শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পিবিআই চাঞ্চল্যকর দুটি ধর্ষণ মামলায় তিন আসামী গ্রেপ্তার করেছে, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:৩৬:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জুলাই ২০২০
  • ১৩৮ Time View

গাইবান্ধায় দুটি চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার তিন আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে গাইবান্ধা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে তারা আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়  গাইবান্ধা পিবিআই কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানান পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ।

প্রেস ব্রিফিংয়ে উল্লেখ করা হয়, দেড় মাস আগে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার এক নারীর (৩৫) সাথে মোবাইলে কথা বলার সূত্র ধরে গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের আরিফখাঁ বাসুদেবপুর গ্রামের জহুর“ল ইসলামের সাথে ধর্মভাই-বোনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর স্বামী পরিত্যক্তা ওই নারী জহুরুল ইসলামের বাড়ীতে ও জহুরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা তার বাড়ীতে যাতায়াত করতো। সম্প্রতি জহুরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা চাইতো না যে, ওই নারীর সাথে আর কোন সম্পর্ক থাকুক। এরই এক পর্যায়ে গত শনিবার সন্ধ্যায় ওই নারী রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের বালুয়া বাজারে আসে। এসময় বালুয়া গ্রামের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম সদুর ছেলে শাহ আলম (৩৫) ও একই গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে নুর“ন্নবী মিয়া (৩০) ওই নারীকে একটি ইজিবাইকে তুলে রামচন্দ্রপুর পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্জন একটি স্থানে নিয়ে যান। এসময় তাদের সাথে আরও ৭ থেকে ৮ জন যোগ দিয়ে রাতভর ওই নারীকে ধর্ষণ করেন তারা। পরে রবিবার ভোরে ওই নারীকে ছেড়ে দিলে তিনি সদর থানায় গিয়ে সব খুলে বলেন এবং একটি এজাহার ও পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। ওই নারী অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় তাকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন সোমবার মামলাটি গাইবান্ধা পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হলে ওইদিনই বালুয়া এলাকা থেকে নুরুন্নবী মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। পরে মঙ্গলবার ভোরে আরেক আসামী শাহ আলমকেও গ্রেপ্তার করা হয়। এই মামলার অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
পুলিশ সুপার আলিফ আরও উলে­খ করেন, চার বছর আগে সাদুল্যাপুর উপজেলার এক নারীর (২২) বিয়ে হয় পাশের গ্রামের এক রিকসাচালকের সাথে। তার স্বামী ঢাকায় রিকসা চালাতো ও মাঝেমধ্যেই গ্রামের বাড়ীতে

আসতেন। আবারও ঢাকায় চলে যেতো তিনি। এ অবস্থায় ওই নারীর সাথে তার শাশুড়ীর দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হলে ওই নারী তার বাবার বাড়ীতে চলে যায়। ওই নারীর মা প্যারালাইজড হওয়ায় তার বাবার (৫০) লোভ পড়ে তার উপর। এ অবস্থায় এক বছর আগে এক রাতে ওই নারীকে জোড়পূর্বক ও ফুসলিয়ে ধর্ষণ করেন তিনি। পরে আরও কয়েকবার ওই নারীকে ধর্ষণ করে সে। সর্বশেষ গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর তাকে আবারও ধর্ষণ করে তার বাবা। পরে এ ঘটনায় চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করে ওই নারী। পরে ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলাটি গাইবান্ধা পিবিআইকে দেয়া হয়। পরে তদন্তের এক পর্যায়ে গত রোববার ওই নারীর বাবাকে নরসিংদির পলাশ উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে গাইবান্ধা পিবিআইয়ের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হাই সরকার, পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম ও উপ-পরিদর্শক ইমদাদুল হক প্রামানিক এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

MD ZANNATUL FERDOUSH

NEWS PURPOSE

গাইবান্ধায় বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ইউপি সদস্য খুন

পিবিআই চাঞ্চল্যকর দুটি ধর্ষণ মামলায় তিন আসামী গ্রেপ্তার করেছে, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান

Update Time : ০৯:৩৬:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জুলাই ২০২০

গাইবান্ধায় দুটি চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার তিন আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে গাইবান্ধা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে তারা আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়  গাইবান্ধা পিবিআই কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানান পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ।

প্রেস ব্রিফিংয়ে উল্লেখ করা হয়, দেড় মাস আগে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার এক নারীর (৩৫) সাথে মোবাইলে কথা বলার সূত্র ধরে গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের আরিফখাঁ বাসুদেবপুর গ্রামের জহুর“ল ইসলামের সাথে ধর্মভাই-বোনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর স্বামী পরিত্যক্তা ওই নারী জহুরুল ইসলামের বাড়ীতে ও জহুরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা তার বাড়ীতে যাতায়াত করতো। সম্প্রতি জহুরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা চাইতো না যে, ওই নারীর সাথে আর কোন সম্পর্ক থাকুক। এরই এক পর্যায়ে গত শনিবার সন্ধ্যায় ওই নারী রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের বালুয়া বাজারে আসে। এসময় বালুয়া গ্রামের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম সদুর ছেলে শাহ আলম (৩৫) ও একই গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে নুর“ন্নবী মিয়া (৩০) ওই নারীকে একটি ইজিবাইকে তুলে রামচন্দ্রপুর পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্জন একটি স্থানে নিয়ে যান। এসময় তাদের সাথে আরও ৭ থেকে ৮ জন যোগ দিয়ে রাতভর ওই নারীকে ধর্ষণ করেন তারা। পরে রবিবার ভোরে ওই নারীকে ছেড়ে দিলে তিনি সদর থানায় গিয়ে সব খুলে বলেন এবং একটি এজাহার ও পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। ওই নারী অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় তাকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন সোমবার মামলাটি গাইবান্ধা পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হলে ওইদিনই বালুয়া এলাকা থেকে নুরুন্নবী মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। পরে মঙ্গলবার ভোরে আরেক আসামী শাহ আলমকেও গ্রেপ্তার করা হয়। এই মামলার অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
পুলিশ সুপার আলিফ আরও উলে­খ করেন, চার বছর আগে সাদুল্যাপুর উপজেলার এক নারীর (২২) বিয়ে হয় পাশের গ্রামের এক রিকসাচালকের সাথে। তার স্বামী ঢাকায় রিকসা চালাতো ও মাঝেমধ্যেই গ্রামের বাড়ীতে

আসতেন। আবারও ঢাকায় চলে যেতো তিনি। এ অবস্থায় ওই নারীর সাথে তার শাশুড়ীর দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হলে ওই নারী তার বাবার বাড়ীতে চলে যায়। ওই নারীর মা প্যারালাইজড হওয়ায় তার বাবার (৫০) লোভ পড়ে তার উপর। এ অবস্থায় এক বছর আগে এক রাতে ওই নারীকে জোড়পূর্বক ও ফুসলিয়ে ধর্ষণ করেন তিনি। পরে আরও কয়েকবার ওই নারীকে ধর্ষণ করে সে। সর্বশেষ গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর তাকে আবারও ধর্ষণ করে তার বাবা। পরে এ ঘটনায় চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করে ওই নারী। পরে ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলাটি গাইবান্ধা পিবিআইকে দেয়া হয়। পরে তদন্তের এক পর্যায়ে গত রোববার ওই নারীর বাবাকে নরসিংদির পলাশ উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে গাইবান্ধা পিবিআইয়ের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হাই সরকার, পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম ও উপ-পরিদর্শক ইমদাদুল হক প্রামানিক এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।