হিলি প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের হিলিতে চীনে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ও আমাদনি বন্ধের অযুহাতে চাল, পেঁয়াজ, রসুন, জিরা ও আদার দাম বেড়েছে। চাহিদার তুলনায় আমদানি কম হওয়াই এই সব পণ্যের ঘাটতিকে দাম বাড়ার কারণ দেখাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার সন্ধায় হিলির বাজার ঘুরে এই চিত্র পাওয়া যায়।
ক্রেতারা জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে আদার দাম প্রতি কেজি ৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকা হয়েছে। চালের দাম প্রতি কেজি ৫ থেকে ৬ টাকা বেড়েছে, ভারতীয় পেঁয়াজ ২৫ টাকা থেকে ৪৫ টাকা, জিরা প্রতি কেজি ২৬০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা আর রসুনের কেজি ৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১০০ টাকা হয়েছে।
হিলি বাজারের খুচরা ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা জানান, গত সপ্তাহে খুচরায় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২৫ থেকে ২৮ টাকা, সেই পেঁয়াজ আজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাবা। রসুন বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা, এটি এক লাফে বেড়ে হয়েছে ১০০ টাকা। পাশাপাশি আমদানি করা আদার কেজি এখন ১২০ টাকা, গত সপ্তাহে দাম ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা।
হিলি বাজারের রকমারি মসলার দোকানদার জানান, চাহিদার তুলনায় জিরা, এলাচের সরবরাহ কম থাকায় দাম কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে প্রতিকেজি জিরার প্যাকেট বিক্রি হয়েছে ২৬০ টাকা দরে আর এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি দরে। সাদা এলাচ গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ১শ টাকা কেজি দরে আর এখন বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫শ টাকা কেজি দরে।
তিনি আরও জানান, করোনার কারনে মসল্লার দাম যেকোন সময় বাড়তেও পারে। এখন ক্রেতা বেশি থাকায় পণ্যগুলো চাহিদা মত ক্রেতাদের দেওয়া যাচ্ছে না।
আদা-রসুনের দাম বাড়ার কারন জানতে চাইলে খুচরা বিক্রেতারা জানান, করোনাভাইরাসের কারণে চীনা রসুন বাজারে নেই বললেই চলে। এখন দেশি ও ভারত থেকে আমদানি করা রসুন বাজারে আছে। চীনা রসুন আমদানি বন্ধ থাকায় এর দাম বেড়ে গেছে। তারা আরও বলেন হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি বন্ধ হতে পারে। তাই আমদানি কারকরা দাম বেশি নিচ্ছে আমরা বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছি। আদা-রসুনের দাম আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন তারা।
হিলি বাজারে কেনাকাটা করতে আসা ইদ্রিস আলী জানান, বাজার যদি সঠিকভাবে মনিটরিং করা না হয় তাহলে ব্যবসায়ীরা করোনার অজুহাতে দাম বাড়িয়ে যাবেই। তাই সরকারকে এসব দিকে কঠোর হতে হবে। বেশি বেশি মোবাইল কোর্ট চালু রাখতে হবে।
এদিকে সব ধরনের চালের চালের দামও বাড়তি। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫ থেকে ৬ টাকার মতো বেড়েছে বলে জানান চাল ব্যবসায়ীরা।
হিলি বাজারের চালের পাইকার অনুপ বসাক জানান, স্বর্না-৫ গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩২ টাকা কেজি সেই চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকা কেজি, মোটা চাল বিক্রি হয়েছে ২৬ টাকা কেজি, সেই চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা কেজি। আগামী রমজানে মুড়ির জন্য মোটা চাল মজুদ করছে অটো রাইস মিলগুলো। চাহিদার তোলনায় বাজারে চাল আমদানি কম। এই কারনে হঠাৎ বেড়েছে চালের দাম। তিনি আরও জানান, চালের দাম কিছুটা বেশি হওয়ার কারনে অনেক ক্রেতাদের সাথে বাকবিতর্ক হচ্ছে।
চাল কিনতে আসা মোফাজ্জল হোসেন জানান, মাঝে মাঝে চালের দাম বাড়ে আবার কমে এতে করে আমাদের মত গরিবদের খুব সমস্যা হয়। গত সপ্তাহে চালের দাম কম ছিলো আজ কিনলাম ৫ টাকা কেজি প্রতি বেশি দিয়ে। দাম বেশি হওয়াতে টাকার পরিমান কম থাকায় আজ কম করে চাল কিনলাম। চালের বাজার যেন কমে আসে সেই জন্য সরকারের কাছে আকুল আবেদ করেন তিনি।
হিলি কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী দুলু মিয়া জানান, বাজারে করলা, বরবটি ও লাল সবজির সরবরাহ কম, এই কারণে দামও বেশি। তবে অন্যান্য সবজির দাম স্থিতিশীল আছে।