭টি রাস্তা,২৮কি.মি, চর শৌলমারী ১৩টি রাস্তা ৪৪কি.মি, দাঁতভাঙ্গা ১১টি রাস্তা ৩০কি.মি, শৌলমারী ১০টি রাস্তা ৫২কি.মি, রৌমারী সদর ১৩টি রাস্তা ২৬কি.মি, যাদুরচর ১৬টি রাস্তা ৪৫কি.মি, ইউনিয়নের গ্রামীণ গুরত্বপূর্ণ কাঁচাপাকা ছোট ও বড় ৭০টি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে
গুরত্বপূর্ণ ও চলাচলের একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়েছে কাঁচাপাকা মিলে প্রায় ২‘শ পচিশ কি.মি. রাস্তা।

স্থানীয় সিএসডিকে এনজিও’র নিবার্হী পরিচালক আবু হানিফ মাস্টার জানান, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কাঁচাপাক রাস্তা দিয়ে মালামাল পরিবহন ও চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। অতি দ্রুত সংস্কার করার দাবি জানাচ্ছি সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের কাছে। সবুজপাড়া গ্রামের রোকনুজ্জামান রিপন জানান, বন্যা আর বৃষ্টিতে রাস্তা গুলো চলাচলের অযাগ্য হয়ে
পড়েছে। রাস্তা গুলি অতি তাড়াতাড়ি মেরামত করা হক। কলাবাড়ি গ্রামের এমাদাদুল হক জানান, যাদুরচর ইউনিয়নে কাঁচাপাকা মিলে মোট ৪৮কি.মি. রয়েছে। বেশির ভাগ রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পরেছে। মেরামতের কোনো খবর নেই। শৌলমারী গ্রামের মো. মশিউর রহমান বাবু জানান, এই সড়কগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ মানুষ হেটে চলাফেরা করতে পারছেনা।

রৌমারী মহিলা কলেজ এর সহকারি অধ্যাপক আব্দুস সামাদ খাঁন জানান, দফায় দফায় বন্যায় রাস্তা ঘাট ভেঙ্গে চলাচলের ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তবে এসব রাস্তার কাজের সংস্কারের সময় নিম্নমানের কাজ হওয়ায় রাস্তার দুই পাশে ধসে পড়ে রাস্তার প্রশস্থ কমে যাচ্ছে।

এব্যাপারে উপজেলার ৬ টি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বলেন, রাস্তারগুলো চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় জনসাধারণ ও যানবাহন চলাচলের মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সড়ক গুলো ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।

রৌমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা ঘাটের তথ্য জেলায় প্রেরণ করা হয়েছে। প্রকল্প বরাদ্দ আসলে ছোট ছোট গ্রামীণ কাঁচা রাস্তাগুলোর সংস্কার ও মেরামতের কাজ করা হবে। উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল জলিল বলেন, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের অনেক কাঁচাপাকা রাস্তা সংস্কারের অভাবে নষ্ট হয়েছে। রাস্তাগুলো সংস্কার ও মেরামত করা হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে।

রৌমারী উপজেলা নিবার্হী অফিসার আল ইমরান বলেন, বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে উপজেলার বিভিন্ন কাঁচাপাকা রাস্তাগুলোর বিভিন্ন জায়গায় ভেঙ্গে গেছে। এছাড়াও অনেক কাঁচাপাকা রাস্তা ভেঙ্গে খানাখন্দর সৃষ্টি হয়ে যানবাহন চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নিয়ে আলোচনা সভা করে রাস্তা চলাচলের উপযোগী করার ব্যবস্থা গ্রাহন করা হবে।