![](https://dailykhojkhabor.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
খোঁজ খবর ডেস্ক: লাদাখের গালোয়ান উপত্যকায় ভারত-চীন সেনার সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে বলে ভারতের সেনা সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এ সংঘর্ষে চীনা বাহিনীরও ৫ সেনা নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জুন) রাত ১০টার দিকে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। গুরুতর আহত কমপক্ষে ১৭। এর আগে এই সংঘর্ষে ৩ জন ভারতীয় সেনা নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। মঙ্গলবার সকালে জানানো হয়, সংঘর্ষে ভারতীয় বাহিনীর এক কর্নেল ও দুই জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে।
পরে মঙ্গলবার রাতে ভারতের সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন ওই সীমান্ত সংঘাতে। সরকারি সূত্রের মতে, এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
ভারতীয় সেনা বাহিনীর বরাত দিয়ে এএনআই জানিয়েছে, সোমবার রাতের ওই সংঘর্ষে আরও ১৭ জন গুরুতর আহত হয়েছিল। পরে হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রায় বৈরি আবহাওয়ার কারণে খোলা আকাশের নীচে তাদের মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে সংঘর্ষস্থল থেকে দুই পক্ষই পিছু হটেছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এএনআই আরও জানিয়েছে, এ সংঘর্ষে চীনা বাহিনীরও ৫ সেনা নিহত হয়েছে। যেখানে চীনা বাহিনীর অন্তত ৪৩ জন হতাহত হতে পারে বলে ধারণা ভারতীয় সেনা বাহিনীর। তবে চীনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো বিবৃতি জানানো হয়নি।
চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবাল টাইমস’ জানিয়েছে, এ সংঘর্ষে চীনা বাহিনীতেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে ভারতের দাবি অনুযায়ী চীনা সেনা হতাহত হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে কিছু জানাতে পারেনি তারা।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, কয়েক দশক পর পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে এমন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ১৯৬২ ও ১৯৭৫ সালের পর চীন-ভারত সীমান্তে এটি কোনো রক্তাক্ত সংঘর্ষের ঘটনা।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই পক্ষের জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা বৈঠকে বসে উত্তেজনা নিরসনের চেষ্টা করেছে।
সোমবার (১৫ জুন) রাতে গালোয়ান উপত্যকায় অতর্কিতে ভারতীয় সেনার উপর আক্রমণ চালায় চীনের সেনা। ভারতীয় সেনার তরফে এ দিন জানানো হয়, পারস্পরিক শান্তি চুক্তি মেনে সেনা সরিয়ে আনা হয়। সেনা সূত্রে খবর, গোলাগুলি নয়, পাথর, রড নিয়ে হামলা চালায় চীনের সেনারা। পাল্টা জবাব দেয় ভারতও।
বেশ কিছুদিন ধরেই লাদাখের প্যাংগন লেক ও গালওয়ান উপত্যকায় দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা রয়েছে। এনিয়ে দুদেশের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকে ঠিক হয়, শান্তিপূর্ণ উপায়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে নেওয়া হবে।
সোমবার সকালে দুদেশের ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ে বৈঠক হয়। তারপর রাতে ওই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে। প্রসঙ্গত, আগেই ঠিক হয়েছিল, দুদেশ তার বর্তমান অবস্থান থেকে দু কিলোমিটার পিছিয়ে আসবে। সঙ্গে সমস্যা নিরসনে আলোচনা চলবে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, এনআই, আনন্দবাজার