স্টাফ রিপোর্টারঃ ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে গাইবান্ধার সবগুলো নদীর পানি পুনরায় দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে বইছে।
গত ২৬ জুন থেকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলায় প্রথম দফা এবং ১০ জুলাই থেকে দ্বিতীয় দফা এবং সর্বশেষ ২২ জুলাই থেকে তৃতীয় দফা বন্যার অবনতি ঘটলো। প্রথম ও দ্বিতীয় দফা বন্যায় সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও সদর উপজেলা ২৬টি ইউনিয়নসহ ব্রহ্মপুত্র নদ ও তিন্তা নদী বেষ্টিত ২৫০টি ছোট-বড় চরের ১ লাখ ৩২ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তৃতীয় দফা বন্যার কারণে ২৮ দিন ধরে বন্যা কবলিত এলাকার প্রায় দেড় লাখ মানুষ খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন। দীর্ঘ মেয়াদী বন্যা দুর্গত এলাকায় শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধপানি, জ্বালানি সংকট এবং পয় নিস্কাশনের সমস্যা প্রকট আকার ধারন করেছে। দেখা দিয়েছে পানিবাহিত ডায়রিয়া, আমাশয় ও চর্মরোগ।
অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে গবাদিপশু নিয়ে উঁচু বাঁধ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে। তারা পলিথিনের খুপড়ি ঘর তুলে সেখানে রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে মানবেতর জীবন যাপন করছে। সেখানেও বিশুদ্ধ পানি ও পয় নিস্কাশন সমস্যা রয়েছে। এছাড়া গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। খাদ্য ও কর্মের অভাবে গবাদিপশু নিয়ে চরম দুর্দশার মধ্যে তাদের দিন কাটছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ২৪ সেন্টিমিটার বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টায় বেড়ে বিপদসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি ২০ সেন্টিমিটিার বেড়ে বিপদসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং করতোয়া নদীর পানি ২৯ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি আগামী ৪ থেকে ৫ দিন থাকবে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, জেলার ৫টি উপজেলার ২৯টি ইউনিয়ন এখন বন্যা কবলিত। ১ লাখ ৩৫ হাজার ৬৩৬ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ৫৩০ মেট্রিক টন চাল, জিআর নগদ ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা, শিশু খাদ্য ৪ লাখ, ৮০ বান্ডিল ঢেউটিন, গৃহ নির্মাণ মঞ্জুরী বাবদ ২ লাখ ৪০ হাজার, গো-খাদ্য বাবদ ২লাখ টাকা এবং ৫ হাজার ৬৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার সরবরাহ করা হয়েছে।