সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্রেতা নেই, মাদ্রাসা-এতিমখানায় চামড়া দিয়ে গেছেন কোরবানী দাতারা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:০৭:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ অগাস্ট ২০২০
  • ১৭৯ Time View

গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুর মহানগরীতে কোরবানীর পর প্রতিবছর মাঠ থেকে এতিমখানা বা মাদ্রাসার জন্য কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করা হতো। তবে এবার মাঠে বিক্রির জন্য চামড়া ছিল না বললেই চলে। উল্টো পশু কোরবানি করা সামর্থবানরা নিজ নিজ পশুর চামড়া স্বেচ্ছায় ও নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দিয়ে গেছেন। অনেকক্ষেত্রে দাতাদের নাম-পরিচয়ও জানতে পারেনি প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ। পশুর চামড়ার দরপতনের কারণে এমন একাধিক ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। অপরদিকে দাম না থাকায় চামড়া নিয়েও বিপাকে রয়েছেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। চামড়া সংরক্ষণ করার মতো মাদ্রাসায় জায়গা নেই। তা ছাড়া পরিবহন করে গুদামে চামড়া নিয়ে গেলে চামড়া ব্যবসায়ীরাও নিবেন কিনা তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।

গাজীপুর মহানগরীর গাছা মধ্যপাড়া মসজিদুন নূরের পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাজী আকবর জানান, এবার কোরবানী দাতারা পশুর চামড়া নিজ উদ্যোগে মসজিদে দিয়ে এসেছেন। অনেকে গাছা মাদ্রাসায় মাঠে চামড়া রেখে এসেছেন। অন্যান্য বছর ঈদের দিন বিকালে পশুর চামড়ার বাজার জমজমাট থাকতো। এবার বাজারে চামড়া কম উঠেছে। ক্রেতা নেই বললেই চলে। বাজার থেকেও অনেকে মাদ্রাসা ও মসজিদে পশুর চামড়া দিয়ে এসেছেন।

গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী রাজাবাড়ী এলাকার মোহম্মদ আলী জানান, এবার স্থানীয় চামড়ার বাজার কিছু ছিল না। এলাকার কোরবানী দাতারা রাজাবাড়ী মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসায় পশুর চামড়া নিজেরা দিয়ে এসেছেন।

শ্রীপুরের আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার মুহতামিম মুফতি মাওলানা মঈন উদ্দিন আহমাদ জানান, এবার পশুর চামড়ার জন্য কোনও কোরবানির মাঠে কাউকে পাঠাতে হয়নি। কোরবানী দাতারা নিজ উদ্যোগে মাদ্রাসায় এসে চামড়া দিয়ে গেছেন। অনেকে গোপনে চামড়া রেখে গেছেন, তার পরিচয়ও আমরা জানতে পারিনি। তিনি আরও জানান, কিন্তু চামড়ার বাজারমূল্য কম থাকায় গরুর চামড়া ছোট ১৫০-২০০, মহিষের চামড়া ৫০০ এবং ছাগলের চামড়া ১৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সব রকমের পশু মিলিয়ে চামড়া হয়েছিল ২৫০ এর মতো।চামড়ার ক্রেতা না থাকায় ঈদের পরদিন গরুর চামড়া ৫০ টাকা পিস দরে বিক্রি করতে হয়েছে।

কাপাসিয়ার বড়হর গ্রামের চামড়া ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন বলেন, কোরবানির মাঠ থেকে চামড়া কিনে বিপাকে পড়েছিলাম। পরে স্থানীয় আমরাইদ বাজারে গরুর চামড়া ১৫০ ও ২০০ টাকা পিস এবং মহিষের চামড়া ৫০০ টাকা পিস বিক্রি করে দিয়েছি। এতে আমার অনেক লোকশান হয়েছে।

একই গ্রামের  মো. মনির হোসেন বলেন, এবার বেশিরভাগ মুসল্লি নিজ উদ্যোগে স্থানীয় মসজিদ, মাদ্রাসায় চামড়া দিয়ে এসেছেন। দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে ও পরিবেশ রক্ষার্থে বাধ্য হয়ে চামড়াগুলো মাদ্রাসা ও মসজিদে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্যবারের মতো এবার কোরবানির মাঠে চামড়া ক্রেতাদের দেখা যায়নি বলে জানান তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

MD ZANNATUL FERDOUSH

NEWS PURPOSE

গাইবান্ধায় বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ইউপি সদস্য খুন

ক্রেতা নেই, মাদ্রাসা-এতিমখানায় চামড়া দিয়ে গেছেন কোরবানী দাতারা

Update Time : ০৯:০৭:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ অগাস্ট ২০২০

গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুর মহানগরীতে কোরবানীর পর প্রতিবছর মাঠ থেকে এতিমখানা বা মাদ্রাসার জন্য কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করা হতো। তবে এবার মাঠে বিক্রির জন্য চামড়া ছিল না বললেই চলে। উল্টো পশু কোরবানি করা সামর্থবানরা নিজ নিজ পশুর চামড়া স্বেচ্ছায় ও নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দিয়ে গেছেন। অনেকক্ষেত্রে দাতাদের নাম-পরিচয়ও জানতে পারেনি প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ। পশুর চামড়ার দরপতনের কারণে এমন একাধিক ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। অপরদিকে দাম না থাকায় চামড়া নিয়েও বিপাকে রয়েছেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। চামড়া সংরক্ষণ করার মতো মাদ্রাসায় জায়গা নেই। তা ছাড়া পরিবহন করে গুদামে চামড়া নিয়ে গেলে চামড়া ব্যবসায়ীরাও নিবেন কিনা তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।

গাজীপুর মহানগরীর গাছা মধ্যপাড়া মসজিদুন নূরের পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাজী আকবর জানান, এবার কোরবানী দাতারা পশুর চামড়া নিজ উদ্যোগে মসজিদে দিয়ে এসেছেন। অনেকে গাছা মাদ্রাসায় মাঠে চামড়া রেখে এসেছেন। অন্যান্য বছর ঈদের দিন বিকালে পশুর চামড়ার বাজার জমজমাট থাকতো। এবার বাজারে চামড়া কম উঠেছে। ক্রেতা নেই বললেই চলে। বাজার থেকেও অনেকে মাদ্রাসা ও মসজিদে পশুর চামড়া দিয়ে এসেছেন।

গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী রাজাবাড়ী এলাকার মোহম্মদ আলী জানান, এবার স্থানীয় চামড়ার বাজার কিছু ছিল না। এলাকার কোরবানী দাতারা রাজাবাড়ী মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসায় পশুর চামড়া নিজেরা দিয়ে এসেছেন।

শ্রীপুরের আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার মুহতামিম মুফতি মাওলানা মঈন উদ্দিন আহমাদ জানান, এবার পশুর চামড়ার জন্য কোনও কোরবানির মাঠে কাউকে পাঠাতে হয়নি। কোরবানী দাতারা নিজ উদ্যোগে মাদ্রাসায় এসে চামড়া দিয়ে গেছেন। অনেকে গোপনে চামড়া রেখে গেছেন, তার পরিচয়ও আমরা জানতে পারিনি। তিনি আরও জানান, কিন্তু চামড়ার বাজারমূল্য কম থাকায় গরুর চামড়া ছোট ১৫০-২০০, মহিষের চামড়া ৫০০ এবং ছাগলের চামড়া ১৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সব রকমের পশু মিলিয়ে চামড়া হয়েছিল ২৫০ এর মতো।চামড়ার ক্রেতা না থাকায় ঈদের পরদিন গরুর চামড়া ৫০ টাকা পিস দরে বিক্রি করতে হয়েছে।

কাপাসিয়ার বড়হর গ্রামের চামড়া ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন বলেন, কোরবানির মাঠ থেকে চামড়া কিনে বিপাকে পড়েছিলাম। পরে স্থানীয় আমরাইদ বাজারে গরুর চামড়া ১৫০ ও ২০০ টাকা পিস এবং মহিষের চামড়া ৫০০ টাকা পিস বিক্রি করে দিয়েছি। এতে আমার অনেক লোকশান হয়েছে।

একই গ্রামের  মো. মনির হোসেন বলেন, এবার বেশিরভাগ মুসল্লি নিজ উদ্যোগে স্থানীয় মসজিদ, মাদ্রাসায় চামড়া দিয়ে এসেছেন। দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে ও পরিবেশ রক্ষার্থে বাধ্য হয়ে চামড়াগুলো মাদ্রাসা ও মসজিদে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্যবারের মতো এবার কোরবানির মাঠে চামড়া ক্রেতাদের দেখা যায়নি বলে জানান তিনি।