শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সড়ক দুর্ঘটনা নয় বরং নির্মম হত্যাকাণ্ড-রহস্য উদঘাটন করল পিবিআই

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:৫৮:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • ২০১ Time View

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের হাতেই খুন হয়েছেন লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানার মৃত আবদুল ওয়াহেদের ছেলে মোক্তার হোসেন সৈকত। প্রথমে এটিকে নিছক সড়ক দুর্ঘটনা হিসেবে ধরে নিয়ে থানায় জিডি করা হয়। কিন্তু ১৮ দিন পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে বেরিয়ে আসে এটি সড়ক দুর্ঘটনা নয় বরং নির্মম হত্যাকাণ্ড।

এ ঘটনায় তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে পিবিআই। শনিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) সৈকত হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন তারা। তারা হলেন ফেনী সদরের নোয়াবাদ গ্রামের আবুল হাসনাত ওরফে তারেক (২৮), দক্ষিণ শর্শদি গ্রামের হাফিজুর রহমান সাইফুল (২৬) ও লাকসাম উপজেলার বাতাখালী গ্রামের মো. রাসেল (১৯)।

দুপুরে প্রেস ব্রিফিং করে জেলা পিবিআই প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ওসমান গণি বলেন, গত ২১ জানুয়ারি ভোর সাড়ে ৪টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিরশান্নী বাজার থেকে মাথা ও মুখমণ্ডল থেঁতলানো অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন ওই ব্যক্তি।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করে পিবিআই। এ সময় মরদেহের হাতের কবজিতে কাটা দাগ দেখে এটি হত্যাকাণ্ড হিসেবে ধরে নিয়ে তদন্তে নামে পিবিআই। একই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার ১৬ দিনের মাথায় ফেনীর আবুল হাসনাত ওরফে তারেক, হাফিজুর রহমান সাইফুল ও লাকসাম উপজেলার বাতাখালী গ্রামের মো. রাসেলকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হয়।

ওসমান গণি আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায় মহাসড়কে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য তারা। ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তারা একটি প্রাইভেটকার ভাড়া নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে বের হয়। ওই দিন রাতে ফেনী থেকে কুমিল্লার পদুয়ার বাজার পর্যন্ত মহাড়কের কয়েকটি স্থানে টাকা ও মোবাইল ছিনতাই করে তারা।

ফেনী ফেরার পথে রাত দেড়টার দিকে চৌদ্দগ্রামের মিরশান্নী বাজার এলাকায় সড়কের পাশে সৈকতকে হাঁটতে দেখে প্রাইভেটকারে তুলে নেয় তারা। এ সময় মারধর করে মোবাইল ও টাকা কেড়ে নিয়ে লাথি মেরে সৈকতকে সড়কে ফেলে গাড়ি চাপায় হত্যা করে তারা পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই সুমন মিয়া রিপন চৌদ্দগ্রাম থানায় হত্যা মামলা করেন। গ্রেফতারকৃতরা শনিবার আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদেরকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

MD ZANNATUL FERDOUSH

NEWS PURPOSE
Popular Post

গাইবান্ধায় বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ইউপি সদস্য খুন

সড়ক দুর্ঘটনা নয় বরং নির্মম হত্যাকাণ্ড-রহস্য উদঘাটন করল পিবিআই

Update Time : ০৯:৫৮:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের হাতেই খুন হয়েছেন লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানার মৃত আবদুল ওয়াহেদের ছেলে মোক্তার হোসেন সৈকত। প্রথমে এটিকে নিছক সড়ক দুর্ঘটনা হিসেবে ধরে নিয়ে থানায় জিডি করা হয়। কিন্তু ১৮ দিন পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে বেরিয়ে আসে এটি সড়ক দুর্ঘটনা নয় বরং নির্মম হত্যাকাণ্ড।

এ ঘটনায় তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে পিবিআই। শনিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) সৈকত হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন তারা। তারা হলেন ফেনী সদরের নোয়াবাদ গ্রামের আবুল হাসনাত ওরফে তারেক (২৮), দক্ষিণ শর্শদি গ্রামের হাফিজুর রহমান সাইফুল (২৬) ও লাকসাম উপজেলার বাতাখালী গ্রামের মো. রাসেল (১৯)।

দুপুরে প্রেস ব্রিফিং করে জেলা পিবিআই প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ওসমান গণি বলেন, গত ২১ জানুয়ারি ভোর সাড়ে ৪টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিরশান্নী বাজার থেকে মাথা ও মুখমণ্ডল থেঁতলানো অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন ওই ব্যক্তি।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করে পিবিআই। এ সময় মরদেহের হাতের কবজিতে কাটা দাগ দেখে এটি হত্যাকাণ্ড হিসেবে ধরে নিয়ে তদন্তে নামে পিবিআই। একই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার ১৬ দিনের মাথায় ফেনীর আবুল হাসনাত ওরফে তারেক, হাফিজুর রহমান সাইফুল ও লাকসাম উপজেলার বাতাখালী গ্রামের মো. রাসেলকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হয়।

ওসমান গণি আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায় মহাসড়কে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য তারা। ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তারা একটি প্রাইভেটকার ভাড়া নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে বের হয়। ওই দিন রাতে ফেনী থেকে কুমিল্লার পদুয়ার বাজার পর্যন্ত মহাড়কের কয়েকটি স্থানে টাকা ও মোবাইল ছিনতাই করে তারা।

ফেনী ফেরার পথে রাত দেড়টার দিকে চৌদ্দগ্রামের মিরশান্নী বাজার এলাকায় সড়কের পাশে সৈকতকে হাঁটতে দেখে প্রাইভেটকারে তুলে নেয় তারা। এ সময় মারধর করে মোবাইল ও টাকা কেড়ে নিয়ে লাথি মেরে সৈকতকে সড়কে ফেলে গাড়ি চাপায় হত্যা করে তারা পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই সুমন মিয়া রিপন চৌদ্দগ্রাম থানায় হত্যা মামলা করেন। গ্রেফতারকৃতরা শনিবার আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদেরকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।