মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুন্দরগঞ্জেে কৃষক ইদ্রিস আলী হত্যার প্রধান অভিযুক্ত আবেদ আলী কসাই গ্রেফতার, ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:২৯:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জুলাই ২০২০
  • ১৬৫ Time View

ঘাতকদের হাতে নিহত কৃষক ইদ্রিস আলীর লাশ উদ্ধার করছে পুলিশ-ফাইল ফটো

স্টাফ রিপোর্টার: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের ভেলারায় গ্রামের কৃষক ইদ্রিস আলীকে বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে একই গ্রামের মাঝিপাড়া এলাকায় নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত আবেদ আলী কসাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বাড়ি শ্রীপুর ইউনিয়নের নতুন দুলাল(ভট্ট) গ্রামে। তাকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিান্ডের আবেদন করলে আদালত ৪দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)আব্দুল্লাহিল জামান বুধবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, গত ২৩ ফেরুয়ারী রাত ১০টার দিকে  মৃত মনির উদ্দিন ওরফে মনিয়ার ছেলে কৃষক ইদ্রিস আলীকে ভেলারায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মাঝিপাড়া এলাকায় ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।ওইদিন রাতে মাঝিপাড়া এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের অষ্টপ্রহর অনুষ্ঠান চলছিল।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, অষ্টপ্রহর অনুষ্ঠানে আবেদ আলী কসাই এর সাথে ইদ্রিস আলীকে দেখা গেছে। রাত ২টার দিকে অষ্টপ্রহর অনুষ্ঠানে মৃনাল দাস ও চান দাস ইদ্রিস আলীকে খিচুরি খাবারও দেয়।খিচুরি খাওয়া শেষে ইদ্রিস আলী রাত আড়াইটা পর্যন্ত অষ্টপ্রহর অনুষ্ঠান স্থলে অবস্থান করায় ওই গ্রামের স্বপন দাস ইদ্রিস আলীকে জিঞ্জেস করে কাকা এতো রাতে এখানে আছেন কেন? উত্তরে ইদ্রিস আলী তাকে জানায়, ‘বাবা আবেদ আলী কসাই আমার মোবাইল ও পকেট থেকে টাকা নিয়ে দিচ্ছে না এবং তাকে খুঁজেও পাচ্ছি না। তাই তার জন্য অপেক্ষা করছি।

২৪ ফেব্রুয়ারী ভোর বেলা ওই এলাকার সুকুমার দাস ভেলারায় পাইকপাড়া গ্রামে আয়নুল-ময়নুলের বাড়ির পাশে স্যালো মেশিনঘর সংলগ্ন বাঁশঝাড়ের কাছে গলায় মাফলার প্যাচানো অবস্থায় ইদ্রিস আলীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে আশপাশের লোকজনকে জানায়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ ইদ্রিস আলীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এসময় ইদ্রিস আলীর পকেট থেকে তার মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, নিহত ইদ্রিস আলীর গলায় কালো দাগ ও দেহের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।

গত সাড়ে ৪ মাসে মামলার কোন অগ্রগতি না হলেও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং মোবাইল কললিষ্টের তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৩ জুলাই প্রধান অভিযুক্ত আবেদ আলী কসাইকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিঞ্জাসাবাদ আবেদ আলী কসাই কৃষক ইদ্রিস আলীকে হত্যাকান্ডের আগে মোবাইল ফোনে ডেকে নেয় বলে প্রমান পেয়েছে তদন্তকারিরা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওসি(তদন্ত)বুলবুল ইসলাম ১৪ জুলাই আবেদ আলী কসাইকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। আদালত শুনানি শেষে ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

উল্লেখ্য, এই হত্যাকাণ্ডের পরদিন থেকে প্রধান অভিযুক্ত আবেদ আলী কসাই, তার ছেলে জহুরুলসহ ভেলারায় গ্রামের আতারুল ও বাদশা মিয়া এবং গাইবান্ধা সদর উপজেলার মালিবাড়ী ইউনিয়নের চৌরাস্তা এলাকার চাঁন মিয়ার ছেলে সাফিউল মিয়া ও সফুর মিয়া পলাতক রয়েছে।তার মধ্যে আবেদ আলী কসাইকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

MD ZANNATUL FERDOUSH

NEWS PURPOSE

গাইবান্ধায় বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ইউপি সদস্য খুন

সুন্দরগঞ্জেে কৃষক ইদ্রিস আলী হত্যার প্রধান অভিযুক্ত আবেদ আলী কসাই গ্রেফতার, ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

Update Time : ০৮:২৯:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জুলাই ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের ভেলারায় গ্রামের কৃষক ইদ্রিস আলীকে বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে একই গ্রামের মাঝিপাড়া এলাকায় নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত আবেদ আলী কসাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বাড়ি শ্রীপুর ইউনিয়নের নতুন দুলাল(ভট্ট) গ্রামে। তাকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিান্ডের আবেদন করলে আদালত ৪দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)আব্দুল্লাহিল জামান বুধবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, গত ২৩ ফেরুয়ারী রাত ১০টার দিকে  মৃত মনির উদ্দিন ওরফে মনিয়ার ছেলে কৃষক ইদ্রিস আলীকে ভেলারায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মাঝিপাড়া এলাকায় ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।ওইদিন রাতে মাঝিপাড়া এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের অষ্টপ্রহর অনুষ্ঠান চলছিল।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, অষ্টপ্রহর অনুষ্ঠানে আবেদ আলী কসাই এর সাথে ইদ্রিস আলীকে দেখা গেছে। রাত ২টার দিকে অষ্টপ্রহর অনুষ্ঠানে মৃনাল দাস ও চান দাস ইদ্রিস আলীকে খিচুরি খাবারও দেয়।খিচুরি খাওয়া শেষে ইদ্রিস আলী রাত আড়াইটা পর্যন্ত অষ্টপ্রহর অনুষ্ঠান স্থলে অবস্থান করায় ওই গ্রামের স্বপন দাস ইদ্রিস আলীকে জিঞ্জেস করে কাকা এতো রাতে এখানে আছেন কেন? উত্তরে ইদ্রিস আলী তাকে জানায়, ‘বাবা আবেদ আলী কসাই আমার মোবাইল ও পকেট থেকে টাকা নিয়ে দিচ্ছে না এবং তাকে খুঁজেও পাচ্ছি না। তাই তার জন্য অপেক্ষা করছি।

২৪ ফেব্রুয়ারী ভোর বেলা ওই এলাকার সুকুমার দাস ভেলারায় পাইকপাড়া গ্রামে আয়নুল-ময়নুলের বাড়ির পাশে স্যালো মেশিনঘর সংলগ্ন বাঁশঝাড়ের কাছে গলায় মাফলার প্যাচানো অবস্থায় ইদ্রিস আলীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে আশপাশের লোকজনকে জানায়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ ইদ্রিস আলীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এসময় ইদ্রিস আলীর পকেট থেকে তার মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, নিহত ইদ্রিস আলীর গলায় কালো দাগ ও দেহের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।

গত সাড়ে ৪ মাসে মামলার কোন অগ্রগতি না হলেও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং মোবাইল কললিষ্টের তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৩ জুলাই প্রধান অভিযুক্ত আবেদ আলী কসাইকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিঞ্জাসাবাদ আবেদ আলী কসাই কৃষক ইদ্রিস আলীকে হত্যাকান্ডের আগে মোবাইল ফোনে ডেকে নেয় বলে প্রমান পেয়েছে তদন্তকারিরা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওসি(তদন্ত)বুলবুল ইসলাম ১৪ জুলাই আবেদ আলী কসাইকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। আদালত শুনানি শেষে ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

উল্লেখ্য, এই হত্যাকাণ্ডের পরদিন থেকে প্রধান অভিযুক্ত আবেদ আলী কসাই, তার ছেলে জহুরুলসহ ভেলারায় গ্রামের আতারুল ও বাদশা মিয়া এবং গাইবান্ধা সদর উপজেলার মালিবাড়ী ইউনিয়নের চৌরাস্তা এলাকার চাঁন মিয়ার ছেলে সাফিউল মিয়া ও সফুর মিয়া পলাতক রয়েছে।তার মধ্যে আবেদ আলী কসাইকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।