শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বগুড়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, শিশুর মৃত্যু

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:১৭:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই ২০২০
  • ১৯৯ Time View

‌ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ও অবিরাম বর্ষণে বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় যমুনা, ইছামতি ও বাঙালি নদীর পানি ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পচ্ছে। এরমধ্যে ইছামতি ও বাঙালী নদীর পানি বিপদসীমার নীচ দিয়ে

প্রবাহিত হলেও যমুনা নদীর পানি বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় বিপদসীমার ১২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে।

এ‌দি‌কে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে ধুনট উপজেলার ইছামতি নদীর থেকে মুরসালিন হোসেন (৬) নামে এক শিশুর ভাসমান মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। নিহত মুরসালিন উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের দিঘলকান্দি গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে।

ধুনট উপজেলার ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের ইনচার্জ আতাউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বুধবার দুপুরের দিকে খেলার সঙ্গীদের নিয়ে ইছামতি নদীর বন্যার পানিতে গোসল করতে নামে শিশুটি। এসময় পানির প্রবল স্রো‌তে শিশুটি ভাটির দিকে ভেসে যায়। সকাল থেকে অনুসন্ধান করে নদীতে ডুবে যাওয়া স্থান থেকে ১০কিলোমিটার ভাটি সিরাজগঞ্জের একডালা ঘাট এলাকা থেকে মুরসালিনের মৃতদেহ উদ্ধার করে তার স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে যমুনার পানির তীব্র স্রোতে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে করে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো হুমিকর মুখে পড়েছে। এছাড়া তলিয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, রাস্তা-ঘাট। পানিবন্দি এলাকার অসংখ্য মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্র, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ উঁচু জায়গাগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া যমুনা চরে বসবাসকারী অনেকে ঘর-বাড়ি ভেঙে নৌকায় করে নদীতীরে চলে আসছেন। বন্যার দুর্যোগ থেকে স্থায়ী সমাধান খুঁজতে তারা চরের পৈত্রিক ভিটেমাটি ছেড়ে আসছেন।

অন্যদিকে এসব এলাকার অসুস্থ ও প্রতিবন্ধী মানুষ কষ্টে রয়েছেন। চারপাশে বন্যার পানির মধ্যে শিশুদের নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বানভাসীরা। বন্যা কবলিত এলাকার ধান, পাটসহ আবাদী জমির মৌসুমী ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এসব এলাকায় নিরাপদ পানি ও গো-খাদ্যের চরম সংকট রয়েছে। এদিকে বাঙালি ও ইছামতি নদীতে পানি বেড়ে নদীতীরের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে
গেছে ক্ষেতের ফসল।

বগুড়া জেলা ত্রান ও পূনবাসন কর্মকর্তা আজাহার আলী জানান, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের ১৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী পরিবারের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার ৬২২। বন্যায় দুর্ভোগে পড়েছে বর্তমানে ১ লাখ ২২ হাজার ৩২০ জন মানুষ। বন্যাদুর্গতদের মাঝে এ পর্যন্ত ২০০ মেট্রিক টন চাল, ৭ লাখ টাকা ও ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

MD ZANNATUL FERDOUSH

NEWS PURPOSE

গাইবান্ধায় বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ইউপি সদস্য খুন

বগুড়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, শিশুর মৃত্যু

Update Time : ০৮:১৭:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই ২০২০

‌ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ও অবিরাম বর্ষণে বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় যমুনা, ইছামতি ও বাঙালি নদীর পানি ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পচ্ছে। এরমধ্যে ইছামতি ও বাঙালী নদীর পানি বিপদসীমার নীচ দিয়ে

প্রবাহিত হলেও যমুনা নদীর পানি বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় বিপদসীমার ১২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে।

এ‌দি‌কে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে ধুনট উপজেলার ইছামতি নদীর থেকে মুরসালিন হোসেন (৬) নামে এক শিশুর ভাসমান মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। নিহত মুরসালিন উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের দিঘলকান্দি গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে।

ধুনট উপজেলার ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের ইনচার্জ আতাউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বুধবার দুপুরের দিকে খেলার সঙ্গীদের নিয়ে ইছামতি নদীর বন্যার পানিতে গোসল করতে নামে শিশুটি। এসময় পানির প্রবল স্রো‌তে শিশুটি ভাটির দিকে ভেসে যায়। সকাল থেকে অনুসন্ধান করে নদীতে ডুবে যাওয়া স্থান থেকে ১০কিলোমিটার ভাটি সিরাজগঞ্জের একডালা ঘাট এলাকা থেকে মুরসালিনের মৃতদেহ উদ্ধার করে তার স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে যমুনার পানির তীব্র স্রোতে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে করে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো হুমিকর মুখে পড়েছে। এছাড়া তলিয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, রাস্তা-ঘাট। পানিবন্দি এলাকার অসংখ্য মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্র, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ উঁচু জায়গাগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া যমুনা চরে বসবাসকারী অনেকে ঘর-বাড়ি ভেঙে নৌকায় করে নদীতীরে চলে আসছেন। বন্যার দুর্যোগ থেকে স্থায়ী সমাধান খুঁজতে তারা চরের পৈত্রিক ভিটেমাটি ছেড়ে আসছেন।

অন্যদিকে এসব এলাকার অসুস্থ ও প্রতিবন্ধী মানুষ কষ্টে রয়েছেন। চারপাশে বন্যার পানির মধ্যে শিশুদের নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বানভাসীরা। বন্যা কবলিত এলাকার ধান, পাটসহ আবাদী জমির মৌসুমী ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এসব এলাকায় নিরাপদ পানি ও গো-খাদ্যের চরম সংকট রয়েছে। এদিকে বাঙালি ও ইছামতি নদীতে পানি বেড়ে নদীতীরের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে
গেছে ক্ষেতের ফসল।

বগুড়া জেলা ত্রান ও পূনবাসন কর্মকর্তা আজাহার আলী জানান, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের ১৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী পরিবারের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার ৬২২। বন্যায় দুর্ভোগে পড়েছে বর্তমানে ১ লাখ ২২ হাজার ৩২০ জন মানুষ। বন্যাদুর্গতদের মাঝে এ পর্যন্ত ২০০ মেট্রিক টন চাল, ৭ লাখ টাকা ও ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।