
পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : টাকার অভাবে বার্ষিক বনভোজনে যেতে না পারায় পার্বতীপুরে জমিরহাট উচচ বিদ্যালয়ের কোমলমতি ১৮ শিক্ষার্থীকে বাধ্যতামুলক বিদ্যালয় ত্যাগের ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ৬ জন, ৭ম শ্রেণির ৩ জন, ৮ম শ্রেণির ৫ জন ও ৯ম শ্রেণির ৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। গতকাল বুধবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ ছাড়পত্র প্রদান করেন। এ ঘটনায় ৬ষ্ঠ শ্রেণির ভূক্তভাগি পাঁচ শিক্ষার্থী বিকেলে পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযাগ করেছে।
লিখিত অভিযাগে জানা গেছে, গত সোমবার জমিরহাট উচ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বার্ষিক বনভোজনের আয়োজন করে। এতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য চাঁদা ধরা হয় ৪০০ টাকা । ১৮ শিক্ষার্থী চাঁদার টাকা দিতে না পারায় তারা বিদ্যালয়ের বনভোজনে অংশ নিতে পারেনি। গতকাল সকাল ১০ টার দিকে প্রথমে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ৬ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে গেলে তাদের হাতে বাধ্যতামুলক ছাড়পত্র ধরিয়ে দেওয়া হয়। এতে করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মানসিকভাব ভেঙ্গে পড়ে। বাধ্যতামুলক ছাড়পত্র দেওয়া ১৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ৫ শিক্ষার্থীর নাম পাওয়া গেছে। তারা হলো-লিটন বাবু (রোল নম্বর-২১), আতিক বাবু(রোল নম্বর-৪৪), মুনকার নাঈম (রোল নম্বর-১৩), রাকিবুল ইসলাম (রোল নম্বর-২) ও রবিউল ইসলাম(রোল নম্বর-২৮)। এদের সবার বয়স ১২ থেকে ১৩ বছর। বাড়ি উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের জমিরহাট পাইকপাড়া গ্রামে।
লিটন বাবুর মা নুরবানু বেগম, রাকিবুল ইসলামের বাবা মমিনুল ইসলাম, আতিক বাবুর বাবা মতিয়ার রহমান, মুনকার নাঈমের বাবা সাইদুল হক ও রবিউল ইসলামের বাবা রশিদুল হক জানান, স্কুলের নির্ধারিত চাঁদার টাকা দিতে না পারায় আমাদের সন্তানেরা স্কুলের বনভোজনে অংশ নিতে পারেনি। এজন্য প্রধান শিক্ষক অন্যায় ভাবে তাদের বাধ্যতামুলক ছাড়পত্র দিয়েছে। আমরা প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের অপসারণসহ উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম জানান, এবছর বিদ্যালয়ের ২৫০জন শিক্ষার্থী বনভোজনে অংশ নেয়। অন্যদিক, এলাকার কিছু বখাটে ছেলে পৃথকভাবে একটি বাস ও দুটি মাইক্রো নিয়ে আমাদের সাথে একই স্থানে বনভোজনে যায়। এদের সাথে জমিরহাট উচচ বিদ্যালয়ের ১৮ শিক্ষার্থীও ছিল। কিছু বখাটে ছেলে আমাদর স্কুলের ছাত্রীদর উত্যক্ত করে । বখাটেদের সাথে যাওয়ার অপরাধে তাদেরকে বাধ্যতামুলক ছাড়পত্র দেওয়া হয়। তবে বাধ্যতামুলক ছাড়পত্র দেয়ার কথা স্বীকার করলেও কোনো প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি বলে প্রধান শিক্ষক জানান।