
স্টাফ রিপোর্টার: করোনা ভাইরাস আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ‘বিশেষ টিম’। মঙ্গলবার (১৬ জুন) ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার শাহ মিজান শাফিউর রহমানের নেতৃত্বে টিম-১২ রাজধানীর বেসরকারি ইমপালস্ হাসপাতালে চিকিৎসারত বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যদের সার্বিক বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন।
টিমের অন্যান্য সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) আর এম ফয়জুর রহমান, অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন) মো. আবু আশরাফ সিদ্দিকী, সহকারী পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন-সদরদপ্তর) মো. আশিক হাসান ও সহকারী পুলিশ কমিশনার (ফোর্স) কে. এন. রায় নিয়তি।
এছাড়াও পরিদর্শন দল কোয়ারেন্টাইনকৃত পুলিশ সদস্যদের সুযোগ-সুবিধা দেখার জন্য পল্লবী থানা কোয়ারেন্টাইন সেন্টার ও উত্তরা পুলিশ লাইনস, দিয়াবাড়ি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার পরিদর্শন করেন।
ডিএমপি সদরদপ্তর সূত্র জানানো হয়, সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে পুলিশ। তাই আক্রান্ত সদস্যদের সুচিকিৎসা সহ প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি ‘বিশেষ টিম’ গঠনের নির্দেশে দিয়েছেন।
নির্দেশনায় বলা হয়, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে এই বিশেষ টিমগুলো করোনা আক্রান্ত প্রত্যেক সদস্যকে সরেজমিনে পরিদর্শন করবে, তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেবে, হাসপাতাল কিংবা আইসোলেশনে থাকাকালীন তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা জেনে তাৎক্ষণিকভাবে সমাধানের উদ্যোগ নেবে ও পদমর্যাদা নির্বিশেষে প্রত্যেক সদস্য যাতে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পান- সে ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ৮ মে থেকে ডিএমপি কমিশনারের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন ইউনিটের চিকিৎসাধীন পুলিশ সদস্যদেরকে স্বশরীরে পরিদর্শন শুরু হয়।
মঙ্গলবার যুগ্ম কমিশনার শাহ মিজান শাফিউর রহমানের নেতৃত্বে বিশেষ টিম-১২ ইমপালস হাসপাতাল লিমিটেডে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের দেখতে যান ও ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেন, আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবাসহ নানাবিধ সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে খোঁজ নেন এবং ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেন। ইমপালস হাসপাতালে ডিউটি ম্যানেজার মো. জিলানী প্রতিনিধিদলকে বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিদর্শন করতে সহায়তা করেন।পরিদর্শন শেষে টিমের প্রধান ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার শাহ মিজান শাফিউর রহমান বলেন, অত্যন্ত আন্তরিকভাবে করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের সুচিকিৎসা ও অন্যান্য সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
চিকিৎসাধীন পুলিশ সদস্যরা ও তাদের পরিবারবর্গ ইমপালস হাসপাতালকে পুলিশ সদস্যদের করোনা চিকিৎসার জন্য ডেডিকেটেডলি নির্বাচন করাকে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এই জন্য তারা এই ভিশনারি পদক্ষেপের ধারক ও বাস্তবায়নকারী আইজিপি মহোদয়ের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতাবোধ জ্ঞাপন করেন।
চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে ডিএমপির এই উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আক্রান্তরা বড় কোনো অসুবিধা ছাড়াই সেরে উঠছেন। তাদের মধ্যে কিছু সদস্য ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ও তারা তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলোতে অবস্থানরত পুলিশ সদস্যবৃন্দ বড় কোন অসুবিধা ছাড়াই ভাল আছেন।
প্রসঙ্গত, ইমপালস হাসপাতালে ডিএমপির পাশাপাশি ভোলা জেলা, টাঙ্গাইল জেলা, র্যাব ফোর্সেস, এসবি, এপিবিএন, সিআইডি, নৌ পুলিশ, বরিশালমেট্রো, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ও এসপিবিএনসহ বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের ১৮২ জন পুলিশ সদস্য চিকিৎসাধীন আছে। এছাড়াও পল্লবী থানা কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ৩ জন ও উত্তরা পুলিশ লাইন্স দিয়াবাড়ি করেন সেন্টারে ৩১ জন পুলিশ সদস্য কোয়ারেন্টাইন এ আছেন।