
স্টাফ রিপোর্টারঃ গাইবান্ধায় আরও দুইটি নতুন ইউনিয়নসহ ৪০টি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। সোমবার সন্ধ্যায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার, ঘাঘট নদীর পানি শহর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার এবং করতোয়ার পানি কাটাখালী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বাঙালী নদীর বোচাদহ গ্রামে বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ, রাখালবুরুজ ও কোচাশহর ইউনিয়নের বোচাদহ, বালুয়া, ছয়ঘরিয়া, শ্রীপতিপুর, কুমিড়াডাঙা, পুনতাইর, পাছপাড়া, গোপালপুর, জিরাই, সোনাইডাঙ্গা, হরিনাথপুর-বিশপুকুর, কাজিরচক, পচারিয়া, মাদারদহ, কাজিপাড়া, ফরিকরপাড়া, পানিয়াসহ ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
অপরদিকে গাইবান্ধা জেলা শহর সংলগ্ন কুপতলা, খোলাহাটি, ঘাগোয়া, গিদারী ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকায় বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। ফলে ওইসব ইউনিয়নগুলোর বসতবাড়ি এবং সড়কগুলোতে এখন হাটু পানিতে নিমজ্জিত। এছাড়া গাইবান্ধা পৌরসভার অনেক নিচু এলাকাগুলোতেও পানি উঠে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, গত ২৬ জুন থেকে আজ সোমবার (২৭ জুলাই) পর্যন্ত ৩২ দিন যাবৎ তিন দফা বন্যায় জেলার ৬ উপজেলার ৪০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ২৫৮ গ্রামের ৩৯ হাজার ৮৩৭টি পরিবারের ১ লাখ ৫৯ হাজার ৮৪৭ মানুষ বন্যায় পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত। বন্যার্তদের জন্য ১৭২টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ৯২টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১৭ হাজার ৭৭৫ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। যারা আশ্রয় কেন্দ্রে যাননি তাদের অনেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। কেউবা বাড়িতেই মাচা করে অবস্থান করছেন।
এছাড়া বন্যা কবলিত এলাকা থেকে ৩৫ হাজার ৩৩টি গরু-মহিষ ও ২০ হাজার ৮০৭টি ছাগল-ভেড়া আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান করছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বন্যায় জেলার ৩ হাজার ২৪৬ হেক্টর জমির আমন বীজতলা ও রোপা আমন, পাট, আউশ ধান ও শাক সবজি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
সাড়ে ৪ মাস যাবৎ করোনাভাইরাসের কারণে গোটা জেলায় বেকারত্ব বেড়েছে। তার উপর তিন দফা দীর্ঘস্থায়ী বন্যা দুর্গত এলাকায় কর্মহীন মানুষগুলো চরম খাদ্য সংকটে পড়েছে।