
স্টাফ রিপোর্টার: ব্রহ্মপত্র নদসহ তিস্তা, যমুনা ও ঘাঘট নদীর পানি কমতে থাকায় গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ২৬টি ইউনিয়নের ২৫৫টি চরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে নদী তীরবর্তী গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ী উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। অন্যদিকে নদ-নদীর ভাঙনে প্রতিদিনই বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, ফসলি জমি ও বিভিন্ন স্থাপনা। ফলে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারাচ্ছে শত শত পরিবার। ব্রহ্মপুত্র নদ, তিস্তা, যমুনা বাঙ্গালী নদীর ভাঙনে সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে তীব্র নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম সরকার জানান, গত এক সপ্তাহে তিস্তা নদীর ভাঙনে কাপাসিয়া ইউনিয়নের কালাই সোতারচরের ১০০ পরিবার, উজান বুড়াই গ্রামের ১৫০ পরিবার, পশ্চিম লালচামার এলাকার ৫০টি পরিবার নদী ভাঙনে বসতভিটা ও আবাদি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। এছাড়া হরিপুর ও শ্রীপুর ইউনিয়নে ব্যাপক তিস্তার ভাঙন শুরু হয়েছে। নদী ভাঙনের শিকার পরিবার গুলো বিভিন্ন বাঁধ, উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। কেইবা বসতবাড়ি হারিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও দিনাজপুর এলাকায় পাড়ি জমিয়েছে।
অপরদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন দেখা দেওয়ায় সদর উপজেলার কামারজানি ও গিদারী ইউনিয়ন, ফুলছড়ি উপজেলার এড়েন্ডাবাড়ি এবং সাঘাটা উপজেলার ভারতখালী ও যমুনার ভাঙনে সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়টি নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। সেখানে হুমকিতে রয়েছে আশপাশের পাঁচ শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি ও আবাদি জমি। স্থানীয়রা ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। কাঁটাখালী(বাঙ্গালী) নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বালুয়া ও বোচাদহ এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মোখলেছুর রহমান জানান, সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নে ১০০ মিটার এলাকায়, ফুলছড়ি উপজেলার এড়ন্ডাবাড়ী ইউনিয়নে ৪০০ মিটার, সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী ইউনিয়নের বরনতাইর এলাকায় ২০০ মিটার, হলদিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকায় ১৬০ মিটার এলাকায়, কাঁটাখালী(বাঙ্গালী) নদীর ভাঙন রোধে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বালুয়া এলাকায় ২২০ মিটার ও বোচাদহে ২০০ মিটার এলাকায় নদী ভাঙন রোধে অস্থায়ী প্রতিরক্ষা মুলক কাজ চলছে। নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, এছাড়া সুন্দরগঞ্জ উপজেলার লালচামার, হরিপুর ও শ্রীপুর ইউনিয়নে তিস্তার ভাঙন রোধের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু নদীর পানি বেশী থাকায় সেখানে কাজ শুর করা সম্ভব হয়নি। শীঘ্রই সেখানে কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এসব অস্থায়ী প্রতিরক্ষামুলক কাজ করা হচ্ছে ।